Chandrayaan 3 | একরাশ আশা ও শুভেচ্ছা নিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর উদ্দেশ্যে ভূমি ছাড়লো চন্দ্রযান-৩!
শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে পৃথিবীর ভূমি ছেড়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো চন্দ্রযান-৩। উৎক্ষেপণের আগে ইসরোকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
১৪ই জুলাই, ২০২৩, এই দিনটা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে ভারতের ইতিহাসে। এদিন দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিলো চন্দ্রযান- ৩ (Chandrayaan-3)। ইতিমধ্যেই পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছেছে চন্দ্রযান-৩। মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ দেখতে উৎক্ষেপণ গ্রাউন্ডে উপস্থিত ছিলেন হাজার হাজার দর্শক। চন্দ্রযান- ৩ এর লঞ্চের পর গতি ছিল ১,৬২৭ কিলোমিটার। যখন এলভিএম৩ (LVM3) রকেটে উৎক্ষেপণ করা হয়, তখন এর প্রাথমিক গতি ছিল ঘণ্টায় ১৬২৭ কিলোমিটার। উৎক্ষেপণের ১০৫ সেকেন্ড পরে, ৬৪৩৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা থাকবে রকেটের গতিবেগ। আকাশের ৬২ কিমি উচ্চতায় পৌঁছে উভয় বুস্টারই একে একে রকেট থেকে আলাদা হয়। তখন রকেটের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সাত হাজার কিলোমিটার।
২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ (Chandrayaan-2) সফলতা পায়নি। তবে ব্যর্থ হয়েও হার মানেননি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, অর্থাৎ ইসরোর (ISRO) মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এবার নিয়েছেন আরও চ্যালেঞ্জ। এদিন দুপুরে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র (Satish Dhawan Space Center, Sriharikota) থেকে উৎক্ষেপণ হয় চন্দ্রযান-৩ এর। ভারতের এই মহাকাশযান উৎক্ষেপণ হওয়ার আগেই সুদূর ফ্রান্স (France) থেকে টুইট করে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গ্যানাইজ়েশনকে (Indian Space Research Organization) শুভেচ্ছাবার্তা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। টুইটে তিনি লেখেন, ঐতিহাসিক চন্দ্রাভিযান দেশের ‘আশা ও স্বপ্ন’ বহন করছে। এই দিনটা ভারতের মহাকাশ ক্ষেত্রে সর্বদা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
প্রসঙ্গত, চন্দ্রযান-৩ তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। রাশিয়া, আমেরিকা ও চিনের পর চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে সফট ল্যান্ডিং করতে চলেছে ভারত। এর আগে চন্দ্রযান-২ এরও সফট ল্যান্ডিং করার কথা ছিল। তবে সেই চন্দ্রাভিযান সফল হয়নি। চাঁদের বুকে ছিটকে পরে ইসরোর দ্বিতীয় চন্দ্রযান। চন্দ্রযান-২ এর অসফলতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে চন্দ্রযান-৩ তে। ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এবার ধাক্কা খেলেও চালু থাকবে চন্দ্রযান। সব অ্যালগোরিদম ফেল করলেও ল্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না চন্দ্রযান ৩ এর। চন্দ্রযান-৩ তে থাকছে একটি ল্যান্ডার (Labder) ও একটি রোভার (Rover)। এই মহাকাশযানটি চন্দ্রের কক্ষপথে প্রবেশের পর প্রোপালশন মডিউল (Propulsion Module) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন : চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেবে চন্দ্রযান ৩! সর্বপ্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যাবে ইসরোর মহাকাশযান!
চাঁদের উদ্দেশে উৎক্ষেপণ হওয়া চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদের মাটিতে নামতে লাগবে বেশ কিছু সময়। জানা গিয়েছে চন্দ্রযান-৩ চাঁদে নামবে ২৩ আগস্ট। সেখানে পৌঁছে চাঁদের হিসাবে একদিন কাজ করবে এই চন্দ্রযান, যা পৃথিবীর হিসাবে প্রায় ১৪ দিনের সমান। এই সময়ের মধ্যে চাঁদের মাটি পরীক্ষা করে দেখবে চন্দ্রযানের রোভার (Rover)। উল্লেখ্য, চন্দ্রযান-৩ সর্বপ্রথম নামতে চলেছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। অর্থাৎ এই প্রথম কোনও দেশ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর উদ্দেশ্যে মহাকাশযান পাঠালো।