লাইফস্টাইল

Arthritis Reason and Type | জয়েন্টের সমস্যায় ভুক্তভুগী ছোটরাও, কেন কী প্রকার আর্থরাইটিসে জানুন!

Arthritis Reason and Type | জয়েন্টের সমস্যায় ভুক্তভুগী ছোটরাও, কেন কী প্রকার আর্থরাইটিসে জানুন!
Key Highlights

জয়েন্টের সমস্যায় ভুক্তভুগী প্রায় সকলেই। তবে কেবল বয়স্কদেরই নয় জয়েন্টের সমস্যা হতে পারে ছোটদেরও। যা পরিণত হতে পারে বড় বিপদে।

জয়েন্টের সমস্যা বা গাঁটের (Arthritis) সমস্যা ঘরে ঘরে। একটু বয়স বাড়তে না বাড়তেই শুরু অসহ্য এই ব্যথা। তবে কেবল বয়স্কদের ক্ষেত্রেই নয়, এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে ছোট্ট বাচ্চাদের মধ্যেও। ছোটবেলার থেকে জয়েন্টের সমস্যা দেখা দিলেই বিপদ।সময় মতো ব্যবস্থা না নিলেই সারা জীবনের জন্য হাটা চলায় হতে পারে বড় সমস্যা।

গাঁটের ব্যথার সমস্যা খুবই সাধারণ হলেও অতি ভয়ানক। আমরা প্রায়শই বয়স্কদের কাছে শুনি তারা জয়েন্টের ব্যথায় ভুগছেন। কিন্তু এই সমস্যার কথা কোনও ছোট শিশুর কাছ থেকে শুনলেই তা খেলতে গিয়ে চোট লাগার ব্যথা ভেবে বসি। এখান থেকেই শুরু বড় ভুলের। জয়েন্টের সমস্যা ছোটবেলার থেকেই হতে পারে। যার ঠিক মত চিকিৎসা না করলে সারাজীবনের মতো হাঁটতে, বসতে বা চলতে অসুবিধা থেকে যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, এরকমও ঘটনা দেখা গেছে যেখানে মাত্র ৪ বছরের শিশু সেপটিক আর্থরাইটিস (Septic arthritis) - এ আক্রান্ত (প্রাথমিক অবস্থায় গাঁট ফোলাকে সাইনোভাইটিস (Synovial) বলে, যা বিপদজনক পর্যায়ে গেলে ইনফেকটিভ বা সেপটিক আর্থরাইটিস নামে পরিচিত)। ওই শিশুর যখন জরুরি অস্ত্রোপচার চলছিল, তখন ডাক্তারদের চোখে ধরা পড়ে যে শিশুটির হিপ জয়েন্টে পুঁজ জমেছে। অপারেশনে পুঁজের সঙ্গে বেরিয়ে আসে তার জয়েন্টের হাড়। এই অপারেশনের পর হাড়ের জয়েন্টের ফোলাভাব কাটলেও হয়ে গেলো বড় বিপদ! শিশুটির সারাজীবনের মতো স্বাভাবিক ওঠা-বসা আর স্বাভাবিক থাকল না।

জয়েন্টের ব্যথা নানান বয়সে নানান কারণে হয়ে থাকে। আবার এই ব্যথার রয়েছে একাধিক রকমও। তাহলে কীভাবে বুঝবেন কোনটা জয়েন্টের সমস্যার কারণে ব্যথা আর কোনটা নয়? জয়েন্টের সমস্যা কেন, কীভাবে হচ্ছে তার বিস্তারিত রইলো আপনার জন্য।

লক্ষণ | Symptoms :

আট থেকে আশি সকলেই এই সমস্যায় ভুগতে পারেন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে কেমন আর্থরাইটিসের সমস্যা হয়েছে। শরীরের যে কোনও জয়েন্টে যেমন হাত, পা, কোমর, হাঁটু, কাঁধের জয়েন্ট বা গাঁট নানাবিধ কারণে ফুলতে পারে। কারও ক্ষেত্রে একটা জয়েন্ট আবার কারও ক্ষেত্রে একাধিক জয়েন্ট একসঙ্গে ফুলতে পারে। কারোর আবার দেখা যায় বিভিন্ন ঋতুভেদে জয়েন্ট ফুলছে। প্রধানত এই সমস্যা বর্ষাকালে বা শীতকালে বেশি হয়। যাদের শরীরিক দুর্বলতা বেশি, পুষ্টির অভাব বা ইমিউনিটি কম তাদের এই ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।

জয়েন্ট সমস্যার কারণ | Reasons For Joint। Pain:

ইউরিক অ্যাসিড থেকে ক্রিস্টাল আর্থরাইটিস | Cristal Arthritis:

ক্রিস্টাল আর্থরাইটিস বা ইউরিক অ্যাসিড থেকে হওয়া জয়েন্টের সমস্যা সাধারণত বয়স্কদের হয়। শরীরের জয়েন্টে ইউরিক অ্যাসিড বা ক্রিস্টাল জমে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই ক্ষেত্রে জয়েন্ট লাল হয়ে যাওয়া, জ্বর আসা ও ব্যথার মত লক্ষণ দেখা দেয়। এটা বয়স্কদের বেশি হওয়ার কারণ, মেটাবলিক ও নন-মেটাবলিক কারণে ইউরিক অ্যাসিডের বৃদ্ধি। সাধারণত কোনও রোগের কারণে বা ক্যানসারের জন্য শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। আবার নন মেটাবলিক কারণ যেমন অতিরিক্ত মাত্রায় মদ্যপান করলে, বেশি রেডমিট খেলে, কিছু ধরনের ডাল বেশি খেলে তা থেকে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্ভাবনা থাকে। যা ডেকে আনতে পারে এই প্রকার আর্থরাইটিস সমস্যা।

সংক্রমণজনিত কারণের জন্য সেপটিক আর্থরাইটিস | Septic Arthritis :

বিভিন্ন ব্যাকটিরিয়াল বা ভাইরাল ইনফেকশন যেমন জ্বর, সর্দি,কাশি থেকে সংক্রমণ থেকেও আর্থরাইটিসের সমস্যা হতে পারে। আবার কখনও হার্টের সমস্যা থেকে সংক্রমণ, পুষ্টির অভাবে বারবার সংক্রমণ বা সদ্যোজাতর আম্বিলিক্যাল কডের সংক্রমণের জন্যও শরীরের নানা জয়েন্টে ব্যথা বা ফোলার সমস্যা দেখা যেতে পারে। সাধারণত শিশুদের ক্ষেত্রেই এই সেপটিক আর্থরাইটিস বেশি হয়। সেক্ষেত্রে শিশুর ধুম জ্বর, হঠাৎ করে কোমরের বা হাঁটুর জয়েন্ট ফুলে যাওয়া, নড়াচড়া করতে অসুবিধা এবং অসহ্য ব্যথার লক্ষণ দেখা দেয়। এসকল লক্ষণ দেখলেই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। নাহলে বড় বয়সে হাঁটাচলায় বা কোমরের সমস্যা থেকে যাবে। ছোটদের ছাড়াও এই জয়েন্টের সমস্যা দেখা দেয় খুব বয়স্কদের ও ডায়াবেটিস রোগীদেরও। তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে এই জয়েন্টের সমস্যা দেখা যায়।

ক্যানসারের জন্য রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস | Rheumatoid Arthritis :

হঠাৎ করেই জ্বর ছাড়াই জয়েন্ট ফুলতে শুরু করলে ও খুব বেশি ব্যথা না করলে তা রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস হতে পারে। সাধারণত জয়েন্টের মধ্যে যে ঝিল্লি অর্থাৎ সাইনোভিয়াল মেমব্রেনে ক্যানসার হলে এই ধরনের আর্থরাইটিসের সমস্যা হতে পারে। মূলত ১৬-১৭ বছর বয়সিদের বা তার চেয়ে বেশি বয়সিদের এই সমস্যা হয়ে থাকে। হাঁটু, পায়ের আঙুলের গাঁটে বা অন্যান্য জয়েন্টে এই ধরনের ক্যানসার হয়ে থাকে। ক্যানসার হওয়ার ফলে এই ধরনের আর্থরাইটিস সমস্যায় ব্যথা হয়না। তবে ঠিক সময় চিকিৎসা না করলে এই সমস্যা আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।

আঘাত জনিত আর্থরাইটিস | Trauma Arthritis:

এই ধরনের আর্থরাইটিস সমস্যা হয় বিভিন্ন ট্রমা বা আঘাত থেকে। শরীরের নানা জয়েন্ট বা গাঁটে ব্যথা বা ফোলাভাব হল এই ধরনের জয়েন্ট সমস্যার লক্ষণ।

বয়সজনিত আর্থরাইটিস | Arthritis for Aging:

বয়স বাড়তেই শুরু হয় হাড়ের ক্ষতি। যে কারণে অস্টিওআর্থরাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত ৬০-৭০ ঊর্ধ্বদের এই ধরনের সমস্যা হয়। এই বয়সে হাঁটুর কার্টিলেজ নষ্ট হয়ে গিয়ে হাঁটুর স্বাভাবিক গতি-প্রকৃতি নষ্ট হয়ে যায় যার ফলে হাঁটুর জয়েন্টে ঘষা লেগে ফুলতে থাকে ও শুরু হয় ব্যথা।

বহু ক্ষেত্রেই জয়েন্টের সমস্যাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়না, যতক্ষণ না সেই ব্যথা বড়  সমস্যার কারণ হয়ে উঠছে। বয়স্ক কিংবা মাঝারি অথবা কম বয়সই হোক না কেন, এই ব্যথাকে হালকা ভাবে নিলেই ডেকে আনতে পারেন বিপদ।