অন্যান্য

Poila Baisakh | মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে খাজনা আদায়ের পর উৎসব থেকেই সূচনা বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা! জানুন নববর্ষের ইতিকথা!

Poila Baisakh | মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে খাজনা আদায়ের পর উৎসব থেকেই সূচনা বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা! জানুন নববর্ষের ইতিকথা!
Key Highlights

মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে বাংলা সন গণনা শুরু হওয়ার পর খাজনা আদায়ের পর পালিত উৎসব থেকেই বাঙালিদের বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

পুরোনোকে পেছনে রেখে নতুনকে স্বাগত জানানোর দিন পয়লা বৈশাখ (poila baisakh)। নববর্ষ (noboborsho) উৎসবে মেতে ওঠে বাঙালি। নতুন জামা , হালখাতা, ভালোমন্দ খাওয়া দাওয়া সঙ্গে মিষ্টি মুখ করে শুভ নববর্ষ (subho noboborsho) এর শুভেচ্ছা জানানো যেন রীতি হয়ে উঠেছে বাঙালির কাছে। তবে কেবল বাঙালি বা বাঙলাতেই নয়, নববর্ষ (nababarsha) উৎসব পালন করা গোটা দেশ জুড়ে। ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন নামে এই উৎসব পালিত হয়। তবে বাংলা নববর্ষ কী করে এলো তা অনেকেরই অজানা। 


বাংলা নববর্ষের ইতিহাস :
ইতিহাসবিদরা বলছেন, সবসময়ই এই রূপে নববর্ষ (noboborsho) বা বর্ষবরণ করা হতো না। বরং কাল পরিবর্তনের সাথে সাথে বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতায় নানা পরিবর্তন এসেছে। তারা বলছেন, মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে বাংলা সন গণনা শুরু হওয়ার পর খাজনা আদায়ের পর যে উৎসব থেকে বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছিল তা সময়ের সাথে সাথে বিবর্তিত হয়ে বর্তমান রূপ লাভ করেছে। এই ধারাবাহিকতায় কখনো আগের বিভিন্ন নিয়ম বাদ দেয়া হয়েছে, আবার কখনো নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে এই উৎসবের সাথে। 


 সৌরপঞ্জি মতে, বাংলায় ১২টি মাস অনেক আগে থেকেই পালন হয়ে আসছে। কিন্তু গ্রেগরীয় পঞ্জিকায় দেখা যায়, এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় সৌর বছর গণনা শুরু হতো। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ভারতবর্ষে মোগল সাম্রাজ্য শুরুর পর থেকে আরবি বছর হিজরি পঞ্জিকা অনুযায়ী, তারা কৃষিপণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সাল চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় কৃষি ফলনের সঙ্গে এর কোনো মিল পাওয়া যেত না। আর তখনই সম্রাট আকবর এর সুষ্ঠু সমাধানের জন্য বাংলায় বর্ষপঞ্জি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সম্রাটের আদেশ অনুযায়ী সে সময়কার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ আমীর ফতেহউল্লাহ সিরাজী সৌরবছর ও আরবি হিজরি সালের ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম তৈরির কাজ শুরু করেন। বাংলা বছর নির্ধারণ নিয়ে লেখা বিভিন্ন বইয়ের প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ বা ১১ মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে পরীক্ষামূলক এ গণনা পদ্ধতিকে কার্যকর ধরা হয় ১৫৫৬ সালের ৫ নভেম্বর তারিখ থেকে অর্থাৎ সম্রাট আকবরের সিংহাসন আরোহণের তারিখ থেকে। প্রথমে ফসলি সন বলা হলেও পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিতি পেতে শুরু করে।


তথ্য বলছে, আকবরের তৈরি তারিখ এ ইলাহি ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তৈরি হয়েছিল। সেখানে প্রথমে মাসের নাম আর্বাদিন, কার্দিন, বিসুয়া এমন ছিল। পরে তা বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ এমন নামে পরিবর্তন হয়। বিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ এই বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস। আকবরের আমলে চৈত্র মাসের শেষ দিনে খাজনা, মাসুল , শুল্ক পরিশোধ করতে বাধ্য করা হত। পরের দিন পয়লা বৈশাখ জমিদাররা প্রজারের বিতরণ করতেন মিষ্টি, প্রজাদের করা হত আপ্যায়ন। জমিদারদের সেই প্রথাই এখনও চলে আসছে পয়লা বৈশাখ (poila baisakh) এর দিন মিষ্টিমুখ করার হাত ধরে। অন্যদিকে, ইতিহাসবিদরা বলছেন, বাংলায় শশাঙ্কের আমলে এসেছে বঙ্গাব্দ। ৫৯৩ খ্রীষ্টাব্দে কর্ণসুবর্ণের সিংহাসনে শশাঙ্ক অধিষ্ঠীত হন। সেই রাজ্যাভিষেকের বছর থেকে গণনা করা হয় বঙ্গাব্দ।

বাংলা মাসের নামকরণ : 
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলা মাসের নামগুলো বিভিন্ন তারকারাজির নাম থেকে নেওয়া হয়েছে। যেমন, বিশাখা থেকে বৈশাখ, জেষ্ঠ্যা থেকে জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়া থেকে আষাঢ়, শ্রবণা থেকে শ্রাবণ, ভাদ্রপদ থেকে ভাদ্র, কৃত্তিকা থেকে কার্তিক, অগ্রইহনী থেকে অগ্রহায়ণ, পূষ্যা থেকে পৌষ, মঘা থেকে মাঘ, ফল্গুনি থেকে ফাল্গুন এবং চিত্রা থেকে চৈত্র। আগেকার দিনে অগ্রহায়ণ মাসে ধান কাটা শুরু হতো বলে এ মাসকে বছরের প্রথম মাস ধরা হতো। তাই এ মাসের নামই রাখা হয় অগ্রহায়ণ। অগ্র অর্থ প্রথম আর হায়ণ অর্থ বর্ষ বা ধান। সম্রাট আকবরের সময়ে একটি বিষয় ছিল অত্যন্ত কষ্টসাধ্য, তা হলো মাসের প্রতিটি দিনের জন্য আলাদা আলাদা নাম ছিল যা কি না প্রজাসাধারণের মনে রাখা খুবই কষ্ট হতো। তাই সম্রাট শাহজাহান সাত দিনে সপ্তাহ ভিত্তিক বাংলায় দিনের নামকরণের কাজ শুরু করেন। ইংরেজি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় ইংরেজি সাত দিনের নামের কিছুটা আদলে বাংলায় সাত দিনের নামকরণ করা হয়। যেমন সানডে- রবিবার। সান অর্থ রবি বা সূর্য আর ডে অর্থ দিন। এভাবে বর্ষ গণনার রীতিকে বাংলায় প্রবর্তনের সংস্কার শুরু হয় মোগল আমলে।


পয়লা বৈশাখের হালখাতার রীতি: 
নববর্ষ (nababarsha) এর দিন অর্থাৎ বাঙালির পয়লা বৈশাখের হালখাতা নিয়েও রীতি রয়েছে। এই দিনে ভোরে উঠে স্নান সেরেই লক্ষ্মী গণেশের পুজোর রীতি রয়েছে। বিকেলে হালখাতার উৎসব পালিত হয়। হালখাতার প্রচলনও আকবরের আমলে। যেখানে আর্থিক বছরের হিসাব, শুল্ক, খাজনার তথ্য রাখা হত। আগে নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। এটি পুরোটাই অর্থনৈতিক এবং গ্রামে-গঞ্জে ব্যবসায়ীরা নতুন বছরের শুরুর দিনে তাদের পুরনো হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করে হিসাবের নতুন খাতা খুলতেন। এ উপলক্ষ্যে তারা তাদের নতুন-পুরনো খদ্দেরদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টি মুখ করাতেন। এই আমন্ত্রণ গ্রহন করতে এসে অনেক খদ্দের তাদের পুরনো দেনার পুরোটা বা কিছু অংশ শোধ করে নতুন খাতায় হিসাব হালনাগাদ করতেন।


 একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বদলায়নি বাঙালির অভ্যাস, আচার-অনুষ্ঠান। প্রত্যেক বাঙালির কাছে ভীষণই স্পেশাল একটি দিন বাংলা শুভ নববর্ষ (subho noboborsho) পয়লা বৈশাখ বা পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ। বাঙালি আমজনতার এই দিনটির মাহাত্ম্য শুধু উৎসব বা আনন্দ হিসাবে দেখা হয় না, জড়িয়ে রয়েছে অনেক ইতিহাস এবং সংস্কৃতি।


Yoga 30 Days Challenge | 'সামার বডি' পেতে সকলেই করছেন যোগার ৩০দিনের চ্যালেঞ্জ! জানুন মেদ ঝরিয়ে শরীর সুঠাম করবেন কী করে!
Cyclone Remal | মে-মাসের শেষে বঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্ক! আমফান-আয়লার থেকেও কি বেশি তান্ডব চালাবে সাইক্লোন রেমাল?
Mother’s Day | যত্ন নিন মায়ের স্বাস্থ্যের! জানুন মায়েদের জন্য রয়েছে কী কী স্বাস্থ্যবিমা এবং ৫০ পেরোলেই করাবেন কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষা!
IPL 2024 | বৃষ্টির জন্য ভেস্তে যেতে পারে ইডেনের মুম্বই-কলকাতার ম্যাচ! খেলা না হলে প্রথম দল হিসাবে প্লে-অফ পাকা করতে পারবে কেকেআর?
১০০ টি দারুন সব আজব ফ্যাক্ট | Unique & Interesting Facts in Bangla
মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য | চৈতন্যদেবের জীবনকাহিনী | Lifestory of Chaitanya Mahaprabhu in Bengali
২১ টি সেরা যোগাসন এবং তাদের উপকারিতা সঙ্গে ছবি ও ভিডিও | Best Yoga Poses With Photo & Videos in Bangla