Weather | বৃষ্টিতে হরিদ্বারের লোকালয়ে কুমিরের তাণ্ডব! ৪৫ বছর পর তাজমহলে ঢুকলো যমুনার জল! বঙ্গে বাড়বে বৃষ্টি!
ক্রমাগত বৃষ্টিতে নাজেহাল অবস্থা উত্তর ভারতের। জলস্তর বেড়ে ওঠায় লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে কুমির, সাপ। দীর্ঘ বছর পর তাজমহলে ঢুকলো যমুনার জল।
বর্ষা দেরিতে ঢুকলেও বর্তমানে দেশের একাধিক এলাকার বাসিন্দারা জলমগ্নতা ও টানা বৃষ্টির জেরে নাজেহাল। কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টিপাতের জেরে দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা উত্তরভারতের অনেকাংশে। হিমাচল প্রদেশে (Himachal Pradesh) বন্যা, ধসে মৃত্যুও হয় একাধিকের। তবে এবার এই আবহাওয়ার জন্য তৈরী হয়েছে অন্যরকমের সমস্যা। বৃষ্টির জেরে হরিদ্বারের (Haridwar) লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে কুমির।
প্রবল বৃষ্টির জেরে জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে গঙ্গায় (Ganges)। যার ফলে স্বাভাবিক বাসস্থান হারিয়েই হরিদ্বারের লোকালয়ে কুমির ঢুকে পড়েছে বলে অনুমান। এই প্রসঙ্গে হরিদ্বারের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার নীরজ ভার্মা (Neeraj Verma, Divisional Forest Officer of Haridwar) বলেন, প্রবল বৃষ্টি এবং নদীর জলস্ফীতির পর থেকে ১৫ দিনে অন্তত ১০টি কুমির লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। কেবল হরিদ্বারই নয়, কুমির দেখা গিয়েছে লকসর (Laxar), খানপুর (Khanpur) এবং রুরকিতে (Roorkee)। হঠাৎ কুমিরের আনাগোনাতে রীতিমতো দুঃচিন্তায় রয়েছেন স্থানীয়রা। কেবল রাস্তাতেই নয়, বাড়ির উঠোনেও কুমির ঢুকে পড়ছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই লোকালয়ে কুমির ঢুকে পড়ার খবর পেয়ে বন দফতর (Forest Department) থেকে এসে কুমির অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জানা গিয়েছে, কেবল কুমিরই নয়, লোকালয়ে বেড়েছে সাপের উপদ্রবও।
প্রবল বর্ষার কারণে নাজেহাল অবস্থা দিল্লিতে (Delhi)। ৪৭ বছরে রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টি হয় এই কয়েকদিনে। লাগাতার বৃষ্টির জেরে জলের তলায় চলে যায় রাজধানীর অধিকাংশ। যমুনার (Yamuna) জলস্তর এতটাই বৃদ্ধি পায় যে সেই জল প্রায় ৪৫ বছর পর ঢোকে জল তাজমহলের (Taj Mahal) ভিতরে। যমুনার জল ঢুকে পরে তাজমহলের সুসজ্জিত বাগানে। এমনকি ইতিমদ-উল-দৌলার (Itimad-ul-Daulah) সমাধি ক্ষেত্রেও জল পৌঁছে যায়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মথুরার ওখলা (Okhla) এবং গোকূল ব্যারাজ (Gokul Barrages) দিয়ে হাজার হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। যার জেরে যমুনার জলস্তর হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, দিল্লিতে রীতিমতো সৃষ্টি হয় বন্যা পরিস্থিতি। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal') নির্দেশে নামানো হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। শয়ে শয়ে স্থানীয়দের উদ্ধারও করা হয়। যদিও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারান একাধিক। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে তাজমহল চত্বরে জল ঢুকে পড়ে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করেন অনেকে। যদিও আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (Archaeological Survey of India) আশ্বস্ত করেছে বন্যার জল তাজমহলের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।
অন্যদিকে, বেশ কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গে সেরকমভাবে দেখা মিলছিলোনা বৃষ্টির। তবে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বাড়তে চলেছে দক্ষিণে বর্ষণ। জানা গিয়েছে, আজ অর্থাৎ ১৯সে জুলাই বিকেল-সন্ধেতে কলকাতা (Kolkata) সহ চার জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, বৃষ্টি হবে কলকাতা, হাওড়া (Howrah), উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণায় (North and South 24 Parganas)। এছাড়া আগামী শুক্রবার অর্থাৎ ২১সে জুলাই বৃষ্টিপাত কিছুটা বাড়বে। দক্ষিণবঙ্গে শুক্রবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর (East and West Medinipur), উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, কলকাতা, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম (Jhargram) এবং বাঁকুড়া (Bankura) জেলায়। এই সপ্তাহে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত হলেও বজায় থাকবে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি।
উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পরিমাণ বেশ কিছুটা বাড়বে। দু-এক পশলা ভারী বৃষ্টি হতে পারে উপরের দিকের জেলাগুলিতে। উল্লেখ্য, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে (North-West Bay of Bengal) সৃষ্টি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। যা আগামী ৪৮ ঘন্টায় পরিণত হতে চলেছে নিম্নচাপে। ঘূর্ণাবর্তটি রয়েছে ছত্তিশগড় (Chhattisgarh) ও মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) সংলগ্ন এলাকায়। মৌসুমী অক্ষরেখা বিকানের (Bikaner), কোটা (Kota), গুনা মণ্ডলা (Guna Mandala), পেন্ড্রারোড (Pendraroad) এবং ওড়িশার কটকের (Cuttack,Odisha) উপর দিয়ে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে পর্যন্ত বিস্তৃত এটি। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই ঘূর্নবর্তের অভিমুখ রয়েছে ওড়িশার দিকে।