Christmas | বড়দিনের বোলপুরে যীশু-পূজা হতো সাড়ম্বরে! রবি-কবির শান্তিনিকেতনে কীভাবে পালন হতো খ্রীষ্টমাস?

আজ থেকে একশো আট বছর আগে, ১৯১০ সালের পৌষ উৎসবে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ প্রথম খ্রিস্ট উৎসবের উপাসনা চালু করেন। অবশ্য এই উৎসবের বীজ বপন হয়েছিল আগেই। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে জানুয়ারি দেবেন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরেই শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার দায়িত্ব বর্তায় কবি রবীন্দ্রনাথের ওপর। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতনের এক সন্ধ্যাকালীন উপাসনার ভাষণে ( ‘ভক্ত’ শীর্ষক ) আমরা শুনতে পাই কবি বলছেন, "মানুষের ধর্মরাজ্যে যে তিনজন মহাপুরুষ সর্বোচ্চ চূড়ায় অধিরোহন করছেন যিশু তাঁদের অন্যতম।" একবছর পরেই মেলার অনুষ্ঠানসূচীতে আমরা দেখতে পাচ্ছি "খ্রীষ্টৎসব" সম্পর্কিত এনট্রি!
আজ থেকে একশো আট বছর আগে, ১৯১০ সালের পৌষ উৎসবে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ প্রথম খ্রিস্ট উৎসবের উপাসনা চালু করেন। অবশ্য এই উৎসবের বীজ বপন হয়েছিল আগেই। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে জানুয়ারি দেবেন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরেই শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার দায়িত্ব বর্তায় কবি রবীন্দ্রনাথের ওপর। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতনের এক সন্ধ্যাকালীন উপাসনার ভাষণে ( ‘ভক্ত’ শীর্ষক ) আমরা শুনতে পাই কবি বলছেন, "মানুষের ধর্মরাজ্যে যে তিনজন মহাপুরুষ সর্বোচ্চ চূড়ায় অধিরোহন করছেন যিশু তাঁদের অন্যতম।" একবছর পরেই মেলার অনুষ্ঠানসূচীতে আমরা দেখতে পাচ্ছি "খ্রীষ্টৎসব" সম্পর্কিত এনট্রি!
শান্তিনিকেতনে খ্রীষ্টমাস: রবীন্দ্রনাথের হাত ধরেই শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহে বড়োদিন পালনের রীতি শুরু হয়েছিল। তিনদিনব্যাপী পৌষ উৎসবের শেষ দিনে যীশুর জন্মদিন পালন করতেন আশ্রমিকরা। বড়দিন উপলক্ষ্যে উপাসনা গৃহটিকে মোমবাতি, প্রদীপ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হতো। উপনিষদের মন্ত্র উচ্চারণ ও রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হতো বড়দিনের উৎসব। সমবেতভাবে‘একদিন যারা মেরেছিল তারে গিয়ে’ গাওয়া হতো। পাঠ করা হতো কবিগুরুর লেখা। রীতি মেনে বাইবেলের অংশবিশেষও পড়ে শোনানো হতো এদিন। এই রীতি এখনও চলে আসছে।
বাইবেলের "নিউ টেস্টামেন্ট " অংশটি রবীন্দ্ৰনাথের বিশেষ পছন্দের ছিল। এই অংশে দেবতা যীশুকে আরও বেশি মানব যীশু বোধ হতো তাঁর। সে দয়ালু, কল্যাণের দূত, সেবা পরায়ণ। বিদেশে গিয়েও যীশুর জন্মদিন পালন করতে ভোলেননি লেখক রবীন্দ্রনাথ। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের বড়োদিনে আমেরিকার ইলিনয় থেকে হেমলতা দেবীকে চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ লিখছেন, ‘‘আজ খৃস্টমাস। এইমাত্র ভোরের বেলা আমরা আমাদের খৃস্টোৎসব সমাধা করে উঠেছি। রথী, বৌমা শিকাগোতে গেছেন। কেবল বত্মিক, সোমেন্দ্র এবং আমি এখানে আছি। আমরা তিনজনে আমাদের শোবার ঘরে একটি কোণে আমাদের উৎসব করলুম। কিছু অভাব বোধ হল না। উৎসবের যিনি দেবতা তিনি যদি আসন গ্রহণ করেন তাহলে কোনও আয়োজনের ত্রুটি চোখে পরেই না। তাঁকে আজ আমরা প্রণাম করেছি, তাঁর আশীর্বাদ আমরা গ্রহণ করেছি।’’
শান্তিনিকেতনে ধর্মীয় গোড়ামির দরজা ভেঙে ফেলতে চেষ্টা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সাম্প্রদায়িকতার বন্ধন ঘুচিয়ে মুক্ত চিন্তাভাবনার অক্সিজেন উপহার দিতে চেয়েছিলেন আশ্রমিক ছাত্রদের। সে কাজে তিনি সফল হয়েছেন কিনা তার প্রমান জ্বলজ্বল করছে আজকের শান্তিনিকেতনে। আমরা শুধু মুক্ত কণ্ঠে বলতে পারি, "মেরি খ্রীস্টমাস প্রভু যীশু, মেরি খ্রীস্টমাস।"
- Related topics -
- পুজো ও উৎসব
- বড়দিন
- ক্রিসমাস
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- শান্তিনিকেতন
- বোলপুর
- অন্যান্য
