Earthquake in India | তিব্বতের নীচে ভেঙে যাচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট! ভারতে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের আশঙ্কা!
ভারতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের আশঙ্কা। সম্প্রতি এক গবেষণা দ্বারা জানা গিয়েছে, তিব্বত মালভূমির নীচে দু'ভাগে ভেঙে যাচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট।অন্যদিকে, সম্প্রতি জাপানে ভূমিকম্পের জেরে বেরিয়ে এসেছে বিশাল ভূখন্ড।
বিগত বেশ কিছু সময় ধরেই শিরোনামে উঠে আসছে ভারতের ভূমিকম্পের খবর (Earthquake News)। দিন কয়েক পর পরই দেশের ভিন্ন ভিন্ন অংশ কেঁপে উঠছে ভূকম্পে। তবে এর মধ্যেই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানালেন বিজ্ঞানীরা। যে কোনোদিন বিধ্বংসী ভূমিকম্প হতে পারে ভারতে! এমনকি সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় জানা গিয়েছে তিব্বত মালভূমির নীচে দু'ভাগে ভেঙে যাচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট! অন্যদিকে, সম্প্রতি জাপানে ভূমিকম্প (Japan Earthquake) এর জেরে বেরিয়ে এলো নতুন ভূখন্ড! তীব্র ভূমিকম্পের ফলে জাপানের সমুদ্র পিছিয়ে গিয়ে জলের তলা থেকে বেড়িয়ে এসেছে বিস্তীর্ণ ভূমি।
ভারতে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের আশঙ্কা!
সম্প্রতি সান ফ্রান্সিসকোয় আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন কনফারেন্সে প্রকাশিত হয়েছে ভারতে ভূমিকম্প (Earthquake in India) সংক্রান্ত গবেষণার রিপোর্ট। জানা গিয়েছে, চিনের ওশান ইউনিভার্সিটির ভূপদার্থবিদ লিন লিউ-র নেতৃত্বাধীন এক গবেষণাদল টেকটোনিকের কার্যকলাপের এই মডেলটি তৈরি করেছেন। এই নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, তিব্বত মালভূমির নীচে আসলে দু'ভাগে ভেঙে যাচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটটি। আর এই ক্রমাগত সংঘর্ষের কারণে বিকৃত হচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের উপরের অংশ।
উল্লেখ্য, যখন কোনও মহাসাগরীয় টেকটোনিক প্লেট ভারী ও ঘন হয়, তখন সেটি তুলনায় হালকা মহাদেশীয় প্লেটের নীচে ঢুকে যায়। এই প্রক্রিয়াকে বলে সাবডাকশন (subduction)। এতদিন ভূ-বিজ্ঞানীরা জানতেন, ভারতীয় প্লেটটি আন্ডারপ্লেটিং প্রক্রিয়ায় ইউরেশীয় প্লেটের নীচে পিছলে ঢুকে যাচ্ছে। তবে সম্প্রতি নতুন এই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় প্লেটের নীচের দিকের অংশ ইউরেশীয় প্লেটের নীচে ঢুকে গেলেও, তিব্বত এলাকায়, এই প্লেটের উপরের অংশগুলি ক্রমাগত সংঘর্ষের মুখে পড়ছে। যার জেরে এটি বেঁকে যাচ্ছে এবং ভেঙেও যাচ্ছে। বলা বাহুল্য, ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের মধ্যে দীর্ঘ ৬০ মিলিয়ন বছর আগে শুরু হয়েছিল সংঘর্ষ। তার আগে ভারত ছিল একটি দ্বীপ। দুই ভূমির একত্রে সংঘর্ষে তৈরি হয় হিমালয় পর্বত। মাটির উপর হিমালয় তৈরি হলেও ভিতরে চাপা রয়েছে সেই 'রহস্য'। এখন বিজ্ঞানীদের ধারণা, ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট ইউরেশিয়ান প্লেটের নীচের দিকে চলে যাচ্ছে। ফলে চাপে তা ভেঙে দুই টুকরো হয়ে যাচ্ছে। একে বলা হয় ডিলামিশনেশন (delamination)। কিন্তু উপরের অংশ অর্থাৎ ইউরেশিয়ান প্লেট উঠছে। যার কারণে ক্রমশ বাড়ছে হিমালয়ের উচ্চতা।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ তিব্বতের ৯৪টি ব্রডব্যান্ড সিসমিক স্টেশন থেকে 'আপ-অ্যান্ড-ডাউন' 'এস-ওয়েভ' এবং 'শিয়ার-ওয়েভ' সংক্রান্ত তথ্যের সঙ্গে 'ব্যাক-অ্যান্ড-ফোর্থ' 'পি-ওয়েভ' তথ্য মিলিয়ে ভূগর্ভস্থ প্লেটগুলির গতির ছবি তৈরি করা হয়। যে অঞ্চলে দুটি প্লেটে সংঘর্ষ হয় সেই অঞ্চলে ভূমিকম্পের তরঙ্গ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই তরঙ্গগুলি ব্যবহার করে, বিশ্লেষণ করে ভারতীয় প্লেটের হালের ছবিটি তৈরি হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, ভারতীয় প্লেটের নীচের অংশটি প্রায় ২০০ কিলোমিটার গভীর। অথচ উপরের দিকে কোথাও কোথাও প্লেটটির গভীরতা ১০০ কিলোমিটার। এ থেকেই গবেষকরা মনে করেন, ভারতীয় প্লেটের উপরের দিকের কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে এবং আরও কিছু অংশ ভেঙে যাচ্ছে। এই গবেষণা এবং এর আগের ভূ-রাসায়নিক গবেষণাগুলি থেকেও ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে যে, ভারতীয় প্লেটটি ভেঙে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে উট্রেখ্ট ইউনিভার্সিটির ভূ-গতিবিদ্যাবিদ ডুভ ভ্যান হিন্সবার্গেন বলেছেন, দু'টি মহাদেশ একে অপরের সঙ্গে কী ভাবে আচরণ করে তা এখনও জানা যায়নি কিন্তু তবে এই বিষয়টি ভীষণ ভয়ের। যদি এই ফাটল দ্রুত বিস্তৃত হয় হিমালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভবিষ্যতে ভূমিকম্পের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যতে ভূমিকম্প হলে কম্পনের মাত্রাও প্র্রবল হবে এবং ভারতে ভূমিকম্প (Earthquake in India) ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করবে।
দিন কয়েক পর পরই শিরোনামে উঠে আসছে ভারতের ভিন্ন ভিন্ন অংশে ভূমিকম্পের খবর (Earthquake News)। একবার দিল্লি তো একবার ভারত-নেপাল সীমান্ত কেঁপে উঠছে ভূকম্পে। এই প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত ভারতে সর্বশেষ ভূমিকম্প (Latest Earthquakes in India) অনুভূত হয় দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের একাংশে। ভারতের জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতে সর্বশেষ ভূমিকম্প (Latest Earthquakes in India) এর কারণ চিনের দক্ষিণ শিনজিয়াং প্রদেশের ভূকম্প। কিরঘিজস্তান এবং চিনের শিনজিয়াং সীমান্ত এলাকায় ভূপৃষ্ঠের ৮০ কিলোমিটার গভীর থেকে সৃষ্ট এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৭।
আরও পড়ুন : বদলে যাবে মানব সভ্যতা সম্পর্কে সকল ধারণা! অ্যামাজনের গভীরে ৩ হাজার বছর পুরোনো শহরের হদিশ!
অন্যদিকে, ২০২৪ সালের শুরুতেই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল জাপানের নোটো। জাপানের এই উপদ্বীপ অঞ্চলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৫। এই ভূমিকম্পে প্রাণ হারান মোট ২১৩ জন। ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন শিবিরে। বহু পরিবার জল এবং বিদ্যুৎ ছাড়া দিন কাটিয়েছেন। কিন্তু এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই নজর কেড়েছে আরেক বিষয়। জাপানে ভূমিকম্প (Japan Earthquake) এর জেরে সমুদ্র পিছিয়ে গিয়ে জলের তলা থেকে বেড়িয়ে এসেছে বিস্তীর্ণ ভূমি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সেই ভূমিকম্পের তীব্রতা এতোটাই ছিল যে সমুদ্র পিছিয়ে গিয়ে বেড়িয়ে এসেছে প্রায় দুটি ফুটবলের মাঠের সমান ভূমি। উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রায় ২৫০ মিটার জমি জেগে উঠেছে।