লাইফস্টাইল

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে কী ধরনের খাদ্য গ্রহণ সহায়তা করে

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে কী ধরনের খাদ্য গ্রহণ সহায়তা করে
Key Highlights

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মানুষ কীভাবে সুস্থ থাকতে পারে এবং কোন ধরনের খাদ্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত আবশ্যক

মহামারী কবলিত সমগ্র পৃথিবীতে চারিদিক যে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জন্য প্রত্যেক মানুষেরই নিজের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা একান্ত জরুরি হয়ে পড়েছে । তাই শুধুমাত্র করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্যই নয় , যে কোন রোগ মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে প্রত্যেকের ই এমন খাদ্য গ্রহণ করা উচিত যা সব রকমের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে ।

জেনে নেওয়া যাক কোন ধরনের খাদ্য গ্রহণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে

দৈনন্দিন জীবনে আমাদের সুষম খাদ্যগ্রহণই শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। যেসব খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সেগুলো হল - 

তরল খাবার : যেকোন তরল ও কুসুম গরম খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তরল খাবার গ্রহণের ফলে দেহে ফ্লুইডের ঘাটতি পূরণ হয় এবং দেহে শক্তি বৃদ্ধি পায়। তরল জাতীয় খাবার হল - স্যুপ, ক্লিয়ার স্টক, ফলের রস বা শরবত, ডিটোক্স জ্যুস, যেকোন চা ইত্যাদি।  

মিক্সড ভেজিটেবল স্যুপ : মিক্সড ভেজিটেবল স্যুপে সমস্ত সবজি বিশেষ করে গাজর, পেঁপে, বরবটি, ফুলকপি ইত্যাদি থাকার কারণে এটি তরল থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এতে ভিটামিনস, মিনারেলস ও এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা শরীরে এনার্জি দেয়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। 

রসুন : রসুনে এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা ভাইরাস প্রতিরোধের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রসুন হৃৎপিন্ডকে সুস্থ ও সতেজ রাখে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। 

গ্রিন টি : গ্রিন টি তে ক্যাটেচিন নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা দেহের জন্য উপকারী এবং অন্যান্য চায়ের তুলনায় গ্রীন টি তে ক্যাটেচিনের পরিমান বেশি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। 

আদা চা : আদা হল উচ্চমানের এন্টি-অক্সিডেন্ট। আদা চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই করোনাকালীন সময়ে আদা চা অনেক উপকারী।

মৌসুমী ফল : যেকোন মৌসুমী ফল দেহের জন্য উপকারী।  যেমন যেমন গ্রীষ্মকালে আম, জাম, কাঁঠাল, কামরাঙা ইত্যাদি। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের মধ্যে যাদের ব্লাড সুগার বেশি তাদের মিষ্টি ফল এড়িয়ে চলতে হবে। 

সবুজ শাক-সবজী : সবুজ শাক-সবজিতে ক্লোরোফিল নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে। এতে ভিটামিন ও মিনারেলস আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বরবটি, শিম, বেগুন, ধনেপাতা, সবুজ শাক, কচুশাক , পুঁইশাক, পালং শাক ইত্যাদি।    

প্রোটিন জাতীয় খাবার : এই করোনাকালীন সময়ে WHO প্রোটিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। প্রানীজ প্রোটিনের মধ্যে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস ইত্যাদি বিদ্যমান। 

টমেটো : টমেটোর মধ্যে লাইকোপিন নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা হৃৎপিন্ড ভালো রাখে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এতে ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ফোলেট ও ভিটামিন কে আছে যা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম। টমেটো সালাদ, টম্যাটো স্যুপ, তরকারিতে টমেটো দিয়ে রান্না করে খেতে পারবেন। তবে টমেটোর রান্না করলে  ভিটামিন সি তাপে নষ্ট হয়৷ 

শসা : শসাতে ভিটামিন এ, বি, সি, ডি ও ই রয়েছে যা শরীর সুস্থ রাখে। ওজন নিয়ন্ত্রণে, ক্যান্সার প্রতিরোধে, ভাইরাস প্রতিরোধে শশা খুব উপকারী।  

মাশরুম : মাশরুমে প্রোটিন ও এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মাশরুমের স্যুপ, গার্লিক মাশরুম শরীরের জন্য উপকারী।  

কালো গোলমরিচ : কালো গোলমরিচে এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা যেকোন ভাইরাস প্রতিরোধের পাশাপাশি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। স্যুপ, মাংসের তরকারি বা বিভিন্ন রান্নায় কালো গোলমরিচের গুড়া ব্যবহার করা যেতে পারে। 

হলুদ : হলুদ রান্নায় যেমন স্বাদ বাড়ায় তেমন হলুদে আছে অনেক পুষ্টিগুন। হলুদ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের পাশাপাশি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, লিভার ভাল রাখে। এমনকি জ্বর আসলে রোগী যদি দুধের সাথে হলুদের মিশ্রন পান করে তাহলে এটি এন্টিবায়োটিক হিসেবেও কাজ করে। 

মধু : মধুতে এন্টি-অক্সিডেন্ট ও মিনারেলস বিশেষ করে জিংক আছে যা মুখের রুচি বাড়ানোর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।। যাদের সর্দি, কাশি, ঠান্ডা, জ্বর, খুশখুশ, গলা ব্যাথা ও টনসিল আছে তাদের জন্য মধু খুবই উপকারী।  

পেঁয়াজ : পেঁয়াজে এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি হৃৎপিন্ডের জন্য উপকারী। 

ওমেগা ৩ ও ওমেগা৬ ফ্যাটি এসিড : ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড জাতীয় খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি হার্টএট্যাকের ঝুঁকি কমায়। যেমন - সামুদ্রিক মাছ, কাঠবাদাম, ডিম, আখ্রোট, অলিভ ওয়েল, মাছের তেল ইত্যাদিতে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড আছে।  

ভিটামিন-ডি : ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত মজবুত করে। ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার হল দুধ, পনির, দই, মাখন, সামুদ্রিক মাছ, কাঠবাদাম, পালং শাক, ডিম, মুরগীর মাংসের হাড়, নিহারি, শুঁটকি মাছ ইত্যাদি৷ 

ভিটামিন-কে : ভিটামিন-কে জাতীয় খাবার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম। আমেরিকায় এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে তাদের বেশির ভাগ মানুষের দেহে ভিটামিন-কে এর অভাব ছিল। সবুজ শাক-সবজি,  টমেটো, শশা, ফুলকপি, ধনেপাতা, ব্রোকলি, বাঁধাকপি, শক্ত পনির ইত্যাদিতে ভিটামিন - কে আছে। 

টক জাতীয় ফল : টকজাতীয় ফলের মধ্যে এসকরবিক এসিডনামক এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যেমন - আমলকীতে ভিটামিন-সি এর পরিমান ১০০%। লেবু, টমেটো, শশা, পেয়ারা, কামরাঙ্গা, কাঁচা লঙ্কা, ক্যাপ্সিকাম ইত্যাদিতে ভিটামিন সি আছে। 

সুস্থ থাকার জন্য শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে একজন মানুষ খুব সহজেই যেকোনো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। করোনা মহামারির সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । 


Bangladesh | বাংলাদেশে বদলালো নোট, নোট থেকে সরানো হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি
BJP Leader Sudden Death | অমিত শাহের সভায় আচমকা অসুস্থ, হাসপাতালেই মৃত্যু হলো বিজেপি নেতার
Russia Ukraine | ভারতের ধাঁচেই রাশিয়ায় আক্রমন শানাল ইউক্রেন! ধ্বংস ৪০টিরও বেশি রুশ যুদ্ধবিমান
Weather Update | সাতসকালে কালবৈশাখীর আশঙ্কা, একনজরে দেখে নিন কলকাতার আজকের তাপমাত্রা
Asian Athletics Championships 2025 । এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের শেষদিনে ৬টি পদক নিজের ঝুলিতে পুরলো ভারত
Jamai Sasthi | জামাইয়ের জন্য নয়, জামাইষষ্ঠীর শুরু মেয়ের জন্য! জৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠীতে জানুন জামাইষষ্ঠীর কারণ, ব্রত কথা!
'অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Biography of Sarat Chandra Chattopadhyay