WB Chokher Alo Scheme: 'চোখের আলো প্রকল্প ' ~ এক আলোর দিশারী
রাজ্যের প্রবীণ নাগরিকদের চোখের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় রাজ্যে চালু হল “চোখের আলো প্রকল্প”।
ভূমিকা | Introduction of Chokher Alo Scheme:
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে এবং মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় চোখের আলো প্রকল্প ২০২১ ঘোষণা করা হয়।
রাজ্যের অনেক প্রবীণ নাগরিকের চোখে ছানি পড়ার কারণে সঠিকভাবে তারা দেখতে অক্ষম। এমন অবস্থায় তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই ধরনের সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার চোখের আলো প্রকল্পটি শুরু করেছে। প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ছানি অপারেশন এবং সকলের জন্য চোখের চিকিৎসা সুনিশ্চিত করার কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্পটির পথ চলা। বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসার এই অভিনব প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাম্প্রতিককালের এক অনন্য উদ্যোগ। উক্ত প্রকল্পের সুবিধাগুলি মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তোলার জন্য রাজ্য সরকার সদাই তৎপর ।এই প্রকল্পটির অধীনে নবীন থেকে প্রবীণ অর্থাৎ নবজাতক থেকে বৃদ্ধ সকলের চোখের চিকিৎসা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা সম্ভবপর হয়ে উঠেছে ।
চোখের আলো প্রকল্পের শুভারম্ভ | Launch of Chokher Alo Scheme
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের প্রবীণ নাগরিকদের বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা এবং প্রবীণ এবং নবজাতকের অন্ধত্বের প্রতিরোধে এবং চশমা প্রদানের জন্য ৫ ই জানুয়ারী ২০২১ তারিখে পশ্চিমবঙ্গে চোখের আলো প্রকল্প চালু করেছেন।
এই প্রকল্পের নামকরণ করেছেন স্বয়ং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। লোগোটিও বানিয়েছেন তিনিই।
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য | Purpose of Chokher Alo Scheme
- নবীন থেকে প্রবীণ এবং নবজাতক সবার চোখের চিকিৎসা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা।
- ২০২৫ সালের মধ্যে ‘আই হেলথ ফর অল’ (Eye Health for All by 2025) কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করা।
- পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে অনেক সিনিয়র সিটিজেন আছেন যারা তাদের দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণে নিয়মিত চোখের চেক-আপ করতে পারছেন না যার ফলে ক্রমাগত তাদের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডব্লিউবি চোখের আলো প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা করেন।
- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চোখের আলো স্কিমের মূল লক্ষ্য হল পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী সকল নাগরিকদের বিনা মূল্যে চোখের চিকিৎসা প্রদান করা।
- এই প্রকল্পটি সিনিয়র সিটিজেনদের ছানি অপারেশনও সুনিশ্চিত করবে।
- পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ২০২৫ সালের মধ্যে সবার জন্য চোখের দৃষ্টি সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্য নিয়ে এই স্কিম চালু করেছেন এবং কমপক্ষে ২০ লাখ প্রবীণ নাগরিকের ছানি অপারেশন করার লক্ষ্যও নির্ধারণ করেছেন।
- পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রায় ২৫ লক্ষ বয়স্ক নাগরিকদের বিনামূল্যে চশমা প্রদান করবে যারা ছানি অপারেশন করেছে। দুয়ারে দুয়ারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং পাড়ায় পাড়ায় সমাধানের পরে, চোখের আলো প্রকল্পটি হল রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের জন্য চালু করা আরেকটি দুর্দান্ত প্রকল্প।
- পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ১০ লক্ষ শিক্ষার্থীর বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষাও করবে যার মধ্যে ৪ লক্ষ বিনামূল্যে চশমা পাবে। এদের ছাড়াও, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা বিনা খরচে চোখের চেকআপ করার সুযোগ পাবে।
চোখের আলো স্কিমের প্রথম ধাপ | The first initiative of Chokher Alo Scheme
ডব্লিউবি চোখের আলো স্কিমের প্রথম ধাপ ৫ ই জানুয়ারি ২০২১ থেকে শুরু হয়েছে। স্কিমের প্রথম ধাপের অধীনে প্রায় ১২০০ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ১২০ টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি আচ্ছাদিত আছে। তার পাশাপাশি , মুখ্যমন্ত্রী একটি আধুনিক ট্রমা কেয়ার সুবিধা যুক্ত হাসপাতালও উদ্বোধন করেছেন যা আধুনিক অবকাঠামো সমৃদ্ধ । এখানে ১০ কোটি ইউনিট আছে যেখানে ২০ টি বেড, ২ টি অপারেশন থিয়েটার এবং ১০ টি বেডের রিকভারি রুম রয়েছে। এর পাশাপাশি, জরুরী ক্ষেত্রে অর্থোপেডিক সার্জন এবং নিউরোসার্জন ও উপস্থিত রয়েছেন।
ডব্লিউবি চোখের আলো স্কিমের অধীনে বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা | Benefits of Chokher Alo Scheme:
** পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যে ৬০ বছরের অধিক বয়স্ক ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করা হবে।>রাজ্যে ২০ লক্ষের অধিক মানুষের সম্পূর্ণ বিনা খরচে ছানি অপারেশন করা হবে আগামী ৫ বছরে মধ্যে এবং তা ও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।>পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যে দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে চশমা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের প্রায় 8 লক্ষ 25 হাজারের ও বেশি বিনামূল্যে চশমা বিতরণ করা হবে।>পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ১০ লক্ষ শিক্ষার্থীর বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষাও করবে যার মধ্যে ৪ লক্ষ মানুষ বিনামূল্যে চশমা পাবে। এদের ছাড়াও, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা বিনা খরচে চোখের চেকআপ করার সুযোগ পাবেন।
যোগ্যতার মানদণ্ড | Eligibility criteria of Chokher Alo Scheme
- কেবলমাত্র বয়স্করাই নন, চোখের আলো প্রকল্পের আওতায় সবার জন্যই চোখের চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত এবং সুবিধা রয়েছে।
- চোখের আলো প্রকল্পের আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- আবেদনকারীকে অবশ্যই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বা রাজ্যের ছাত্র হতে হবে
চোখের আলো প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় নথি | Required documents for Chokher Alo Scheme
- আধার কার্ড
- ভোটার আইডি কার্ড
- ঠিকানার প্রমাণপত্র
- নিজের মোবাইল নম্বর
- পাসপোর্ট - সাইজ এর ছবি
চোখের আলো স্কিমের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া বা যোজনা নিবন্ধনের প্রক্রিয়া 2021| Application process of Chokher Alo Scheme
সমস্ত আগ্রহী আবেদনকারীরা যারা পশ্চিমবঙ্গ চোখের আলো প্রকল্পের অধীনে আবেদন করতে চান তাদের কিছু সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে কারণ সরকার এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে আবেদনের পদ্ধতি এখনো ঘোষণা করে নি। তবে আবেদন ফর্ম পূরণের আপাত একটি ধারণা প্রদান করা হচ্ছে নিচে । শীঘ্রই প্রক্রিয়াটি শুরু হবে এবং তারপর সহজেই এই প্রকল্পটিতে আবেদনকারী অতি সহজেই নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন কারণ অনলাইন পরিষেবাগুলি প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য অপেক্ষাকৃত সহজ এবং সাশ্রয়ী।
প্রথমে, আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গ চোখের আলো প্রকল্প ২০২১ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
তারপরে আপনার পর্দায় একটি নতুন পৃষ্ঠা উপস্থিত হবে।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই প্রকল্পটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের হোমপেজ আছে। সুতরাং উপভোক্তাকে সম্ভবত ডান পাশে লগইন করার বিকল্পটিতে ক্লিক করতে হবে এবং যেহেতু আপনি একজন নতুন ব্যবহারকারী তাই আপনাকে নতুন রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করতে হবে।এর পরে, আবেদন ফর্ম সহ একটি নতুন পৃষ্ঠা আবেদনকারীর সামনে উপস্থিত হবে যেখানে প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাস্য তথ্য আবেদনকারীকে পূরণ করতে হবে। নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করা একান্ত আবশ্যক । (আজকাল মোবাইল ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যেখানে আবেদনকারীর ওটিপি ভেরিফিকেশন করতে হবে)।
অবশেষে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
প্রকল্পটি কতদিন ধরে চলবে | How long the project will last?
চোখের আলো প্রকল্পটি আগামী ৫ বছর অর্থাৎ ২০২৫ সাল পর্যন্ত চালু থাকবে। তবে পরবর্তীকালে আরো সময় বৃদ্ধি করা হতে পারে।
প্রকল্পের বাস্তবায়ন | Implementation of Chokher Alo Scheme
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এসএসকেএম হাসপাতাল ছিল প্রথম ট্রমা কেয়ার সেন্টার। কিন্তু উত্তরবঙ্গের মানুষ যেহেতু এর সুবিধা নিতে পারেনি তাই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে দ্বিতীয় ট্রমা সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে যাতে উত্তরবঙ্গের মানুষেরা ও এর সুফল পেতে পারে। ৩০০–র বেশি চোখের সার্জেন ও প্রায় ৪০০ জন অপটোমেট্রিস্ট টেকনিশিয়ানকে এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে।জরুরী রোগীদের যত্ন নিতে হাসপাতালে একজন অর্থোপেডিক সার্জন এবং একজন নিউরো সার্জনকে রাখা হয়েছে।সেই অনুযায়ী রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় ক্যাম্প করে চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ট্রমা কেয়ারের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী যেটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১০ কোটি টাকা। এতে উপকৃত হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর–সহ সারা উত্তরবঙ্গের মানুষ।
প্রশ্নোত্তর - Frequently Asked Questions
চোখে আলো প্রকল্পটি কবে চালু করা হয় ?
৫ ই জানুয়ারি ২০২১ থেকে শুরু হয়েছে।
চোখের আলো প্রকল্পটি কী উদ্দেশ্যে চালু করা হয়েছিল ?
প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ছানি অপারেশন এবং সকলের জন্য চোখের চিকিৎসা সুনিশ্চিত করা এবং অন্ধত্ব মোচনের কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে।
চোখের আলো প্রকল্পটি কতদিন ধরে চলবে ?
চোখের আলো প্রকল্পটি আগামী ৫ বছর অর্থাৎ ২০২৫ সাল পর্যন্ত চালু থাকবে। তবে পরবর্তীকালে আরো সময় বৃদ্ধি করা হতে পারে।
চোখের আলো প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কি কি নথি বা ডকুমেন্টস লাগবে?
আবেদনকারীর আধার কার্ড,ভোটার আইডি কার্ড, ঠিকানার প্রমাণপত্র, নিজের মোবাইল নম্বর,পাসপোর্ট - সাইজ এর ছবি লাগবে।