Republic Day of India | ২৬ জানুয়ারিতেই ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস পালনের নেপথ্যে কারণ কী? জানুন প্রজাতন্ত্র দিবস ও এইদিনের প্যারেড সম্পর্কে না জানা তথ্য!

Thursday, January 25 2024, 1:59 pm
highlightKey Highlights

২৬সে জানুয়ারি, ২০২৪ এ উদযাপন হবে ভারতের ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস। জানুন প্রজাতন্ত্র দিবসের ইতিহাস ও ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস সম্পর্কে নানান অজানা তথ্য। সঙ্গে জানুন কীভাবে কাটবেন প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড টিকিট।


রাত পোহালেই ভারতের ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস (75th Republic Day of India)। ২০২৪ (2024) সালে ২৬সে জানুয়ারি, শুক্রবার উদযাপন করা হবে ভারতের  ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস। লম্বা ছুটির মধ্যে দিয়েই সারা দেশ মেতে উঠবে এই দিনের উদযাপনে। এবার অতিথি হিসেবে থাকছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁকর (French President Emmanuel Macron )। ইতিমধ্যেই প্রজাতন্ত্র দিবসের জন্য গোটা দেশ সেজে উঠছে। দিল্লি ও কলকাতায় চলছে বিশেষ প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।

২৬সে জানুয়ারি, ২০২৪ এ উদযাপন হবে ভারতের ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস
২৬সে জানুয়ারি, ২০২৪ এ উদযাপন হবে ভারতের ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস

প্রত্যেক বছরের মতো এবারেও রাজধানী দিল্লিতে প্যারেড আয়োজিত হবে। ভারতের প্রতিরক্ষা  শক্তির বহর, ভারতীয় বাহিনীর বিভিন্ন রেজিমেন্টের প্যারেড, অস্ত্রের সম্ভার থেকে শুরু করে পুলিশ, বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী, আধাসামরিক বাহিনীর প্যারেডের দিকে চোখ থাকে সকল দেশবাসীর। তবে প্রজাতন্ত্র দিবসের এই প্যারেডের অনেক তথ্য রয়েছে যা অনেকেই জানেন না। চলুন জেনে নেওয়া যাক   ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস সম্পর্কে তথ্য (Facts about Republic Day of India) থেকে শুরু করে কী করে কাটবেন প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড টিকিট (Republic Day Parade Tickets)

Trending Updates

ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের ইতিহাস :

১৯৫০ সালের ২৬সে জানুয়ারি ভারতের সংবিধান গণপরিষদ গৃহীত হয়েছিল।  ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর, ভারতে কোনও সক্রিয় সংবিধান ছিল না। পরবর্তীকালে, সংবিধান তৈরির জন্য ২৯ সে আগস্ট ১৯৪৭-এ ডঃ বি আর আম্বেদকরকে চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করে একটি খসড়া কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ৪ঠা নভেম্বর ১৯৪৭ সালে, সংবিধানের একটি আনুষ্ঠানিক খসড়া গণপরিষদে পেশ করা হয়। যদিও অবশেষে ১৯৫০ সালের ২৪সে জানুয়ারি চূড়ান্ত ভাবে গৃহীত হয়ে সেই সংবিধান। কিন্তু সংবিধান গৃহীত হলেও আগামী দুই দিনের জন্য সেই সংবিধান কার্যকর হয় না। শেষে ২৬ সে জানুয়ারি ভারতের সংবিধান আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, যা ভারতকে একটি সার্বভৌম প্রজাতন্ত্রে পরিবর্তন করে। আবার এই দিনেই ১৯৩০ সালে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ঔপনিবেশিক শাসন থেকে পূর্ণ স্বরাজ ঘোষণা করেছিল। তাই সংবিধান কার্যকর করার জন্য এই দিনটিই বিশেষ করে বেছে নেওয়া হয়।

১৯৫০ সালের ২৪সে জানুয়ারি চূড়ান্ত ভাবে গৃহীত হলেও শেষে ২৬ সে জানুয়ারি ভারতের সংবিধান আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়িত হয়
১৯৫০ সালের ২৪সে জানুয়ারি চূড়ান্ত ভাবে গৃহীত হলেও শেষে ২৬ সে জানুয়ারি ভারতের সংবিধান আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়িত হয়

প্রজাতন্ত্র দিবসে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হল প্যারেড। বিশেষ করে নয়াদিল্লির কর্তব্য পথে কুচকাওয়াজের জন্য। এই প্যারেড কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিদেশ থেকে আসেন বিশেষ অতিথিরাও। প্রজাতন্ত্র দিবস ২০২৪ (2024)-এর প্যারেডের থিম হল, ' বিকশিত ভারত' এবং 'ভারত - লোকতন্ত্র কি মাত্রুকা’। প্রজাতন্ত্র দিবস দেশে অনেক উৎসাহের সঙ্গে উদযাপন করা হয়। এই দিনে, রাষ্ট্রপতি বর্ণাঢ্য সামরিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পাশাপাশি এই দিনে, ভারতের রাষ্ট্রপতি দেশের যোগ্য নাগরিকদের পদ্ম পুরস্কার বিতরণ করেন এবং সাহসী সৈন্যদের পরমবীর চক্র, অশোক চক্র এবং বীর চক্রে ভূষিত করেন। তবে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড ও ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস সম্পর্কে নানান তথ্য (Facts about Republic Day of India) অনেকেই জানেন না। দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী-

  •  ভারতের সংবিধান তৈরি করতে ২ বছর, ১১ মাস এবং ১৮ দিন সময় লেগেছে।
  • প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের প্রস্তুতি এক বছর আগে থেকে জুলাই মাস থেকে শুরু হয়। প্যারেড অংশগ্রহণকারীদের আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে শেখানো হয়। কুচকাওয়াজের দিন তাঁরা ভোর ৩টার মধ্যে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছোন। পরপর বেশ কিছু কসরত করে কুচকাওয়াজের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন সবাই।
  • রাষ্ট্রপতির আগমনের মধ্য দিয়ে ২৬ জানুয়ারির কুচকাওয়াজ কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথমত, রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষী জাতীয় পতাকাকে স্যালুট করেন এবং এই সময় জাতীয় সঙ্গীত চলে। ২১ বন্দুকের স্যালুটও দেওয়া হয়।
  • প্যারেড চলাকালীন যখন বন্দুকের স্যালুট দেওয়া হয় তখন জাতীয় সঙ্গীতও গাওয়া হয়। জাতীয় সঙ্গীতের শুরুতে প্রথম গুলি চালানো হয় এবং পরবর্তী ৫২ সেকেন্ড পরে আবার গুলি ছোড়া হয়।
  • সেনাবাহিনীর সদস্যরা দেশীয় ইনসাস রাইফেল নিয়ে প্যারেড মার্চে অংশ নেন। বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা ইসরায়েলি ট্যাভোর রাইফেল নিয়ে মার্চ করেন।
  • কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক সামরিক কর্মীকে তদন্তের ৪টি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। এ ছাড়া তাদের অস্ত্রগুলো ভালোভাবে পরীক্ষাও করা হয়। কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে।
  • প্যারেডের ফ্লোটগুলি বা ট্যাবলোগুলিকে প্রায় ৫ কিমি/ঘন্টা বেগে চালানো হয়, যাতে দর্শকের তা দেখতে অসুবিধা না হয়।
কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক সামরিক কর্মীকে তদন্তের ৪টি ধাপ অতিক্রম করতে হয়
কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক সামরিক কর্মীকে তদন্তের ৪টি ধাপ অতিক্রম করতে হয়

প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড টিকিট :

প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড অধিকাংশ ভারতববাসীই টিভিতে দেখে থাকেন। তবে অনেকে এই প্যারেড এবং অনুষ্ঠান নিজ চক্ষে দেখতে চান। তবে এক্ষেত্রে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে কীভাবে কাটা যাবে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড টিকিট (Republic Day Parade Tickets)? এই টিকিট কাটা যায় অনলাইন-অফলাইন দুভাবে। টিকিটের মূল্য হয়-সংরক্ষিত আসনের জন্য ৫০০ টাকা, অসংরক্ষিত আসনের জন্য ১০০ টাকা, রেস্ট্রিকটেড ভিউ অসংরক্ষিত আসনের জন্য ২০ টাকা। এই প্যারেড বিজয় চক, কর্তব্য পথ, সি-হেক্সাগন, নেতাজি সুভাষ বোসের মূর্তি, তিলক মার্গ, বাহাদুর শাহ জাফর মার্গ এবং নেতাজি সুভাষ মার্গ হয়ে লালকেল্লায়  শেষ হয়। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে এই টিকিট অনলাইনে ১০ জানুয়ারি থেকে বিক্রি হওয়া শুরু হয়েছিল। অনলাইনে  প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডের টিকিট পাওয়া যায়। এছাড়াও অফলাইনেও এই টিকিট পাওয়া যায়। বেশ কিছু স্বীকৃত কাউন্টার খোলা হয় যেখানে প্রজাতন্ত্র দিবসের টিকিট পাওয়া যায়। পরিচয়পত্রের কপি এবং আসল দেখাতে হয় টিকিট কাটার সময়।

ভারতের ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বারোটি রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং নয়টি মন্ত্রক ও বিভাগকে নিজেদের সারণী প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে
ভারতের ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বারোটি রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং নয়টি মন্ত্রক ও বিভাগকে নিজেদের সারণী প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে

উল্লেখ্য, এ বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসে অর্থাৎ ভারতের ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস (75th Republic Day of India) এর কুচকাওয়াজে বারোটি রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং নয়টি মন্ত্রক ও বিভাগকে নিজেদের সারণী প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত অরুণাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, ছত্তিশগড়, গোয়া, গুজরাট, কর্ণাটক, মেঘালয়, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড। সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরে সময়সূচি অনুযায়ী প্যারেড শুরু হবে। গোটা অনুষ্ঠানটি লাইভ স্ট্রিম হবে সরকারি চ্যানেল দূরদর্শন এবং সংসদ টিভিতে। এছাড়াও দূরদর্শনের ইউটিউব চ্যানেল এবং PBI-এর ওয়েবসাইটেও লাইভ স্ট্রিম দেখা যাবে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File