আবহাওয়া

West Bengal Weather | বৃষ্টির ভ্রুকুটির মধ্যেই বাড়বে তাপমাত্রা! সপ্তাহান্ত পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণ-সহ উত্তরবঙ্গে!

West Bengal Weather | বৃষ্টির ভ্রুকুটির মধ্যেই বাড়বে তাপমাত্রা! সপ্তাহান্ত পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণ-সহ উত্তরবঙ্গে!
Key Highlights

পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার থেকে বঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়তে থাকলেও কমবে না তাপমাত্রার পারদ। বরং তিন দিনে তিন-চার ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তবে দার্জিলিংয়ে হতে পারে তুষারপাত।

বুধবার সকাল থেকেই বদল পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal Weather)। সকাল থেকে মেঘলা কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জেলা। বেশ কিছু অংশে সকালে ঝিরিঝিরি বৃষ্টিও হয়েছে। বঙ্গে বৃষ্টির ভ্রুকুটির মধ্যেই ক্রমশ উধাও হচ্ছে শীত। বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা এক ধাক্কায় বেড়েছে প্রায় তিন ডিগ্রি। পাশাপাশি এদিন থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে বলে আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস।

কেমন থাকবে কলকাতার আবহাওয়া?

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কলকাতার আকাশ ঢেকেছে কালো মেঘে। এমনকি সকালে বেশ কিছু অংশে  হয়েছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টিও। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) অনুযায়ী, যেদিন সন্ধ্যেবেলা ও রাতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শীতের আমেজ থাকলেও কমবে কাঁপন। আগামী তিন দিনে তিন-চার ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছতে পারে। বৃষ্টির পরেও তাপমাত্রা খুব একটা কমার সম্ভাবনা কম বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)। এদিন কলকাতার তাপমাত্রা ১৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি বেশি এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ সর্বাধিক ৯১ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৭১ শতাংশ।উল্লেখ্য, বুধবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। যা স্বাভাবিকের থেকে ছয় ডিগ্রি কম ছিল। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৪ ডিগ্রি। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম।

 কেমন থাকবে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া?

দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টির পূর্বাভাসের মধ্যেই ধীরে ধীরে উধাও হচ্ছে শীত। বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা এক ধাক্কায় বেড়েছে প্রায় তিন ডিগ্রি। বিভিন্ন জেলায় সকাল থেকেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টির পাশাপাশি, দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলা মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার আস্তরণে ঢেকে থাকবে।

বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাপমাত্রা তিন থেকে চার ডিগ্রি বৃদ্ধি পেতে পারে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। এছাড়াও থাকবে কুয়াশার দাপট। আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা।শুক্র এবং শনিবারে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)। সপ্তাহান্তে ফের একবার রাজ্যে হাওয়া বদলের সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের দুটি জেলা-উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় হালকা বৃষ্টি হবে। বাকি ১৩টি জেলা অর্থাৎ পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ার আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। আর শনিবার এবং রবিবার দক্ষিণবঙ্গের কোনও জেলায় বৃষ্টি হবে না। তবে ২০ তারিখ থেকে ফের বদলাতে শুরু করবে আবহাওয়া। বন্ধ হবে বৃষ্টি।

কেমন থাকবে উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া?

বৃহস্পতিবার হালকা বৃষ্টিতে ভিজতে পারে উত্তরবঙ্গেরও বেশ কয়েকটি জেলা। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News),উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং এবং কালিম্পঙে তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে ফের বৃষ্টিপাত হতে পারে দার্জিলিঙে। সিকিমে বৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তার প্রভাব পড়বে দার্জিলিঙের পার্বত্য এলাকা। হিমাঙ্কের নীচে নেমে যাবে দার্জিলিঙের তাপমাত্রা। অর্থাৎ উত্তর এবং দক্ষিণ দুই বঙ্গেই রয়েছে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। উল্লেখ্য, হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মিলিয়ে গত কালই তুষারপাত হয়েছে দার্জিলিং জেলার কিছু অংশে। বরফে ঢেকেছে 'কুইন অব হিলস'। এবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal Weather) আপডেট অনুযায়ী, আজ দার্জিলিঙের তাপমাত্রা মাইনাসে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আগামী দু-তিনদিন তুষারপাত হতে পারে। পার্বত্য এলাকায় শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। সকালে কুয়াশা থাকলেও পরের দিকে মেঘলা আকাশের পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহবিদেরা। হালকা মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা সব জেলাতেই।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরের তুলনায় হঠাৎ করে উত্তরবঙ্গের ঠান্ডা যেন বেড়ে গিয়েছে। চলতি শীতের মরশুমে একাধিকবার তুষারপাত হয়েছে উত্তরে। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে নাথু লা এবং সান্দাকফুতে তুষারপাত। বুধবার সকালে তাপমাত্রা আরও নেমে গিয়ে শীতলতম দিন পেয়েছে দার্জিলিং। যদিও অন্য জেলায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু কনকনে ঠান্ডা, কুয়াশার প্রভাব থেকে এ দিনও মুক্ত হতে পারেনি উত্তরবঙ্গের বেশির ভাগ জেলা। শুধু ঠান্ডা বেড়ে যাওয়াই নয়, এ বার শীতে দার্জিলিঙের সঙ্গে জলপাইগুড়ির তাপমাত্রার ফারাকও উল্লেখযোগ্য ভাবে কম থাকতে দেখা গিয়েছে। উচ্চতার নিরিখে একটি শহরের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০৪৮ মিটার, অন্য শহরের উচ্চতা মাত্র ৮৯ মিটার। তবুও মাঘ মাসের প্রথম দিন দুই শহরের তাপমাত্রা একই রেখায় চলে এল। গত মঙ্গলবার দার্জিলিংয়ের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং জলপাইগুড়ি শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। দুই শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য নেমে আসে মাত্র ৪ ডিগ্রিতে। এর পাশাপাশি গত ছয় বছরের নিরিখে গত মঙ্গলবারই ছিল জলপাইগুড়িতে শীতলতম দিন।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এর নেপথ্যে রয়েছে কুয়াশা-রেখা। উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে একটি কুয়াশা-রেখা উত্তর-পূর্ব ভারতে বিস্তৃত। এই রেখাটি রয়েছে পাহাড়ের নীচে, অর্থাৎ, দার্জিলিংয়ের নীচে এবং এই রেখা গিয়েছে জলপাইগুড়ি শহরের উপর দিয়ে। এছাড়া উত্তরবঙ্গে গত কয়েক বছরের তুলনায় হঠাৎ ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আবহাওয়া আধিকারিকেরা তিব্বত থেকে শুরু করে চিন পর্যন্ত তৈরি হওয়া বেশ কয়েকটি ঘূর্ণাবর্তকেই এই চিহ্নিত করছেন।

পাশপাশি, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে ঝাড়খণ্ডে তৈরি হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। শ্রীলঙ্কা উপকূলের কাছে এর অবস্থান। অন্যদিকে, উত্তর-পশ্চিম ভারতে নতুন করে দাপট দেখাচ্ছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। অন্যদিকে,  হরিয়ানার তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমেছে। পঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডিগড় ও দিল্লিতে তাপমাত্রা ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড ও বিহারে তাপমাত্রা ছয় থেকে দশ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকতে পারে।