লাইফস্টাইল

হস্তরেখা বিশ্লেষণ | Palmistry analysis in bengali

হস্তরেখা বিশ্লেষণ | Palmistry analysis in bengali
Key Highlights

তারিখ এবং জন্মস্থানের ভিত্তিতে, জন্মকালে মহাকাশে গ্রহের অবস্থান নিরুপণ করে অথবা প্রশ্নের সময় গ্রহাদির অবস্থান নির্ণয় করে, অথবা হস্তরেখাবিচার, শরীরের চিহ্নবিচার ইত্যাদি বিভিন্ন পদ্ধতির ব্যবহারে প্রশ্নকর্তার ভবিষ্যতের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করার জ্ঞান ও পদ্ধতিকে জ্যোতিষশাস্ত্র বলা হয়।

ভূমিকা | Introduction to Palmistry 

জ্যোতিষশাস্ত্র হলএমন একটি শাস্ত্র যেটি নভোমণ্ডলে অবস্থিত বিভিন্ন জ্যোতিষ্ক বা গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান নির্ধারণ করে মানুষের ভাগ্যগণনা ও ভাগ্য নিরূপণ করতে পারে।বর্তমানে মানুষের জন্মসময়, তারিখ ও জন্মস্থানের ভিত্তিতে, জন্মকালে মহাকাশে গ্রহের অবস্থান অনুযায়ী ভবিষ্যতের গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করা যায়। জ্যোতিষশাস্ত্রের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ  দিক  হল হস্তরেখাবিচার বা হস্তরেখা বিশ্লেষণ। সঠিক জ্ঞান ও পদ্ধতির প্রয়োগে একটি মানুষের হস্তরেখা বিশ্লেষণ করে তাঁর বর্তমান ও ভবিষ্যতের ঘটনাবলী সম্পর্কে তাঁকে ওয়াকিবহাল করা যায় ।   প্রধানত হস্তবিশারদরা হাতের রেখা দেখে ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকেন।

হস্তরেখাবিদ্যা প্রবর্তনের ইতিহাস | History of Palmistry

ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্রের জনপ্রিয়তা সারা বিশ্বজুড়ে। মানুষের করতল এবং তার ভেতরের রেখাসমূহ বিশ্লেষণ করে তার ভূত, ভবিষ্যৎ বর্তমান বেশ সহজেই আন্দাজ করা যেতে পারে । বহু হাজার বছরেরও পূর্বকাল থেকে ভারতে এই জ্যোতিষ বিদ্যা ও সামুদ্রিক বিদ্যার চলন হয়ে  আসছে । হস্তরেখাবিদ্যা  হাত ও হাতের রেখা বিশ্লেষণ করে  কারও মানসিক অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের ভালো -মন্দ, শুভাশুভ নির্ধারণ করার বিদ্যা বিশেষ। প্রাচীন ব্যাবিলন ও চালদিয়া অঞ্চলে এ বিদ্যার সূত্রপাত হয়েছিল  বলে মনে করা হয় এবং সেখান থেকে তা সমগ্র পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করে।তারপর থেকে কালক্রমে যত দিন যেতে থাকে, ততধিক এই বিদ্যা সারা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ।

এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এই যে , প্রাতঃস্মরণীয় জ্যোতিষী বরাহমিহিরেরও আগে এই শাস্ত্রের প্রচলন ঘটেছিল বলে অনুমান করা হয় । তারপর বিভিন্ন মনীষী এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বহু গ্রন্থ ও রচনা করেছিলেন । অতএব ইতিহাস বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে , সারা পৃথিবীর মধ্য জ্যোতিষচর্চ্চা , সামুদ্রিক বিচার অর্থাৎ হস্তরেখা বিচার প্রভৃতি সর্বপ্রথম শুরু হয় ভারতবর্ষে । কালক্রমে ভারত থেকে আরব-বণিকদের মাধ্যমে এই বিদ্যা আরবে ছড়িয়ে পড়ে । এর পরে তা   মিশরে পৌঁছায় এবং অনেক উন্নত আকার ধারণ করে । পর্যায়ক্রমে  মিশর থেকে গ্রীস, রোম এবং অন্যান্য দেশ গুলিতে এই শাস্ত্র ছড়িয়ে পড়ে । কথিত আছে যে বিখ্যাত দার্শনিক অ্যারিস্টটল আড়াই হাজার বছর আগে তাঁর গ্রন্থ, হিস্টোরিয়া অ্যানিমালিয়ামে(প্রাণীর ইতিহাস) হস্তরেখার বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছিলেন।অ্যারিস্টটল মনে করতেন যে কোনো কারণ ছাড়া মানুষে হস্তে   রেখাগুলি থাকতে পারে না। ঊনবিংশ শতাব্দীতে হস্তরেখাবিজ্ঞানের পুনরুত্থান লক্ষ্য করা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য রাজ্যে এই বিদ্যা প্রচার এবং প্রসারের জন্য বিভিন্ন রকম জৈবিক সমিতির ( chronological society) উদ্ভাবন ঘটেছিল।  ১৯০০ শতকের মাঝামাঝি হস্তরেখাবিদ্যা আমেরিকান পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সাথে পুরোপুরিভাবে সমন্বিত হয়ে গেছিল।

হস্তরেখা বিশ্লেষণের সঠিক উপায় | The right way to analyze palmistry

বলা হয় যে মানুষের হাতের সাথে আয়নার সাদৃশ্য পাওয়া যায় যেখানে প্রকৃত আপেক্ষিক দৃশ্যের মধ্যে জীবনের সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা যায়।  কিছু ক্ষেত্র বিশেষে নিয়মের ব্যতিক্রম অবশ্যই  ঘটে, কিন্তু মূল নীতির ব্যতিক্রম হয়না। এটি একটি বাস্তবসম্মত সত্য  যে প্রতিটি জীবন একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যে চলছে এবং  মানুষের মধ্যেই এই বৈশিষ্ট্যগত প্রভেদ সবথেকে বেশি লক্ষণীয় ; আর এই বিভিন্ন ধরনের  বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ণয় করা যায় প্রত্যেকের হস্তরেখা বিশ্লেষণ করেই । অতএব এককথায়, হস্তরেখাবিদ্যা এমনই এক অনন্য বিদ্যা যার সাথে অন্য কোনো বিদ্যার তুলনা চলে না।যাঁদের এ ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান নেই তারা হস্তরেখা বিশ্লেষণের বিদ্যাকে  অনেক সময়ে অস্বীকার করে থাকেন।  

সঠিকভাবে হস্তরেখা   বিশ্লেষণ করতে হলে দুই হাতের ছাপ সহ উপরিউক্ত অন্যান্য তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করতে হবে ও সাথে সাথে দ্রাঘিমাংশ-অক্ষাংশ, মনোজগত-বস্তুজগত, অবচেতন মন-সচেতন মন ইত্যাদি ছক অঙ্কন করতে হবে ও তার সঙ্গে  অন্যান্য ফলাফলের সমন্বয় ঘটাতে পারলেই একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হওয়া সম্ভব। বিখ্যাত হস্তরেখাবিদদের মতে যেকোনো জায়গায় কিংবা যেকোনো সময়ে হাত দেখে কখনোই কারও সম্পর্কে সম্পূর্ণ কিছু বলা যেতে পারে না। সাধারণ মানুষ তাদের অজ্ঞানতার কারণে  তাই বিভিন্নভাবে প্রতারিত হয়ে থাকে কিছু অসাধু হস্তরেখাবিদদের কাছে হাত দেখিয়ে।  

হস্তরেখার বিশ্লেষণের খুঁটিনাটি | The nuances of palmistry analysis

হস্তরেখা বিজ্ঞানকে অনেকে সামুদ্রিক শাস্ত্র হিসেবেও আখ্যা দিয়ে থাকে। তবে এই কথাটি সত্যিই যে, হাতের রেখা সমূহ এককভাবে কোন সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করতে পারে না। একটি সমন্বিত পদ্ধতি অনুসরণ করে ফলাফল বর্ণনা করা হয়ে থাকে।একটি একক রেখার গঠন সম্পূর্ণতার দিক দিয়ে বিবেচিত হয় না ;এটি হস্তরেখা সমূহের  অংশবিশেষমাত্র। হাতের গড়ন তার নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্বের প্রতীকস্বরূপ। অতএব  সঠিক পদ্ধতিতে   হাতের রেখা বিশ্লেষণ করতে হলে – হাতের শ্রেণী ও তার বৈশিষ্ট্য, গ্রহের হাতের ত্বক  এবং চামড়ার গঠন, হাতের রোমকূপ, হাতের ধরন (বৃহৎ/ক্ষুদ্র, স্বাভাবিক/অস্বাভাবিক), হাতের উষ্ণতা , করতলের ত্বক বা চামড়ার গঠন ও তার বৈশিষ্ট্য, করতলের রং  ও করপৃষ্ঠের লোম, করতলের বিশেষ চিহ্নের উপস্থিতি, করতলের উপর অঙ্কিত প্যাটার্ন সমূহ, করতলের শুভ ও অশুভ ক্ষেত্র, অাঙ্গুলের গঠন, বৈশিষ্ট্য এবং পর্ব সমূহ, প্রধানত  বৃদ্ধাঙ্গুলির গঠন, বৈশিষ্ট্য ও তার পর্ব সমূহ,, অঙ্গুলির অগ্রভাগে উপস্থিত রেখা সমূহ, নখের শ্রেণী, বর্ণ, চন্দ্রমা, চিহ্ন, মনিবন্ধ, বাহু, পুরুষ নারী ভেদে  রেখার অর্থগত পার্থক্য ,হাতের শ্রেণী এবং রেখার বৈশিষ্ট্যগত অর্থ ইত্যাদি বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করতে হয়। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার করার পর  ফলাফল বর্ণিত হলে তবেই একটি পরিপূর্ণ সূক্ষ্ম সম্ভাবনাময় চিত্র অঙ্কন করা সম্ভবপর হয়।

হস্তের মুখ্য রেখাসমূহ | Key lines of the hand

এই পদ্ধতিতে হাতের সমস্ত রেখা সামগ্রিকভাবে ও সূক্ষ্মতার সঙ্গে অধ্যয়ন করা হয়। কিছু মুখ্য রেখা নিম্নে বর্ণিত হল;

হস্তরেখার জীবন রেখা | Life line of palmistry

হস্তরেখা বিজ্ঞান  অনুযায়ী অথবা  সামুদ্রিক শাস্ত্র অনুসারে  জীবন রেখাকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ  একটি রেখা হিসাবে ধার্য করা হয়ে থাকে । এই রেখার দ্বারাই ব্যক্তির আয়ু, সঙ্কট, দুর্ঘটনা, মৃত্যু সম্পর্কে নানাবিধ তথ্যাবলি জানা যায়। বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ এবং তর্জনির মধ্যভাগ থেকে বের হয়ে হাতের নীচের অংশ অর্থাত্‍‌ মণিবন্ধ পর্যন্ত বিস্তৃত এটি জীবন দেখা বা আয়ুরেখা । সুস্থ রেখা ভালো জীবনের ইঙ্গিত বহন করে।খর্ব, ভাঙা, কাটা, অসম্পূর্ণ বা দ্বীপ আছে এমন রেখা উপস্থিত থাকলে ব্যক্তির জীবন সম্পর্কে অশুভ সংকেত বহন করে।জাতকের হাতে যদি দু’টি জীবনরেখা থাকে তবে তাঁরা দীর্ঘায়ু হন।

মস্তিষ্ক রেখা | Brain line of palmistry

জীবন রেখার সাথে মস্তিষ্ক রেখাও নির্ধারণ করা যায়। এটি কখনও সোজা বা কখনও নীচের দিকে ঝুঁকে  যায় আবার  কখনও কখনও এই রেখা জীবন রেখার সঙ্গে না বের হয়ে কিছুটা ওপরের দিক থেকে  ও বের হয়। এই রেখাটির সাহায্যে মানসিক ক্ষমতা, বুদ্ধি, যোগ্যতা, মানসিক স্তর, বৈচারিক ক্ষমতা ইত্যাদি নির্ণয় করা সম্ভবপর   হয়। এই রেখা বিচার করার পর  যত বেশি নির্দোষ হয়, তত শ্রেষ্ঠ মনে করা হয়। অসম্পূর্ণ রেখা কম মানসিক ক্ষমতার ইঙ্গিত প্রদান করে  । নীচের দিকে ঝুঁকে থাকা রেখা ব্যক্তির কলা, সঙ্গীত এবং সাহিত্যের প্রতি রুচির ইঙ্গিত বাহক।

হৃদয় রেখা | Heart line of palmistry

কনিষ্ঠার নিম্নভাগ থেকে শুরু হয়ে তর্জনির দিকে এই রেখাটি অগ্রসর হয়।  আন্তরিক ক্ষমতা, সংবেদনশীলতা, গুণ, অবগুণ ইত্যাদির ইঙ্গিত দেয় এই হৃদয় রেখাটি । নীচে ঝুঁকে থাকা রেখা ব্যক্তিকে অন্তর্মুখী, সাহিত্য-সঙ্গীত প্রিয় বা কলা রসিক হিসেবে চিহ্নিত করে। আবার ওপরের দিকে এই রেখাটি প্রসারিত হলে  তা ব্যক্তির বহির্মুীতা, যান্ত্রিক বিদ্যাই মস্তিষ্কের সাহায্যে কাজ করার সক্ষমতার ইঙ্গিত বাহক।

ভাগ্য রেখা | The line of destiny

মণিবন্ধ অর্থাত্‍‌ হাতের নিম্নভাগ থেকে বের হয়ে যে রেখা মধ্যমার কাছে যায়, সেটি কেই ভাগ্য রেখা বলে।  ভাগ্য রেখা স্পষ্ট হলে সেই ব্যক্তিকে ভাগ্যশালী মনে করা হয়।আবার ভাগ্য রেখাটি হাতের নীচ থেকে বের হলে তা পারিবারিক   সহযোগিতায়  ভাগ্যোদয়ের ইঙ্গিত দেয়।

বিবাহ রেখা | Marriage line of palmistry

কনিষ্ঠ আঙুলের নীচের দিকে আড়াআড়ি ভাবে অবস্থান করে বিবাহ রেখা। বিবাহ রেখা  যদি ছোট হয় এবং তা থাকে কনিষ্ঠ আঙুল ঘেঁষে তবে জাতকের বিবাহযোগ আসতে দেরি হতে পারে।কিন্তু এই রেখা যদি ছোট অর থাকে উল্টো দিকে তাহলে ২০ বছরে বয়সেই বিবাহ সংঘটিত হতে পারে। বিবাহ রেখাটি যদি সোজা হয় এবং অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে তা বিবাহিত জীবনে সুখী হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু রেখাটি যদি মাঝে পথে ভেঙে ভেঙে যায় তবে সেই সম্পর্ক সমস্যার মধ্যে দিয়ে গেলেও তবে শেষ জীবনে সুখী হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

আরও বিভিন্ন সূক্ষ্ম রেখার সমূহ | More different fine lines of palmistry

সূর্যের রেখা | The sun line of palmistry

অনামিকার নীচে অবস্থিত  ও ভাগ্যরেখার সমান্তরালে থাকা এই রেখাটি খ্যাতি বা বদনাম নির্দেশিত করে।

ভেনাসের কব্জি | Girdle of Venus 

কনিষ্ঠা ও মধ্যমার মধ্যবর্তী থেকে শুরু হয় এই রেখাটি যা শেষ হয় মধ্যমা এবং তর্জনীর মধ্যে। আঙ্গুলের মধ্যে শেষ হওয়ার জন্য রিং এবং মধ্য আঙ্গুলের নীচে রুক্ষ চাপরে চলে;  সংবেদনশীল বুদ্ধিমত্তা এবং কারচুপি করার প্রবণতা এই রেখাটির দ্বারা নির্দেশিত হয়ে থাকে।

ইউনিয়ন লাইন | Union line in palmistry

হৃদয় রেখা এবং কনিষ্ঠার নীচে অবস্থিত এই রেখাটি  রোমান্টিকতা এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নির্দেশিত  করে বলে বিশ্বাস করে।

বুধ রেখা | Mercury line in the palm of the hand

এই রেখাটি হাতের কব্জির নিকট থেকে তালুর নীচ থেকে সম্প্রসারিত হয়ে থাকে কনিষ্ঠার দিকে। অবিচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা, ব্যবসায়িক  বুদ্ধি বা যোগাযোগের দক্ষতার সূচক এই রেখাটি।

অন্যান্য চিহ্নগুলি | Other signs of palmistry

হাতের অন্যান্য চিহ্নগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্টার, ক্রস, ত্রিভুজ, স্কোয়ার, ট্রাইডার এবং প্রতিটি আঙুলের নীচে রিং অন্তর্ভুক্ত রয়েছে;  তাদের অনুমিত প্রভাব এবং তালুতে তার অবস্থান অনুযায়ী রেখাগুলি পরিবর্তিত হয় এবং  প্রভাব বিস্তার করে।

অঙ্গুলির বিশ্লেষণ | Finger analysis

জ্যোতিষ শাস্ত্রে আঙ্গুলের মাঝের ফাঁক দেখেই সেই ব্যক্তির সম্বন্ধে ধারনা করা সম্ভব। কনিষ্ঠা তে থাকে বুধের প্রভাব,অনামিকা বা রিং ফিঙ্গারে থাকে সূর্যের প্রভাব, মধ্যমায় শনির প্রভাব এবং  তর্জনীতে থাকে গুরুর প্রভাব।

কোনও ব্যক্তির আঙ্গুলে অনামিকা ও কনিষ্ঠার   মধ্যে যদি বেশি দূরত্ব থাকে তবে তা শুভ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে,কম দূরত্ব হলে সেই ব্যক্তি নিষ্ঠুর এবং বেশিরভাগ সময় ঝুট-ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে থাকেন।কোনও ব্যক্তির মধ্যমা ও অনামিকার মধ্যে বেশি ব্যবধান  থাকলে সেই ব্যক্তি বেপরোয়া ও অসভ্য স্বভাবের হয়ে থাকেন।

কোনও ব্যক্তির তর্জনী ও মধ্যমার মধ্যে  দূরত্ব অধিক হলে সেই ব্যক্তি স্বার্থপর হন আর  কম ব্যবধান থাকলে সেই ব্যক্তি নিজের কথা খুব সহজেই বলে ফেলেন কোনও চিন্তা ভাবনা না করে এবং  সেই ব্যক্তি অন্তর্মুখী হয়ে থাকেন।

উপসংহার | Conclusion of palmistry

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা হস্তরেখা সম্পর্কে কিছু  সহজ সরল  বিশ্লেষণ পেলাম। তা থেকে আপাত একটা ধারণা পাওয়া গেলেও সম্পূর্ণ সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ  ধারণা পেতে হলে  বিভিন্ন ধারার জ্যোতিষ বিচার করার প্রয়োজনীয়তা আছে।কঠিন এই বিশ্লেষণের মধ্যে নিহিত আছে গাণিতিক বিচার, হস্তরেখা বিচার ছাড়াও কিছু গ্রহের অবস্থান ও দশাগত বিশ্লেষণ। তবে কেবলমাত্র  সমস্যাকে নির্ণয় করাই জ্যোতিষীর একমাত্র কাজ নয়। সেই সমস্যাকে সমাধানের দিকে নিয়ে যেতে পারলেই  হবে জ্যোতিষ বিজ্ঞানের প্রকৃত সাফল্য।