আন্তর্জাতিক

Afforestation in UAE | কৃত্রিম উপায় ব্যবহার করে পাহাড়-মরুভূমিতে সবুজ বনায়নে শ্যামল হয়ে উঠছে মধ্যপ্রাচ্যের মরুদেশ আরব আমিরশাহি!

Afforestation in UAE | কৃত্রিম উপায় ব্যবহার করে পাহাড়-মরুভূমিতে সবুজ বনায়নে শ্যামল হয়ে উঠছে মধ্যপ্রাচ্যের মরুদেশ আরব আমিরশাহি!
Key Highlights

মানুষের কর্মকাণ্ড বদলে ফেলছে বিশ্ব-প্রকৃতিকে। যেখানে বিশ্বের বাড়তে থাকা তাপমাত্রা নিয়ে হা-হতাশ করছে বেশিরভাগ দেশ, সেখানে কৃত্রিম বনায়নের সাহায্য নিয়ে প্রাণহীন মরুভূমিকে সবুজ করে তুলছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরশাহি।

সংকটে বিশ্বের পরিবেশ, জলবায়ু। ক্রমশ বাড়ছে তাপমাত্রার পারদ। কমছে সবুজের সংখ্যা। বর্তমানে যে গোটা পৃথিবীর প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে তা বলা ভুল হবে না। বদলাতে থাকা পরিবেশ নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে পরিবেশবিদরা। এই বিপদাশঙ্কার নেপথ্যে রয়েছে মানুষেরই হাত। বলা হচ্ছে, মানুষই আসলে তার কর্মকাণ্ড দিয়ে বদলে ফেলছে বিশ্ব-প্রকৃতিকে। আর তার জেরে এখন পৃথিবীতে চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ার যুগ চলছে-- যেমন গরম, তেমন বর্ষা, তেমনই শীত। তবে যেখানে বিশ্বের বাড়তে থাকা তাপমাত্রা নিয়ে হা-হতাশ করছে বেশিরভাগ দেশ, সেখানে কৃত্রিম বনায়ন (Afforestation) এর সাহায্য নিয়ে প্রাণহীন মরুভূমিকে সবুজ করে তুলছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরশাহি!

আরব আমিরশাহি কৃত্রিম উপায় সে দেশের পাহাড় ও মরুভূমিতে শুরু করেছে বনায়ন। ইতিমধ্যেই সবুজ বনায়নে শ্যামল হয়ে উঠছে মরুদেশ। আকাশ থেকে কৃত্রিম উপায় বৃষ্টি নামানোও হচ্ছে। এমনকি এদেশের মরুভূমি সবুজের চাদরে ঢেকে গিয়েছে! সেখানকার সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ধূসর এবং শুষ্ক ভূখণ্ডটি এখন সতেজ সবুজ গালিচা দিয়ে ঢাকা। এক সময় যেখানে শুধু বিস্তৃত শুকনো জমি ছিল, এখন সেখানে অন্যরূপ। ফলে, স্থানীয় বাসিন্দারা সবুজের চাদর দেখে আনন্দিত উল্লসিত। তবে এদিকে মহা বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

বনায়ন কি? । What is Afforestation?

অনেকের মনেই প্রশ্ন হতেই পারে বনায়ন কি (What is Afforestation)? আসলে এই পদ্ধতি দ্বারা বনাঞ্চলের পুনর্জন্ম বা প্রতিস্থাপন করা হয়। বনায়ন হল পুনর্বনায়নের আরেকটি নাম। বনায়ন হল এমন একটি অঞ্চলে একটি বন বা গাছের স্ট্যান্ড (বনায়ন) স্থাপন করা যেখানে সাম্প্রতিক গাছের আচ্ছাদন ছিল না। তুলনামূলকভাবে, পুনঃবনায়নের অর্থ হলো প্রাকৃতিক কারণে কেটে ফেলা বা হারিয়ে যাওয়া বন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

বেশ কয়েক দিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিরতিহীন বৃষ্টিপাতের পর সাধারণত শুষ্ক ভূমিগুলোর অত্যাশ্চর্য পরিবর্তন দেখা গেছে। এই অঞ্চলের পাহাড় মরুভূমিতে সাধারণত খুব কমই সবুজ দেখা যায়। কিন্তু এখন সেটির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। চারদিকে সবুজের চাদরে ঢেকে গেছে। প্রাণহীন অঞ্চলে দেখা যাচ্ছে মরুভূমির গাছপালা (desert plants)। ধূসর এবং শুষ্ক ভূখণ্ডটি এখন একটি সতেজ সবুজ গালিচা দিয়ে আচ্ছাদিত। রাস আল খাইমার আল হুওয়াইলাত পর্বতগুলো মরুভূমির গাছপালা (desert plants), সবুজে আচ্ছাদিত। আরব আমিরাতের আবহাওয়া-সম্পর্কিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিয়োগুলিতে ইদানীং দেখা গিয়েছে, আল ফায়া এবং মলেইহা, শারজার কেন্দ্রীয় অঞ্চল টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির পরে যেন জীবন্ত হয়ে উঠছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবহাওয়া দফতর আরও কয়েকদিন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে কৃত্রিম উপায়ের ব্যবহার করে জলবায়ুর পরিবর্তন করার ঘটনায় কিছুটা চিন্তিত বিজ্ঞনীরা।

অন্যদিকে, উপকূলীয় এলাকায় ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়ে বনায়ন (Afforestation) করতে চেয়ে সৌদি আরব বেছে নেয় দেশটির পশ্চিম উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোকে। এটি লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত। ২০৩০ সালের মধ্যে এই কৃত্রিম বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় চারা উৎপাদনে একটি নার্সারিও ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। স্থলভাগের অধিকাংশ গাছপালা সামুদ্রিক জল ও আবহাওয়া সহ্য করতে না পারলেও ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছপালা খুব সহজেই এই পরিবেশে ভালোভাবে টিকে থাকতে পারে। বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস শোষনের ক্ষমতা ম্যানগ্রোভ গাছের বেশি। সাধারণ গাছপালার চেয়ে ৫ থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত কার্বন শোষণের ক্ষমতা রাখে ম্যানগ্রোভ। এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের ভূমিক্ষয় রোধ এবং বাস্তুসংস্থান রক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখে ম্যানগ্রোভ বন। উল্লেখ্য, সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ বিন সালমান ২০১৮ সালে আরএসজি গঠন করেন। এই প্রকল্প গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে সৌদি আরবের জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খায় এমন সব উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা।