আবহাওয়া

Cyclone Remal Update | সাগরে তৈরী হচ্ছে নিম্নচাপ! শনিবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে 'রেমাল'!

Cyclone Remal Update | সাগরে তৈরী হচ্ছে নিম্নচাপ! শনিবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে 'রেমাল'!
Key Highlights

বঙ্গোপসাগরে তৈরী হচ্ছে নিম্নচাপ। জানা গিয়েছে, সেটি ২৬ তারিখ বিকেলে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের পৌঁছতে পারে 'প্রবল ঘূর্ণিঝড়' রূপে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বঙ্গে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর আগেই জানিয়েছিল, মে মাসের শেষে পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone in West Bengal) আছড়ে পড়বে। সেই পূর্বাভাস মতোই বঙ্গোপসাগরে তৈরী হচ্ছে নিম্নচাপ। জানা গিয়েছে, সেটি ২৬ তারিখ বিকেলে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের পৌঁছতে পারে 'প্রবল ঘূর্ণিঝড়' রূপে। ইতিমধ্যে বুধবার উত্তর তামিলনাডু ও দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ লাগোয়া এলাকাতে সমুদ্রতল থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার উপরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে এবং তা বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছিল বলে খবর। 

রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট :

ভারতীয় মৌসম ভবনের সাম্প্রতিক বুলেটিনে জানানো হয়েছে, বুধবার দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে যে নিম্নচাপ ছিল, তা উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার তা সকাল ৮ টা ৩০ মিনিট নাগাদ পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের উপরে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। রেমাল ঘূর্ণিঝড় (Remal Cyclone) এর আপডেট দিয়ে জানানো হয়েছে, সুস্পষ্ট নিম্নচাপ আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাবে এবং শুক্রবার সকালের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের মধ্যভাগে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। তারপর আরও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যেতে থাকবে সেটি। এরপর শনিবার সকালের মধ্যে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আর তখনই এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে রেমাল ঘূর্ণিঝড় (Remal Cyclone)। উল্লেখ্য, আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগর, অর্থাৎ উত্তর ভারত মহাসাগরে তৈরি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের জন্য একটি তালিকা প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত নেয় আন্তর্জাতিক আবহাওয়া দফতর। ২০২০ সালে মৌসম ভবনের তরফে ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা দেওয়া হয়। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, তা হলে তালিকা অনুযায়ী সেই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘রেমাল’। এই নামটি ওমানের দেওয়া। আরবি এই শব্দের অর্থ ‘বালি’।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড় কি পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করবে? নাকি চলে যাবে বাংলাদেশে? এই প্রসঙ্গে মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার সকালের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পরে সেটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। তারপর রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বাংলাদেশ এবং সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছে পৌঁছাবে।  রবিবার যখন প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বাংলাদেশ এবং সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছে পৌঁছাবে রেমাল তখন ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে তাণ্ডব চালাতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। সঙ্গে হবে ভারী বৃষ্টি। তবে পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone in West Bengal) ল্যান্ডফল করবে কি না,সেই ঘূর্ণিঝড়ের ঠিক কোথায় ল্যান্ডফল হবে, কোথায় আছড়ে পড়বে, সে বিষয়ে আপতত মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়নি। 

পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া :

 ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) অনুযায়ী, শনিবার থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে। সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ মেদিনীপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি জায়গায় ৭০ মিলিমিটার থেকে ১১০ মিলিমিটার ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ওই তিনটি জেলায় ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝড় উঠবে। বাকি জেলাগুলিতে ঝড়ের বেগ থাকবে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি। সব জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে সব জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)। 

 পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal Weather) মূলত বদল হবে শুক্রবার থেকে। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই রয়েছে বর্ষণের সম্ভাবনা। তবে শুক্রবার দুই ২৪ পরগনা ও দুই মেদিনীপুরেই হবে বর্ষণ। শুক্রবার থেকে বৃষ্টির দাপট বাড়বে। শনিবার প্রায় দক্ষিণের সব জেলাতেই হবে বর্ষণ। শনিবার ও রবিবার তিনটি জেলায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বর্ষণ হতে পারে।  রবিবার ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে প্রতি ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে। যার রেশ থাকবে সোমবারেও। সোমবারে ঝোড়ো হাওয়ার বেগ কমলেও, ওই দিনও বৃষ্টিতে ভিজতে পারে সারা দক্ষিণবঙ্গ। তবে উত্তরবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাব থাকবে না বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)।

ঘূর্ণিঝড়ের এরকম পরিস্থিতিতে আগেভাগেই মৎস্যজীবীদের সাবধান করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। যাঁরা সমুদ্রে গিয়েছেন, তাঁদের বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ফিরে আসতে বলা হয়েছে। এছাড়া মধ্য এবং দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে বৃহস্পতিবার থেকে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে শুক্রবার থেকে মৎস্যজীবীদের যেতে বারণ করা হয়েছে। আগামী সোমবার পর্যন্ত জারি থাকবে এই নিষেধাজ্ঞা। পাশাপাশি ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আগেভাগেই পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতর।