লাইফস্টাইল

365 Days Flowering Plants in India | পছন্দ ফুল গাছ? কম যত্নেই এই গাছগুলি ১২ মাস দেবে ফুল!

365 Days Flowering Plants in India | পছন্দ ফুল গাছ? কম যত্নেই এই গাছগুলি ১২ মাস দেবে ফুল!
Key Highlights

এমন বেশ কিছু গাছ রয়েছে যা কম যত্নেই সব ঋতুতেই ফুল দেয়। দেখে নিন এই তালিকায় রয়েছে কোন কোন গাছ।

বর্তমানে রেস্তোরাঁ, হোটেল, ক্যাফে ডেকোরেশনের জন্য প্ল্যান্ট থিম (Plant Theme) বা ফ্লাওয়ার থিম (Flower Theme) প্রথম পছন্দ মালিকদের। ফুল ছাড়া গাছ দিয়ে ঘর সাজানো বা বাগান বানানো হয়ে উঠেছে নয়া ট্রেন্ড। তবে ফুল যুক্ত গাছের সৌন্দর্য্যই আলাদা। কম বেশি সকলেরই ফুল ভালো লাগে। তাই জন্যই হয়তো পছন্দের মানুষকে ফুল নিবেদন করার চলটা তৈরী হয়েছে। তবে গাছ থেকে ফুল কেটে নয়, বরং সারা বছর ফুল হবে এমন গাছ উপহার দেওয়া বেশি ভালো নয় কি? কেবল উপহার দেওয়ার জন্যই নয়, নিজের ঘর বা বাগান সাজানোর জন্যও বেছে নিতে পারেন ফুল গাছ। তবে যে সে ফুল গাছ নয়, বেছে নিন এমন ফুল গাছ যাতে ফুল হবে সকম ঋতুতেই, অর্থাৎ গোটা বছরই।

অনেকেই ফুল গাছ পছন্দ করেন বলে বাড়িতে একাধিক বহু জাতির ফুল গাছ রাখেন। তবে অনেক ক্ষেত্রেই প্রচুর যত্নের পরেও গাছে ফুল ফোটে না। তবে ভারতেই এমন কিছু ফুল গাছ পাওয়া যায় যাতে খুব কম যত্নেই সারা বছর ফোঁটে ফুল। দেখে নিন সেইসব বহুবর্ষজীবী ফুল গাছের (365 Days Flowering Plants in India) তালিকায় আছে কোন কোন গাছ।

১. ক্রাইস্যান্থেমাম । Chrysanthemum :

সারা বছর ফুল ফোঁটে এরকম গাছের মধ্যে অন্যতম হল ক্রাইস্যান্থেমাম। সম্ভবত চীন (China) থেকে উদ্ভূত এই গাছগুলি গোটা বিশ্বেই খুব জনপ্রিয়। এই গাছটিকে এশিয়ায় (Asia) বন্ধুত্বের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত করা হয়। কেবল সুন্দর ফুলের জন্যই  নয়, এই গাছের রয়েছে কিছু ঔষধি গুণও। বলা হয়ে থাকে ক্রাইস্যান্থেমাম হার্ট এবং ব্যাধি নিরাময় করে। খুব কম যত্নের প্রয়োজন হলেও ক্রাইস্যান্থেমাম এর সঠিক বৃদ্ধির জন্য দরকার আর্দ্র এবং সুনিষ্কাশিত মাটি। এছাড়াও পর্যপ্ত সার এবং সূর্যালোকও দরকার।

  • ক্রাইস্যান্থেমামের ফুল রঙ : লাল, হলুদ, বেগুনি, ল্যাভেন্ডার, কমলা।
  • ক্রাইস্যান্থেমামের বৈজ্ঞানিক নাম : Dendranthema Grandiflora

২. অপরাজিতা । Butterfly Pea :

অপরাজিতা শব্দের আভিধানিক অর্থ যাকে পরাজিত করা যায় না। অর্থের মতো সত্যিই প্রাচীন ভেষজ উদ্ভিদ অপরাজিতার গুণাগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা এতটাই বেশি যে এই গাছকে হারানো বেশ কঠিন অন্য গাছের পক্ষে। এই ফুল গাছের সঙ্গে আমরা প্রায় সকলেই পরিচিত। কারণ এর ফুল ব্যবহৃত হয় পুজোতে। বলা হয়ে থাকে অপরাজিতা ফুল ভগবান শিব এবং দেবী দুর্গার খুব প্রিয়। যার ফলে পুজোর সময়ে দরকারে বেশ পরিমাণ টাকা দিয়েই কিনতে হয় অপরাজিতা ফুল। তবে এই গাছ সহজেই ঘরে চাষ করা যায়। এমনকি এই গাছের জন্য বিশেষ যত্নেরও প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র একটি সঠিক পরিমাণ জল এবং দৈনিক অন্তত ৬ ঘন্টা সূর্যালোক প্রয়োজন।

  • অপরাজিতার ফুলের রঙ : নীল, সাদা।
  • অপরাজিতার বৈজ্ঞানিক নাম : Clitoria Ternatea

৩. পোর্টুলাকা । Portulaca :

আর্জেন্টিনা (Argentina) এবং ব্রাজিলের (Brazil) শুষ্ক সমভূমির স্থানীয় একটি রসালো উদ্ভিদ পোর্টুলাকা। এটি একটি খরা এবং তাপ সহনশীল উদ্ভিদ। এই গাছ কিছু অঞ্চলে পার্সলেন (Purslane) এবং মস গোলাপ (Moss Rose) নামেও পরিচিত। আপনি যদি এই গাছ বাড়িতে রাখেন তাহলে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন, যেহেতু এই গাছগুলি শুষ্ক পরিবেশে বেশি বৃদ্ধি পায়, তাই এই গাছের কম পরিমাণ জল দরকার। অতিরিক্ত জল দেওয়ার ফলে কান্ড এবং শিকড় পচে যেতে পারে। এছাড়াও এই গাছ রোপণের সময় সার ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত এই গাছ ছাটাইও করতে হবে।

  • পোর্টুলাকার ফুলের রঙ : বেগুনি, ম্যাজেন্টা, লাল, কমলা, হলুদ, গোলাপী।
  • পোর্টুলাকার বৈজ্ঞানিক নাম : Portulaca Oleracea

৪. বোগেনভিলিয়া বা গগনবেল । Bougainvillea or Gaganbel :

বোগেনভিলিয়া হল একটি কাঁটাযুক্ত আলংকারিক লতাগাছ। এই গাছের ফুল কাগজের ফুল বা সান্তা রিটা (Santa Rita) নামেও পরিচিত। যদিও ভারতে এটি গগনবেল নামে পরিচিত। বোগেনভিলিয়া দৈর্ঘ্যে ৪০  ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে। বোগেনভিলিয়ার সঠিক বৃদ্ধি এবং প্রস্ফুটিত হওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে জলের প্রয়োজন হয় না। এমনকি অতিরিক্ত জল দেওয়ার ফলেও গাছের শিকড় পচে যেতে পারে। এই গাছ বনসাই (Bonsai) হিসাবেও জন্মানো যেতে পারে।

  • বোগেনভিলিয়ার ফুলের রঙ : বেগুনি, লাল, কমলা, সাদা, গোলাপী, হলুদ।
  • বোগেনভিলিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম:  Bougainvillea Glabra।

৫. ভিনকা । Vinca :

ভিনকা চিরসবুজ বা পেরিউইঙ্কল (Periwinkle) নামেও পরিচিত। এই উদ্ভিদ মাদাগাস্কারে (Madagascar) উদ্ভূত হলেও ভারতে বেশ জনপ্রিয়। এই গাছের সুনাম এর ফুলের সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে এর ঔষধি গুণের জন্যও। এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের (Type 2 Diabetes) প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এই গাছের কম যত্ন লাগলেও এটি একটি সূর্য প্রেমী উদ্ভিদ হওয়ায় এটির জন্য ৬ থেকে ৮ ঘন্টা সরাসরি সূর্যালোক প্রয়োজন। তবে জল দেওয়ার সময়  মাথায় রাখবেন, গাছে বেশি জল দেবেন না।

  • ভিনকার ফুলের রঙ : গোলাপী, লাল, সাদা, বেগুনি।
  • ভিনকার বৈজ্ঞানিক নাম : Catharanthus Roseus.

৬.  অ্যাডেনিয়াম । Adenium : 

অ্যাডেনিয়াম মরুভূমির গোলাপ নামেও পরিচিত। অ্যাডেনিয়াম বহিরঙ্গন বা অন্দর উদ্ভিদ (Indoor Plant) হিসাবে খুবই জনপ্রিয়। এই গাছের সুবৃদ্ধির জন্য এই গাছটির শাখা-প্রশাখা বৃদ্ধি পেলে তা কেটে ফেলা দরকার। কেটে ফেলা ডালটি অন্য স্থানে বসিয়ে সেখান থেকে নতুন গাছ উৎপন্ন করতে পারেন। এই গাছ অনেকদিন জল ছাড়াই বাঁচতে পারে। ফলে নিয়ম করে গাছে জল দেওয়ার ঝুট-ঝামেলা একেবারে পোহাতে হয় না। যথাযথ ভাবে এই গাছ গ্রূমিং করলে গাছে বেশি ফুল আসে এবং গুঁড়ি শক্তপোক্ত হয়।

  • অ্যাডেনিয়ামের ফুলের রঙ : লাল, গোলাপী, সাদা।
  • অ্যাডেনিয়ামের বৈজ্ঞানিক নাম :  Adenium Obesum

উপরোক্ত গাছগুলি বাদেও বহু গাছ রয়েছে যার  ফুল ১২ মাসই ফোঁটে। তবে এধরণের গাছ আনার আগে কোন গাছের কিরকম প্রকৃতি, কতটা জল প্রয়োজন, কিরম সারের দরকার তা জেনে রাখা উচিত।