পুজো ও উৎসব

Jagdhatri Puja 2023 | দুর্গাপুজোর বিকল্প হিসেবে জগদ্ধাত্রী পূজা শুরু! দশমীতে হবে না শোভাযাত্রা! আজ থেকেই চলবে পুজো স্পেশ্যাল ট্রেন!

Jagdhatri Puja 2023 | দুর্গাপুজোর বিকল্প হিসেবে জগদ্ধাত্রী পূজা শুরু! দশমীতে হবে না শোভাযাত্রা! আজ থেকেই চলবে পুজো স্পেশ্যাল ট্রেন!
Key Highlights

দুর্গাপুজোতে না থাকতে পারেননি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। এরপরেই স্বপ্নে আসেন জগদ্ধাত্রী দেবী। কৃষ্ণনগরে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পূজার রীতি। জানুন জগদ্ধাত্রী পূজার ইতিহাস। জগদ্ধাত্রী পূজা ২০২৩ চন্দননগরে দশমীর বদলে শোভাযাত্রা হবে একাদশীতে।

অগ্রহায়ণে শীতের আমেজমাখা হেমন্ত ঋতুতে পালিত হচ্ছে জগদ্ধাত্রী পূজা (Jagdhatri Puja)। এই পূজার জন্যই সেজে উঠেছে চন্দননগর,কৃষ্ণনগর, রিষড়া-সহ হুগলির বিভিন্ন অঞ্চল। জগদ্ধাত্রী পূজা ২০২৩ (Jagdhatri Puja 2023) উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই চন্দননগর থেকে কৃষ্ণনগরে শুরু হয়েছে উন্মাদনা। কৃষ্ণনগরের বুড়ি মা, চন্দননগরের ক্ষেত্রে গৌড়হাটি তেঁতুলতলার পুজো, এছাড়াও আদি মা, রানি মাকে দর্শন করতে কাতারে কাতারে ভক্তদের ভিড় শুরু করেছেন ভক্তরা। তবে কীভাবে শুরু হলো জগদ্ধাত্রী (Jagdhatri) পুজো? কবে কোন দিন জগদ্ধাত্রী পুজোর কোন তিথি? জগদ্ধাত্রী পূজা (Jagdhatri Puja) সম্পর্কে জানুন বিস্তারিতভাবে!

জগদ্ধাত্রী পূজা ২০২৩ এর তিথি :

১৯সে নভেম্বর রবিবার জগদ্ধাত্রী (Jagdhatri) পুজোর সপ্তমী ছিল। ২০ই নভেম্বর সোমবার পড়ছে অষ্টমী তিথি। দৃক সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, এদিন রাত্রি ৩.১৭ পর্যন্ত থাকবে অষ্টমী। তার পর শুরু হবে নবমী। অষ্টমী এবং নবমী সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ২১ সে নভেম্বর মঙ্গলবার পড়ছে নবমী। ২২ সে নভেম্বর দশমী পড়ছে। উল্লেখ্য, জগদ্ধাত্রী পুজোর নবমীর তিথিতে পুজোকেই মূল পুজো হিসাবে মনে করা হয়। ফলে অধিকাংশ ভক্তরাই নবমীর দিন পুজো দিয়ে থাকেন। ২১সে নভেম্বর নবমীর দিন ৩টে ১১ মিনিট থেকে ৯ টা ০৩ মিনিট পর্যন্ত রয়েছে তিথি। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজা (Chandannagar Jagdhatri Puja) ‘তেঁতুলতলা জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি’ র নির্ঘণ্ট অনুযায়ী ওই দিন প্রথম পুজো আরম্ভ ৭ টায়। বেলা ২.৩০ মিনিটে দ্বিতীয় পুজো আরম্ভ। তৃতীয় পুজো আরম্ভ বিকেল ৪.১০ মিনিট থেকে। সন্ধ্যারতি রাত ৮ টায়।

হাতে শঙ্খ-চক্র-বান এবং ধনুক নিয়ে সিংহ বাহনে জগদ্ধাত্রী দেবী আবির্ভূতা হন মর্তে। মা তাঁর কৃপার হস্তে সন্তানদের আগলে রাখেন। জ্যোতিষ মতে, জগদ্ধাত্রী পুজো চলাকালীন এমন কিছু টোটকা রয়েছে যা সঠিক নিয়মে করতে পারলে সংসারের শুভ হবে। সুখবৃষ্টি হবে জীবনের নানা ক্ষেত্রে। মা পার্বতীর অপর রূপ হল জগদ্ধাত্রী। জগদ্ধাত্রী কথার অর্থ হলো - জগতের ধাত্রী অর্থাৎ ধারণ কর্ত্রী। পশ্চিমবাংলায় বিভিন্ন জায়গায় জগদ্ধাত্রী পুজো খুব বিখ্যাত, খুব ধুমধুম করে পালিত হয় বাংলায় এই পুজো। প্রায় গোটা বঙ্গেই জগদ্ধাত্রী পূজা হলেও এই পুজো বেশি বিখ্যাত চন্দননগর ও কৃষ্ণনগরে। প্রত্যেক বছরেই চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজা (Chandannagar Jagdhatri Puja) দেখতে ভিড় করেন অগন্তি মানুষ। পাশাপাশি বিখ্যাত নদিয়ার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোও।

কীভাবে বঙ্গে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পূজা?

স্থানীয় কাহিনী অনুযায়ী, মহারাজা, কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজত্বকালে প্রথম শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজো। বলা হয়, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজত্বকালে নবাব আলীবর্দী খাঁ, তার কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন রাজস্ব হিসাবে। কিন্তু রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তা দিতে অস্বীকার করেন। যার ফলে তাকে মুর্শিদাবাদে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। বন্দী দশা কাটিয়ে যখন রাজা কৃষ্ণনগরে ফিরেছিলেন তখন তিনি শুনতে পান দুর্গাপুজর বিসর্জনের বাজনা। দুর্গা পুজোর সময়ে তিনি বন্দি ছিলেন ফলে দুর্গোৎসবে উপস্থিত থাকতে পারেননি তিনি। এই কারণে দেবীর বিসর্জনের বাজনা শুনে খুবই কষ্ট পান মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়। বলা হয় সেই রাত্রিরেই নাকি মা জগদ্ধাত্রী মহারাজের স্বপ্নে দর্শন দিয়ে তাকে পুজোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই মা দুর্গার বিকল্প হিসেবে তিনি মা জগদ্ধাত্রীর পুজো শুরু করেন। পরবর্তীকালে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় এর পুজো দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ফরাসিদের দেওয়ান ইন্দ্র নারায়ন চৌধুরী তৎকালীন ফরাজডাঙ্গা অর্থাৎ বর্তমানে চন্দননগরেও জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। এভাবেই বঙ্গে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রথা।

তবে অন্য একটি মত অনুসারে, একবার গুপ্তিপাড়ার এক জমিদারবাড়িতে দুর্গাপুজো দেখতে যান গরীব গ্রামবাসীরা। কিন্তু ভেদাভেদের কারণে তাঁদের সেখান থেকে অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তখন গ্রামবাসীরা ঠিক করেন যে তাঁরা আর এবার থেকে জমিদারবাড়িতে পুজো দেখতে যাওয়ার বদলে নিজেরাই পুজো করবেন। কিন্তু অত কম সময়ে দুর্গাপুজো করার সম্ভব ছিলোনা। তখন গ্রামের ১২ জন যুবক এগিয়ে আসেন। তাঁরা স্থির করে দুর্গার বদলে কিছু দিন পর চাঁদা তুলে দুর্গাপুজোরই অনুকরণে করা হবে মা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা। এই পুজোর কথা সেই সময়ে অনেক খবরের কাগজেই প্রকাশিত হয়েছিল। ১২ জন বন্ধু বা বা ১২ 'ইয়ার' মিলে এই পুজো করেন বলে একে 'বারো ইয়ারি' পুজো বলা হয়। এখান থেকেই 'বারোয়ারি পুজো' কথাটি আসে বলে মনে করা হয়।

উল্লেখ্য,  দুর্গাপুজোর মতোই চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পূজা হয় চারদিন ধরে। দুর্গাপুজোর সময়ে কলকাতা যেমন সেজে ওঠে উৎসবের সাজে, তেমনই চন্দননগরেও দেখা যায় আলোকসজ্জা, অসংখ্য মানুষের ভিড়। জগদ্ধাত্রী পূজা ২০২৩ (Jagdhatri Puja 2023) উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের থেকে শুরু করে দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষের ভিড় জমতে শুরু করেছে চন্দননগরে। তবে চলতি বছর ক্যালেন্ডার অনুসারে, জগদ্ধাত্রী পুজোর ষষ্ঠী ও সপ্তমী, একইদিনে পালিত হচ্ছে। ফলে গোটা বছর অপেক্ষা করে তিনদিনের পুজো হবে চন্দননগরে। কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি পুজোর আমেজ কাটাতে চাননা পুজো কমিটি। যার ফলে এবার বিসর্জনের পর রাজকীয় শোভাযাত্রা হবে দশমীর পরিবর্তে একাদশীর দিন। সূত্রের খবর, চন্দননগর ও ভরদেশ্বর মিলিয়ে প্রায় ১৭০টি পুজো হতে চলেছে। কার্নিভালে যোগ দেবে প্রায় ৭০টির মতো পূজা কমিটি । একই দিনে ষষ্ঠী ও সপ্তমী পড়ায় পুজোর অনুরাগীরা যাতে ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজো উপভোগ করতে চার দিন সময় পান সেজন্য একাদশীর দিন আয়োজিত হবে এই শোভাযাত্রা। প্রসঙ্গত,  চন্দননগরে দশমীর দিন আলোর কার্নিভাল করার একটা পুরনো রীতি রয়েছে। থিমের আলোর কারসাজি দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষ এদিন উপস্থিত থাকেন। চোখ ধাঁধানো আলোর কেরামতি সত্যিই তাক লাগানোর মতোই।  প্যান্ডেলগুলিতে আলো ব্যবহার করে সাজসজ্জার দিক থেকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে এই আলোর শহর। তবে প্রত্যেক বছর দশমীর দিনে এই শোভাযাত্রা আয়োজিত হলেও এবার একাদশীর দিন শোভাযাত্রা আয়জিত হবে।

এছাড়াও, চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষ্যে বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে পূর্ব রেল। হাওড়া থেকে ব্যান্ডেল এবং বর্ধমান শাখায় এই বিশেষ ট্রেনগুলো চালানো হবে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। চারদিনে মত দশটি স্পেশাল ট্রেন চলবে বলে খবর। এর মধ্যে রয়েছে পাঁচটি আপ লোকাল এবং পাঁচটি ডাউন লোকাল। রেল সূত্রে খবর, বিকেল ৫.২০, ৭.৫৫, রাত ১১.৩০ এবং ১২.৩০ মিনিটে হাওড়া থেকে ব্যান্ডেল যাবে পাঁচটি বিশেষ ট্রেন। ব্যান্ডেল থেকে সন্ধ্যা ৬.৩৫, ৯.২০, রাত ১টা, রাত ২টো নাগাদ হাওড়ার উদ্দেশ্যে ছাড়বে স্পেশাল লোকাল। সব ট্রেনই মাঝের সমস্ত স্টেশনে দাঁড়াবে। রাত ১.১৫ মিনিটে হাওড়া- বর্ধমান লোকাল থাকছে। বর্ধমান থেকে হাওড়া আসার ট্রেন রয়েছে রাত ১০.৩০ নাগাদ।


IPL 2024 | কলকাতার পর আইপিএল ২০২৪-এর প্লে অফে স্থান নিশ্চিত করলো রাজস্থান! বাকি দুই জায়গার জন্য ৫ দলের মধ্যে চলছে লড়াই!
CEOs in India | কারুর বেতন ৩০ কোটি তো কারুর ৮২কোটি! জানুন ভারতের সর্বোচ্চ বেতন প্রাপ্ত সিইও কারা!
Kitchen Utensils | স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, নন-স্টিক না মাটির পাত্র? কোন ধরণের বাসনে রান্না করা স্বাস্থ্যকর?
Mother’s Day | যত্ন নিন মায়ের স্বাস্থ্যের! জানুন মায়েদের জন্য রয়েছে কী কী স্বাস্থ্যবিমা এবং ৫০ পেরোলেই করাবেন কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষা!
১০০ টি দারুন সব আজব ফ্যাক্ট | Unique & Interesting Facts in Bangla
স্বনামধন্য লেখিকা লীলা মজুমদারের জীবনী | Biography of Leela Majumdar
মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য | চৈতন্যদেবের জীবনকাহিনী | Lifestory of Chaitanya Mahaprabhu in Bengali