Teesta Treaty | তিস্তা জলচুক্তি নিয়ে ভারতকে হুঁশিয়ারি বাংলাদেশের, কেন এই চুক্তি নিয়ে বিরোধিতা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ?
তিস্তা চুক্তি এবার ভারতকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলো বাংলাদেশ। তাদের আশা, ভারতের সঙ্গে আলোচনায় এই চুক্তি নিয়ে চলা দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হবে। যদি তারপরেও এই নিয়ে বিবাদ না মেটে তাহলে আন্তর্জাতিক স্তরে যাবে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, তিস্তা নদীর জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরেই বিবাদ চলছে। ২০১১ সালে মনমোহন সিংহ ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় এই চুক্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে তাতে সই হয়নি।
তিস্তা চুক্তি (Teesta Treaty) এবার ভারতকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলো বাংলাদেশ। তাদের আশা, ভারতের সঙ্গে আলোচনায় এই চুক্তি নিয়ে চলা দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হবে। যদি তারপরেও এই নিয়ে বিবাদ না মেটে তাহলে আন্তর্জাতিক স্তরে যাবে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, তিস্তা নদীর জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরেই বিবাদ চলছে। ২০১১ সালে মনমোহন সিংহ ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় এই চুক্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে তাতে সই হয়নি। কিন্তু কেন আপত্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? এই চুক্তি আসলে কী?
তিস্তা নদীর জলবণ্টন চুক্তি কী?
১৯৮৩ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি অস্থায়ী চুক্তি হয়। ২০১১ সালে আর একটি তিস্তা চুক্তির খসড়া তৈরি করে দুই দেশ। যেখানে শুখা মরসুমে ভারতের ৩৭.৫ শতাংশ এবং বাংলাদেশের ৪২.৫ শতাংশ জল পাওয়ার কথা হয়। তিস্তা নদী একটি বড় নদী যা সিকিম থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে। এটি কৃষি এবং পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এই চুক্তির জন্য বেশ আগ্রহী দুই দেশ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চুক্তির বিরোধিতা করেন।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে কেন বিতর্ক?
তিস্তা (Teesta) নদীর জলবণ্টন চুক্তির সই না হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা। যদিও এর পেছনে যুক্তি দিয়ে কারণও দেখিয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থহানির যুক্তি দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর বক্তব্য, উত্তরবঙ্গে ভারী বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। আর গরমকালে তা শুকিয়ে যায়। সেখানে তিস্তার জল বাংলাদেশকে দিলে উত্তরবঙ্গের মানুষ পানীয় জল পাবেন না বলে আশঙ্কা থাকছে। এরাজ্যেরও জলের প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কলকাতা বন্দর জলের অভাবে তার নাব্যতা কমে গিয়েছে। ফলে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে তিস্তা ও ফারাক্কা বাঁধ থেকে বাংলাদেশকে জল ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের খটগি হচ্ছে জেনেও এমনটা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যেহেতু ভারতের সংবিধান অনুযায়ী জলের উপর রাজ্যের অধিকার স্বীকৃত, তাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি উপেক্ষা করে তিস্তা চুক্তি রূপায়ণ কার্যত সম্ভব নয় কেন্দ্রের পক্ষে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের যুক্তি, তিস্তা অন্য দেশে থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত হওয়া নদীগুলির মধ্যে চতুর্থ সবচেয়ে বড় নদী। সেচ ও মৎস্য চাষে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিস্তার বাংলাদেশের ২৭৫০ কিমি এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। ফলে সঠিকভাবে জল না পেলে বাংলাদেশের ৫টি জেলার ১লক্ষ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শুখা মরশুমে জলের সমস্যা আরও বেড়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, জুন মাসে ভারত সফরে এসে এই চুক্তি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু এক মাস আগেই হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। ফলে এই চুক্তি নিয়ে নতুনভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশের নব গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি বাংলাদেশের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, তিস্তা নদীর জল বন্টন চুক্তি করার জন্য বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিতে চাইছে। দরকার হলে এই বিষয়টি আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাবেন। তিস্তা জলচুক্তি বন্ধুত্বপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা করেন তিনি। এই চুক্তি না হলে আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ বলেও জানান তিনি।