খেলাধুলা

Mohun Bagan | শিল্ডের রং সবুজ-মেরুন! প্রথমবার আইএসএলের শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হল মোহনবাগান! সঙ্গে এলো আরেক সাফল্যও!

Mohun Bagan | শিল্ডের রং সবুজ-মেরুন! প্রথমবার আইএসএলের শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হল মোহনবাগান! সঙ্গে এলো আরেক সাফল্যও!
Key Highlights

মুম্বাই সিটিকে ২-১ গোলে পরাস্ত করে মোহন বাগান জয় করে আইএসএল শিল্ড। তবে এর পাশাপাশি মোহন বাগানের ঝুলিতে এসেছে আরও এক সাফল্যও। লিগ শিল্ড জয়ের অর্থ হল ২০২৪-২৫ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সরাসরি প্রবেশ পত্র পাওয়া।

ঐতিহাসিক আইএসএল শিল্ড জিতল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট! এই প্রথমবার আইএসএলের শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হল মোহনবাগান। এই জয়ের পরে যুবভারতী জুড়ে শুধুই মোহনবাগান (Mohun Bagan) আর মোহনবাগান। সেলিব্রেশনে মেতে ওঠেন দিমিত্রি পেত্রাতোস, শুভাশিস বোস, জেসন কামিন্স থেকে শুরু করে সকল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট খেলোয়াড় (mohun bagan super giant players) ও সমর্থকরা। সোমবার মুম্বাই সিটি বনাম মোহন বাগান (mumbai city vs mohun bagan) আইএসএল ম্যাচে ২-১ গোলে পরাস্ত করেছে সবুজ-মেরুন দল। আর সেইসঙ্গে সমর্থকদের সামনেই জিতে নিয়েছে লিগ শিল্ডের খেতাব। তবে কেবল আইএসএল শিল্ড জয়ই নয়, মোহন বাগানের ঝুলিতে এসেছে আরও এক সাফল্যও। লিগ শিল্ড জয়ের অর্থ হল ২০২৪-২৫ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সরাসরি প্রবেশ পত্র পাওয়া। অর্থাৎ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ (afc champions league matches) খেলতে পারবে মোহনবাগান।

লিগ শিল্ডের রং সবুজ-মেরুন!

সোমবারের মোহনবাগান-মুম্বই সিটি ম্যাচ কার্যত কাউকো-মনবীরদের কাছে ছিল ফাইনাল। থুড়ি আরও ভালো করে বললে, শেষের তিনটি ম্যাচই ছিল মোহনবাগানের কাছে ফাইনাল। আর তিনটি ফাইনাল জিতে মোহনবাগান লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল। এই ম্যাচের বল গড়ানোর আগে থেকেই আত্মবিশ্বাস খেলা করছিল মনবীরদের মনে। মুম্বাই সিটি বনাম মোহন বাগান (mumbai city vs mohun bagan) দুপয়েন্টে এগিয়ে ছিল মোহনবাগানের থেকে। ড্র করলে মুম্বই লিগ শিল্ড জিতবে। এমন অবস্থায় হাবাসের ছেলেরা উজ্জীবিত ফুটবল খেলল। দীর্ঘ অসুস্থতা সারিয়ে স্প্যানিশ কোচ এদিন মোহনবাগানের ডাগ আউটে ছিলেন। তিনি যে এই দলের আসল চালিকা শক্তি তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। খেলার ১৯ মিনিটেই লিস্টন এগিয়ে দিতে পারতেন মোহনবাগানকে। তাঁর হেড মুম্বইয়ের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। সেই যাত্রায় লিস্টন ব্যর্থ হলেও তিনিই এগিয়ে দেন মোহনবাগানকে। খেলার বয়স তখন ২৮ মিনিট। মুম্বইয়ের পেনাল্টি বক্সের ভিতরে বল ধরে মেহতাব সিংকে নিয়ে ছেলেখেলা করলেন লিস্টন। তার পরে ডান পায়ের শটে মুম্বইয়ের জাল কাঁপান। ম্যাচের রাশ মোহনবাগানের হাতে তখন। বিরতির আগে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন মুম্বইয়ের ছাংতে। তিনি সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে সাদিকু ও কাউকোকে তুলে নিয়ে কামিন্স ও হ্যামিলকে নামান হাবাস। সেটাই মাস্টারস্ট্রোক হয়ে যায়। কামিন্সই ২-০ করে যান। পেত্রাতোসের কাছ থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত রিসিভ করেন অজি তারকা। বাঁ দিক থেকে খেলা সম্পূর্ণ ডান দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন পেত্রাতোস। তিনিই এই দলটার হৃৎপিণ্ড। এবারের মরশুমে পেত্রাতোস একাই বহু ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। স্বদেশীয় পেত্রাতোসের কাছ থেকে বল পেয়ে ছবির মতো বল রিসিভ করেন কামিন্স। তার পরেই তাঁর পা কথা বলে। দুরন্ত ফিনিশে ২-০ করে যান। ওরকম গোল দেখার জন্য কয়েক মাইল পথ হাঁটা যায়। ৮৯ মিনিটে ছাংতে ব্যবধান কমান মুম্বইয়ের হয়ে। কিন্তু এদিকে ঘরের মাঠে দর্শকদের সামনে মোহনবাগান এক ঢিলে যেন দুই পাখি মারল। আগের সাক্ষাতে হারের বদলা নিল। সেই সঙ্গে লিগ শিল্ড জিতল।

জয়ের পরেই দেখা যায়  ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে আবেগের বিস্ফোরণ। সেলিব্রেশন করতে শুরু করেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট খেলোয়াড়রা (mohun bagan super giant players)। রেফারির শেষ বাঁশির পরে লিস্টন ছুটছেন, সাদিকু গ্যালারির দিকে তাকিয়ে হাত ছুড়ছেন। মোহনবাগান সমর্থকদের চোখে দেখা যায় আনন্দশ্রু। হাবাসকে জড়িয়ে ধরেছেন খেলোয়াড়রা। সব পেয়েছিল অনুভূতি তাঁদের। গ্যালারিতে কামিন্স ও সাদিকুর বড় কাট আউট দেখা গেল। তাতে লেখা শোলে।

২০২৪-২৫ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে মোহনবাগান!

লিগ শিল্ডের খেতাব জয়ের পাশাপাশি বাগানের ঝুলিতে এসেছে আরও এক সাফল্য। লিগ শিল্ড জয়ের অর্থ হল ২০২৪-২৫ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সরাসরি প্রবেশ পত্র পেয়ে যাওয়া। অর্থাৎ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ (afc champions league matches) গ্রুপ পর্বে সরাসরি খেলবে সবুজ-মেরুন দল। প্রসঙ্গত, এই ম্যাচের শেষে চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে মোহনবাগান শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। তারা ২২ ম্যাচে মোট ৪৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। আর সেইসঙ্গে ১ পয়েন্টে টেক্কা দিয়েছে মুম্বই সিটি এফসিকে। এই শিল্ড জয়ের পাশাপাশি আইএসএল টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং নক-আউট চ্যাম্পিয়ন এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে খেলার ছাড়পত্র হাসিল করেছে।

 লিগশিল্ড জয়ের পরে মোহনবাগানের অধিনায়ক শুভাশিস বোসের হাতে শিল্ড এবং পুরস্কারমূল্যের চেক তুলে দেন। প্রাথমিকভাবে মোহনবাগানের সব খেলোয়াড় এবং সাপোর্ট স্টাফদের মেডেল পরিয়ে দেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) সভাপতি কল্যাণ চৌবে। তারপর মোহনবাগানের হাতে শিল্ড তুলে দেন। সেই ঐতিহাসিক শিল্ড নিয়ে নিজের সতীর্থদের কাছে চলে আসেন শুভাশিস। শিল্ড হাতে পাওয়ার পরে পুরো যুবভারতী স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করেন মোহনবাগানের খেলোয়াড় এবং সাপোর্ট স্টাফরা। তারপর দলের বাকিদের সঙ্গে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন।  উল্লেখ্য, সোমবারের এই ম্যাচ দেখার জন্য সল্টলেক স্টেডিয়ামে ৬১,১৭৭ জন দর্শক হাজির হয়েছিলেন। সেখানে মোহনবাগান সমর্থকদের উচ্ছাস ছিল বাধ ভাঙা। তবে শুধু উচ্ছ্বাস নয়, আবেগেও ভেসে যান মোহনবাগানের সমর্থকরা। গ্যালারিতে অনেকের চোখেই জল ধরা পড়ে। আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন তাঁরা।