Children Survived In Amazon | পরিবেশের অদ্ভুদ কামাল! ৪০দিন পর অ্যামাজন জঙ্গল থেকে উদ্ধার বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ চার শিশু!
অ্যামাজন জঙ্গলে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রাপ্ত বয়স্কদের। তবুও বেঁচে রইলো চার শিশু। ৪০ দিন পর উদ্ধার করে সেনা জওয়ান।
বিশ্বের সবথেকে ভয়ানক জঙ্গলের মধ্যে অন্যতম হলো অ্যামাজন জঙ্গল (Amazon Rainforest)। নানা রকম বিষাক্ত কীটপতঙ্গ থেকে শুরু করে সরীসৃপ ও প্রাণী রয়েছে এখানে। এই জঙ্গলে কোনও প্রাপ্তবয়স্কর বেঁচে থাকাই অনেক আশ্চর্য ব্যাপার। সেখানে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ ৪০ দিন পর অ্যামাজন জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল চার শিশু। অ্যামাজন জঙ্গলের বিমান ভেঙে পড়ার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল এই চার খুদে। এক মাসেরও বেশি সময় পর তাদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে সেরা জওয়ানরা। এরকম ভয়ংকর জঙ্গলে কীভাবে এই চার শিশু বেঁচে রইল সেই নিয়েই হতবাক গোটা পৃথিবী।
গত ১লা মে, অ্যামাজন জঙ্গলে ভেঙে পড়ে এক যাত্রীবাহী বিমান। ১৬ই মে কলম্বিয়ার (Colombia) ঘন জঙ্গল থেকে পাওয়া যায় বিমানের ধ্বংসাবশেষ। সেই সময় একাধিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে উদ্ধারকারী দল ও সেনা জওয়ানরা। তবে তখন থেকেই নিখোঁজ ছিল চার শিশু। বহু তল্লাশি করেও খোঁজ মেলে না তাদের। তবে অবশেষে বিমান দুর্ঘটনার ৪০ দিন পর ওই ৪ শিশুকে উদ্ধার করে সেরা জওয়ান।
তবে কীভাবে এই রাক্ষুসে আমাজন জঙ্গলে দীর্ঘ ৪০ দিন কোনওরকম সাহায্য ছাড়া এই চার শিশু বেঁচে ছিল সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। বহু মানুষের ধারণা, এই ঘটনার সঙ্গে ঐশ্বরিক ক্ষমতার কোনো যোগ রয়েছে। না হলে অ্যামাজনের মত ভয়ংকর জঙ্গলে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ছাড়া এই চার শিশুর বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, এই চার শিশুর অ্যামাজন জঙ্গলে কোনও সাহায্য ছাড়াই বেঁচে থাকার নেপথ্যে রয়েছে তাদের জীবনধারা ও জন্মের আগের থেকে পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক। জানা গিয়েছে, এই চার শিশু আসলে আদিবাসী পরিবারের সদস্য। ফলে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে থেকেই পরিবেশের সঙ্গে তাদের এক অদ্ভুত গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়। ছোট থেকেই তাদের পরিবারের লোকজন তাদের প্রশিক্ষণ দেয়, কীভাবে জঙ্গলের ভেতরে বেঁচে থাকা যায়। তারা ছোট থেকেই জানতো জঙ্গলের ভেতর কোন গাছের শিকর বা ফল খেলে কোন ক্ষতি হয় না বা কোন বীজ খেয়ে তারা বেঁচে থাকতে পারবে।
কলম্বিয়ার জাতীয় আদিবাসী সংস্থার (National Indigenous Organization of Colombia) তরফ থেকে বলা হয়, জঙ্গলে বেঁচে থাকার মন্ত্র গর্ভস্থ অবস্থা থেকেই এই চার শিশু পেতে শুরু করে। যার ফলে অ্যামাজন জঙ্গলের মতো ভয়ংকর জঙ্গলেও তারা বেঁচে রয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিমান দুর্ঘটনার পর হেলিকপ্টারে করে জঙ্গলে শুকনো খাবারের প্যাকেট ফেলা হয়। আর সেই শুকনো খাবারের প্যাকেটের খোঁজ পায় এই চার শিশু। তবে বেশিরভাগ সময়ই তারা জঙ্গলের গাছের শিকড় ও বীজ খেয়ে এই ৪০ দিন কাটিয়েছে।
বিমান দুর্ঘটনার পর জঙ্গলে তল্লাশি অভিযানের সময়ই এই চার শিশুর মায়ের দেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু এই চার শিশুর কোনও হদিশ না পাওয়ায় বেশ চিন্তায় পড়ে যায় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল। পরে আদিবাসী ও সেনাদের যৌথ অভিজ্ঞতার সৌজন্যে ৪০ দিন পর এই চার খুদেকে উদ্ধার করা হয় অ্যামাজন জঙ্গল থেকে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো (Gustavo Petro) বলেন, ভয়ংকর ঘনও জঙ্গলে এই চার শিশুর জীবনযুদ্ধের জয়ের এই ঘটনা দৃষ্টান্ত হয়ে রইলো। কেবল প্রেসিডেন্টই নয়, এই ঘটো আয় গোটা পৃথিবী বাকরুদ্ধ। অনেকেই বলছেন, জন্মের আগের থেকে পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ায় তাদের মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছে সেই পরিবেশই।
- Related topics -
- আন্তর্জাতিক
- আমাজন অরণ্য
- কলম্বিয়া
- শিশু
- বিমান দুর্ঘটনা