পুজো ও উৎসব

Noboborsho | ১লা বৈশাখের সূচনা নাকি করেছিলেন স্বয়ং সম্রাট আকবর! জেনে নিন বাংলা নববর্ষের ইতিকথা

Noboborsho | ১লা বৈশাখের সূচনা নাকি করেছিলেন স্বয়ং সম্রাট আকবর! জেনে নিন বাংলা নববর্ষের ইতিকথা
Key Highlights

সম্রাট আকবরের সিংহাসন আরোহণের তারিখ অর্থাৎ ১৫৫৬ সালের ৫ নভেম্বর থেকে বাংলা নববর্ষ পালিত হওয়া শুরু হয়। আকবরী যুগে এর নাম ছিল 'ফসলি সন'। পরবর্তীতে তা 'বঙ্গাব্দ' বা 'বাংলা বর্ষ' নামে পরিচিত হয়। এবছর বাংলা সন পড়েছে ১৪৩২ বঙ্গাব্দে। বাঙালিদের কাছে বরাবর পয়লা বৈশাখের এক আলাদা মাধুর্য আছে। এদিন সকালে উঠে স্নান সেরে নতুন জামাকাপড় পড়েছেন আপামর বঙ্গবাসী। ভোজনরসিক বাঙালি যে আজ গ্যাস অম্বল ভুলে গিয়ে কব্জি ডুবিয়ে পেটপুজো করছেন তা বলাই বাহুল্য।

"তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক।

এসো হে বৈশাখ, এসো, এসো।"

ইতিহাস বলছে মোঘল সম্রাট আকবরের আমলেও বৈশাখের ১লায় নববর্ষ পালিত হতো জাঁকজমক করে। কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক অদ্ভুত ইতিহাস। চলুন জেনে নিই বাংলা নববর্ষের গোড়ার কথা।

উৎস: গবেষকরা বলছেন বাংলা মাসের নামগুলি এসেছে বিভিন্ন নক্ষত্রের নাম থেকে। যেমন, বিশাখা থেকে বৈশাখ, জেষ্ঠ্যা থেকে জ্যৈষ্ঠ, অগ্রইহনী থেকে অগ্রহায়ণ ইত্যাদি। আগেকার দিনে অগ্রহায়ণ মাসে ধান কাটা শুরু হতো বলে এই মাসকেই বছরের প্রথম মাস হিসেবে ধরা হতো। ভারতে মুঘল শাসন শুরুর প্রাক্কালে মোগল সম্রাটরা আরবি বছর হিজরি পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় শুরু করেন। কিন্তু হিজরি পঞ্জিকা অনুযায়ী ওই সময়কাল ধানের ফলনের উপযুক্ত ছিল না। ফলে প্রায়শই কৃষকেরা অসময়ে খাজনা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়তেন।

খাজনা আদায়ের প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে মুঘল সম্রাট আকবর পঞ্জিকার সংস্কারে আগ্রহী হন। তাঁর আদেশে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ আমীর ফতেহউল্লাহ সিরাজী সৌরবছর ও আরবি হিজরি সালের ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম তৈরি করেন। সেই সন গণনার প্রক্রিয়া আজও চলে আসছে।

নববর্ষের সময়কাল: গবেষকদের মতে, প্রথমদিকে ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ বা ১১ মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়েছিল। পরে সম্রাট আকবরের সিংহাসন আরোহণের তারিখ অর্থাৎ ১৫৫৬ সালের ৫ নভেম্বর থেকে বাংলা নববর্ষ পালিত হওয়া শুরু হয়। আকবরী যুগে এর নাম ছিল 'ফসলি সন'। পরবর্তীতে তা 'বঙ্গাব্দ' বা 'বাংলা বর্ষ' নামে পরিচিত হয়। এবং আকবর প্রবর্তিত এই  পঞ্জিকার নাম ছিল 'তারিখ এ এলাহি'।

উৎসব: সে আমলে এই নয়া পঞ্জিকা অনুযায়ী প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষদিনের মধ্যে সারাবছরের খাজনা, শুল্ক এবং দেনা পরিশোধ করতে হতো। এর পরদিন অর্থাৎ বৈশাখের প্রথমদিনে জমিদার এবং বড়ো ব্যবসায়ীরা নতুন বছরের জন্যে নতুন হিসেবের খাতা খুলতেন। লাল শালু কাপড়ের মোড়কে জড়ানো এই 'হালখাতা' আসলে ছিল বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। 

সেদিন জমিদার এবং ব্যবসায়ীদের দর্শনপ্রার্থী আত্মীয় অনাত্মীয় সকলকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করা হতো। এই প্রথা এখনও প্রচলিত আছে। উল্লেখ্য, প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে ১৯১৭ সালে পয়লা বৈশাখের দিন হোম কীর্তন ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়ে হয়েছিল বঙ্গদেশে!

এবছর বাংলা সন পড়েছে ১৪৩২ বঙ্গাব্দে। বাঙালিদের কাছে বরাবর পয়লা বৈশাখের এক আলাদা মাধুর্য আছে। এদিন সকালে উঠে স্নান সেরে নতুন জামাকাপড় পড়েছেন আপামর বঙ্গবাসী। বড়োরা ভিড় জমিয়েছেন মাছের বাজারে কিংবা পাঠার মাংসের দোকানে। বেলা পড়লে কচিদের হাত ধরে হালখাতা করতে বেরিয়েছেন বাবারা। ভোজনরসিক বাঙালি যে আজ গ্যাস অম্বল ভুলে গিয়ে কব্জি ডুবিয়ে পেটপুজো করছেন তা বলাই বাহুল্য। এই নববর্ষে আপনাদের সক্কলকে জানাই অসংখ্য প্রীতি ও শুভেচ্ছা। পুরোনো যা কিছু জীর্ণ মলিন তা পেছনে ফেলে শুভ বছরের সূচনা হোক, পরমেশ্বরের কাছে এই কামনাই রইলো।


IndiGo Flight Emergency | মাঝ আকাশে ‘মে ডে’ কল ইন্ডিগোর পাইলটের, বরাতজোরে প্রাণে বাঁচলেন ১৬৮ যাত্রী
North Korea | ইরান-ইসরায়েলের সংঘর্ষের মধ্যেই এবার মিসাইল ছুড়লো উত্তর কোরিয়া!
Vishwash Kumar Ramesh | আহত শরীরেই দাদার শেষকৃত্য করলেন এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার একমাত্র জীবিত ব্যক্তি বিশ্বাসকুমার রমেশ!
Mohun Bagan transfer Ban | মোহনবাগানের ওপর থেকে উঠলো ফিফার নিষেধাজ্ঞা, নতুন ফুটবলার সই করাতে রইলো না বাধা
Ravichandran Ashwin | বল টার্ন করাতে রাসায়নিক ব্যবহার? অশ্বিনের দলকে কাঠগড়ায় তুললো বিপক্ষ!
Kedarnath Landslide | ধসে পাথর চাপা পড়ে মৃত্যু এক পুণ্যার্থীর! অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ যাত্রা!
Pune Bridge Collapsed | পুনেতে সেতু ভেঙে বড় দুর্ঘটনা! ৫ পর্যটকের মৃত্যুর আশঙ্কা ! নদীতে ভেসে গেছেন ২৫-৩০ জন পর্যটক!