Gyanvapi Masjid | জ্ঞানবাপী মসজিদে এএসআই-র বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় স্থগিতাদেশ শীর্ষ আদালতের!
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আজ, ২৪সে জুলাই থেকে জ্ঞানবাপী মসজিদে শুরু হয় বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, আগামী বুধবার পর্যন্ত কোনও কাজ করতে পারবে না এএসআই।
আজ ২৪সে জুলাই, সোমবার থেকে শুরু হয় বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের (Gyanvapi Masjid) বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা। এদিন সকাল ৭টায় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (Archaeological Survey of India) জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার কাজ শুরু করে। বারাণসী জেলা আদালতের (Varanasi District Court) নির্দেশ অনুযায়ী, সমীক্ষার সময়ে জ্ঞানবাপী বিতর্কের দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন বলে সূত্রানুযায়ী খবর। সমীক্ষা চলাকালীন যাতে মসজিদ চত্বরে কোনো অশান্তির ঘটনা না ঘটে তার জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, আগামী বুধবার পর্যন্ত কোনও কাজ করতে পারবে না এএসআই। ।
সূত্রের খবর, রবিবার অর্থাৎ গতকালই সমীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে বারাণসীতে (Varanasi) হাজির হন আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা এএসআই-র একটি দল। জানা গিয়েছে, মসজিদে ওজ়ুখানা ছাড়া বাকি অংশটির সমীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। এমনকি এই পরীক্ষার রিপোর্ট ৪ঠা আগস্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে এদিন শীর্ষ আদালত জানায়, আগামী বুধবার অর্থাৎ ২৬সে জুলাই পর্যন্ত জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে কোনও কাজ করতে পারবে না এএসআই। সূত্রের খবর, সমীক্ষার কাজের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মসজিদের ম্যানেজমেন্ট কমিটি। তাদের আইনজীবীকে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, আগামী বুধবার অর্থাৎ ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার বিরোধিতা করে এলাহাবাদ হাই কোর্টে মামলা দায়ের করতে হবে।
জ্ঞানবাপী বিতর্ক । Gyanvapi Debate :
২০২১ সালে অগাস্ট মাসে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে পিটিশন দাখিল করেন। তাদের দাবি, মসজিদের ভিতরে দেওয়ালে শৃঙ্গার গৌরি দেবস্থান রয়েছে। ফলে জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন তারা। এই মামলার প্রেক্ষিতেই জ্ঞানবাপী মসজিদের অন্দরের ভিডিয়ো সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বারাণসীর নিম্ন আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর (Judge Ravi Kumar Diwakar)।
ভিডিও সমীক্ষার পর মসজিদের ওজুখানার জলাধারে শিবলিঙ্গের মতো আকৃতির কাঠামোর খোঁজ পাওয়া হয়। যদিও মসজিদ পক্ষের দাবি, শিবলিঙ্গের কাঠামো আসলে ফোয়ারা। এরপর ভিডিয়োগ্রাফির কাজ শেষ হওয়ার পরে ২০২২ সালের ২০ই মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলার শুনানির দায়িত্ব পায় বারাণসী জেলা আদালত। অন্যদিকে, ২০২১ সালের ২২সে সেপ্টেম্বর হিন্দু পক্ষের তরফে প্রাপ্ত নমুনাগুলির কার্বন ডেটিং পরীক্ষার (Carbon Dating) আবেদন জানানো হয়। মূলত শিবলিঙ্গের বয়স জানানোর জন্যই এই সমীক্ষার আবেদন করা হয়। তবে গত ১৪ই অক্টোবর সিনিয়র বিচারক অজয় কুমার বিশ্বাস (Judge Ajay Kumar Vishwas) সেই আবেদন খারিজ করে জানান, শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব খোঁজার জন্য জ্ঞানবাপী চত্বরে কোনও রকম বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের কাজ করা যাবে না। পাশাপাশি, বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত মৃত প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহাংশ এবং জীবাশ্মের বয়স নির্ধারণের কার্বন ডেটিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা গেলেও, কোনও প্রাচীন শিলা বা প্রস্তরখণ্ডের বয়স নির্ধারণ করা কঠিন।
তবে মসজিদ চত্বরে কোনও রকম সমীক্ষার বিরোধিতা করেন ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি’ অর্থাৎ জ্ঞানবাপী কমিটি। এবিষয়ে দু’পক্ষের মতামত শোনার পরে গত ১৪ই জুলাই রায় সংরক্ষিত রাখেন সিনিয়র বিচারক অজয় কুমার বিশ্বেস। এরপর চলতি বছর মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের তরফে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। তবে গত শুক্রবার অর্থাৎ ২১সে জুলাই আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে জ্ঞানবাপী মসজিদের সমীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয় আদালতের তরফ থেকে। এই মামলার সঙ্গে সম্পকিত উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিশেষ কৌঁসুলি রাজেশ মিশ্র বলেন, কোনও হিন্দু মন্দিরের জায়গায় জ্ঞানবাপী মসজিদ গড়া হয়েছে কি না, তা সমীক্ষা করে দেখবেন আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার বিশেষজ্ঞেরা। এই নির্দেশের পরেই আজ অর্থাৎ ২৪সে জুলাই থেকে মসজিদে সমীক্ষা শুরু হয়। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, আগামী বুধবার পর্যন্ত কোনও কাজ করতে পারবে না এএসআই।
- Related topics -
- দেশ
- সুপ্রিম কোর্ট
- জ্ঞানবাপী
- আদালত
- আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া