দেশ

Chandrayaan 3 News | 'ঘুমিয়ে' বিক্রম ও প্রজ্ঞান, তবুও চন্দ্রযান-৩ নিয়ে চমকপ্রদ তথ্য জানালো ইসরো!

Chandrayaan 3 News | 'ঘুমিয়ে' বিক্রম ও প্রজ্ঞান, তবুও চন্দ্রযান-৩ নিয়ে চমকপ্রদ তথ্য জানালো ইসরো!
Key Highlights

স্লিপ মোডে রয়েছে ইসরোর প্রজ্ঞান রোভার ও বিক্রম ল্যান্ডার। এই আবহেই চন্দ্রযান-৩ নিয়ে বড় তথ্য জানালো ইসরো। চন্দ্রযান-৩ মিশনে ব্যবহার করা হয়েছিল এমন প্রযুক্তি যা পরবর্তী মহাকাশ মিশনে করবে সাহায্য।

২৩ সে অগাস্ট সর্বপ্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ইতিহাস গড়েছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (Indian Space Research Organization) বা ইসরোর (ISRO) চন্দ্রযান-৩। ভারতের মাটি থেকে উৎক্ষেপণের দিন থেকে শুরু করে চাঁদের মাটিতে অবতরণ, এমনকি  এখনও   পর্যন্ত শিরোনামে থাকে চন্দ্রযান ৩-র খবর (Chandrayaan 3 News)। অবতরণে পর চাঁদের মাটি চষে নিজের কাজ সেরে এখন 'চিরনিদ্রায়' ইসরোর প্রজ্ঞান রোভার (ISRO Pragyan Rover) ও বিক্রম ল্যান্ডার। তবে এর মধ্যেই চন্দ্রযান-৩ নিয়ে বড় খবর জানালো ইসরো!

চন্দ্রযান ৩-র খবর (Chandrayaan 3 News)অনুযায়ী, এই মিশনে ব্যবহার করা হয়েছিল নিউক্লিয়ার প্রযুক্তি (Nuclear Technology)। যা ভবিষ্যতে একাধিক মিশনের জন্য দুয়ার খুলে দিয়েছে বলে মনে করছেন ইসরো চেয়ারম্যান (ISRO Chairman) এবং বিজ্ঞানীরা। উল্লেখ্য, এই প্রথম কোনও মিশনে ইসরো ও ভাবা অ্য়াটমিক রিসার্চ সেন্টার (Bhabha Atomic Research Center) একসঙ্গে কাজ করেছে। সূত্রের খবর, চন্দ্রযান-৩-এর প্রোপালশন মডিউলে যুক্ত করা হয়েছিল দু'টি 'রেডিয়ো আইসোটোপ' (Radioisotopes)। এই 'রেডিও আইসোটোপ ইউনিট' একেবারে আশানুরূপ ফল দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরো চেয়ারম্যান (ISRO Chairman)। এই প্রযুক্তি মহাকাশযানের তাপমাত্রাকে কন্ট্রোলে রাখে। তবে ইসরো চন্দ্রযান ৩-র আপডেট (Chandrayaan 3 Update) সম্পর্কে জানানোর সময় জানিয়েছে, শুধুমাত্র চন্দ্রযানেই লাগানো হয়েছিল এই 'রেডিও আইসোটোপ ইউনিট'। ইসরোর প্রজ্ঞান রোভার (ISRO Pragyan Rover)ও বিক্রম ল্যান্ডারে এটি যুক্ত করা হয়নি। কারণ এটি যুক্ত করা হলে বিক্রম ও প্রজ্ঞানের ওজন অনেকটাই বেড়ে যেতো। যার ফলে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত নেন প্রজ্ঞান ও বিক্রমে রেডিও আইসোটোপ ইউনিট যুক্ত করা হবে না।

চন্দ্রযান-৩ মিশনের প্রোপলশন মডিউলে 'দু'টি রেডিয়ো আইসোটোপ ইউনিট' যুক্ত করা হয়েছিল। এই প্রোপালশন মডিউলটি চাঁদের চারপাশে ঘুরপাক খায়। ইসরোর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একেবারে নিখুঁত ভাবে কাজ করেছে 'রেডিও আইসোটোপ ইউনিট'। চন্দ্রযান-৩ মিশনের ডিরেক্টর পি বিরামুথুভেল (P Bira Muthuvel) জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে রোভারে এরকম পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। উল্লেখ্য এর আগে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল নাসার (NASA) গ্যালিলিও মহাকাশযান থেকে বৃহস্পতি, ক্যাসিনি, স্যটার্ন ও ভয়েজার্স ১ ও ৩ মিশনে।

অন্যদিকে, সম্প্রতি চন্দ্রযান ৩-র আপডেট (Chandrayaan 3 Update) সম্পর্কে জানা গিয়েছে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। ন্যাশনাল রিমোট সেনসিং সেন্টার (National Remote Sensing Center) বা এনআরএসসি (NRSC)-এর বিজ্ঞানীদের ধারণা, চাঁদের মাটিতে অবতরণের সময় ১০৮.৫ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে ২.০৬ টন চাঁদের রেগোলিথ উড়িয়েছিল চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার। এই ঘটনা ধরার জন্য চন্দ্রযান-২-এর কক্ষপথে বসানো অরবিটার হাই রেজোলিউশন ক্যামেরা (OHRC)-র তোলা ছবির উপর নির্ভর করে রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিক্রমের অবতরণের কিছুক্ষণ আগে এবং পরে তোলা ছবির তুলনা করেই দেখা যায় ল্যান্ডারের চারপাশে রয়েছে উজ্জ্বল এক চক্র। এই চক্রকেই বলা হচ্ছে ইজেক্টা হ্যালো (Ejecta Halo)। এই ‘ইজেক্টা হ্যালো’ পরীক্ষার মাধ্যমে চাঁদের রেগোলিথ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা হতে চলেছে বিজ্ঞানীদের। চাঁদের মাটির বৈচিত্র কী, তা জানতে পারবেন বিজ্ঞানীরা।

উল্লেখ্য, চন্দ্রযান-৩ মিশন সফল হওয়ার পর মহাকাশ সম্পর্কে আরও একাধিক মিশনের পরিকল্পনায় রয়েছে ইসরো। এমনকি চন্দ্রযান-২ সফল হওয়ার পরই সূর্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে ভারতের প্রথম সূর্যযান আদিত্য এল ১ (Aditya L 1)। বর্তমানে পৃথিবীর মায়াজাল অর্থাৎ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টান ছেড়ে ক্রমশ সূর্যের দিকে এগিয়ে চলেছে আদিত্য এল-১। এর পাশাপাশি মঙ্গলযান-২ (Mangalyaan-2) মিশনের পরিকল্পনাতেও রয়েছে ইসরো। সঙ্গে রয়েছে শুক্রের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা। প্রসঙ্গত, বর্তমানে আদিত্য এল-১ এর পাশাপাশি ইসরো গগনযান মিশন (Gaganyaan mission) নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই মিশন সফল হলে ইসরোর মহাকাশ স্টেশন (ISRO Space Station) তৈরী করার পরিকল্পনাতেও রয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। গগনযানের পরীক্ষামূলক উড়ান সফল হয়েছে ফলে সব ঠিক থাকলে দ্রুত মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ভারত সঙ্গে তৈরী হবে ইসরোর মহাকাশ স্টেশন (ISRO Space Station)ও।