Aditya L1 | দুদিন পরেই এল১ পয়েন্টে পৌঁছবে আদিত্য এল১! তবে সামান্য ভুলে ইসরোর সৌরযানকে গ্রাস করতে পারে সূর্য!
এল ১ পয়েন্টে আদিত্য এল১ পৌঁছবে ৬ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকেল ৪তে । ইতিমধ্যেই ইসরোতে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। হিসেবে গন্ডগোল হলেই ইসরোর হাত থেকে বেরিয়ে যাবে আদিত্য এল১।
চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) এর পর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ইসরো (ISRO) পারি দিয়েছে সূর্যের উদ্দেশ্যে। সূর্যের কাছে এল পয়েন্টে পৌঁছনোর লক্ষ্যে গত বছর ২ রা সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে আদিত্য এল১ (Aditya L1)। এবার ২০২৪ (2024) সালের শুরুতেই ল্য়াগারেঞ্জ পয়েন্টে পৌঁছতে চলেছে ভারতের প্রথম সূর্যযান। ইসরো চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, আগামী শনিবার অর্থাৎ ৬ ই জানুয়ারি বিকেল ৪টের দিকে মহাকাশযানকে ধাক্কা দিয়ে তার চূড়ান্ত গন্তব্যের দিকে পাঠানো হবে। তবে ওই দিন সফল ভাবে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তবেই মহাকাশযানটি নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে সক্ষম হবে। সামান্য এদিক থেকে ওদিক হলে কিন্তু আশঙ্কা রয়েছে মহাকাশযানটি ধ্বংস হওয়ার বা চিরতরে হারিয়ে যাওয়ার।
চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) সাফল্যের পর থেকেই দিন গুনছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে। সূর্যের কাছে কাঙ্ক্ষিত কক্ষপথে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছে ভারতের সৌরযান আদিত্য এল১। ইতিমধ্যেই ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো সেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে, যা জানা গিয়েছে ইসরো টুইটার (ISRO Twitter) দ্বারা। ইসরো টুইটার (ISRO Twitter) এ পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, আগামী শনিবার ৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ (2024) এল১ পয়েন্টে পৌঁছনোর কথা ইসরোর সৌরযানটির। তবে সেখানে পৌঁছলে ইসরোকে একটি কাজ করতে হবে। সেই কাজে সামান্য ভুল হলেই হতে পারে বড়সড় বিপদ। এত দিনের সব পরিশ্রম মাটি হয়ে যেতে পারে এক মুহূর্তে।
সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝে ল্যাগারেঞ্জ পয়েন্ট বা এল১ পয়েন্ট আদিত্য-এল১-এর গন্তব্য। ওই পয়েন্টে সূর্য এবং পৃথিবী উভয়েরই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব সমান থাকে। সেখানে পৌঁছে সূর্যকে কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে ইসরোর সৌরযান। পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব হবে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার। সূর্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য এর ফলে জানা যাবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। এই বিষয়ে ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, আদিত্য এল১ (Aditya L1)-এর যাত্রার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সূক্ষ্ম ধাপ অপেক্ষা করে আছে এল১ পয়েন্টে। সেখানে পৌঁছলে ইসরোকে ‘ফায়ার’ করতে হবে। অর্থাৎ সৌরযানটিকে ধাক্কা দিতে হবে। তবে তা অত্যন্ত সাবধানে এবং মেপে মেপে। পরিমাপে একটু গোলমাল হলেই বিজ্ঞানীদের নিয়ন্ত্রণ ছাড়িয়ে বেরিয়ে যেতে পারে আদিত্য-এল১। সে ক্ষেত্রে সূর্যের দিকে আরও এগিয়ে যাবে সৌরযানটি। একসময় তা ধ্বংস হয়ে যাবে।
এছাড়াও চূড়ান্ত কৌশলটি এমন ভাবে প্রয়োগ করতে হবে যাতে নির্দিষ্ট গন্তব্যেই শুধুমাত্র নয়, কক্ষপথে থেকে যাতে দীর্ঘদিন ধরে সূর্যের উপর পর্যবেক্ষণ চালাতে পারে সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করা। অর্থাৎ কক্ষপথে মহাকাশযানের দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করা। একবার যে মহাকাশযানটিকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েই কাজ শেষ হয়ে যাবে এমনটা নয়, সেটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে কাজ করছে কিনা সেটিও নিশ্চিত করতে হবে মাঝেমধ্যে। তারপর জন্য একাধিকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালাতে হবে।
প্রসঙ্গত, পৃথিবীর কাছে মোট পাঁচটি কক্ষপথ বদলের পর অবশেষে টান কাটিয়ে বেরিয়ে যায় আদিত্য এল ১। তার পর এত দিন সূর্যের দিকে নির্দিষ্ট গতিতে এগিয়ে চলেছিল সে। পথে কোনও বাধা আসেনি। এমনকি যাত্রা পথে সূর্যের নানা রকম ছবি তুলে পাঠিয়েছে সৌরযানটি। এবার অগ্নিপরীক্ষা আগামী শনিবার। সেদিন বিকেল ৪টে নাগাদ ওই শেষ মুহূর্তের চূড়ান্ত ‘ফায়ার’ করবে ইসরো। মাপ অনুযায়ী সঠিক ধাক্কা দিয়ে সৌরযানটিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে বসিয়ে দেবেন বিজ্ঞানীরা। তার পর শুরু হবে তার পেলোডগুলির কাজ।