Panchayat Election | পঞ্চায়েত ভোটের দিনই মৃত ১৮! কোথায় নিরাপত্তা? কমিশনের 'দোষ' বলে মন্তব্য বিএসএফের!
পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে গোটা রাজ্য জুড়ে সংঘর্ষ। ভোটে মোট মৃত প্রায় ৩৬। স্পর্শকাতর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীই ছিল না বলে অভিযোগ। পাল্টা নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙ্গুল বিএসএফের।
২০২৩ এর পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election 2023) বুথে বুথে বোমাবাজি, গোলাগুলি, খুন, ভোট চুরি, ব্যালট বক্স চুরির মতো ঘটনার সাক্ষী থাকলো গোটা রাজ্য তথা দেশ। নির্বাচনের কারণে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩৬ জন। আহত হাজার। অর্থাৎ ৮ই জুলাই, শনিবার এক দফায় ভোট সম্পন্ন হলেও এখনও থামেনি উত্তাপ। সাধারণ মানুষের একটাই প্রশ্ন, এতো মৃত্যুর নেপথ্যে দোষ কার?
২৩ এর পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বাজতেই শুরু হয় সংঘর্ষ। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া নিয়েই উত্তাপ সৃষ্টি হয় গোটা রাজ্যে। প্রায় প্রত্যেক দিনই মৃত্যু হয় একাধিকের। ভোটের আগেই এহেন পরিস্থিতি দেখে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) মোতায়েনের নির্দেশ দেয় আদালত। এই নিয়েও শুরু হয় জলঘোলা। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta Highcourt) এবং সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কাছে ধাক্কা খেয়ে ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commision)। এরপর শুরু হয় কম সময়ে গোটা রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে টানাপোড়েন। নির্বাচনের আগের দিনও রাজ্যে আসতে থাকে বাহিনী।
এক দফায় রাজ্যে প্রায় ৬১ হাজারেরও বেশি বুথে ভোট। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হলেও, শনিবার দিনভর প্রায় গোটা রাজ্যে চলে লাগাতার অশান্তি, হিংসা, প্রাণহানির ঘটনা। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিএসএফ। একইসঙ্গে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধেও তোলা হয়েছে অসহযোগিতার অভিযোগ। তবে পাল্টা কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
রবিবার বিএসএফের (BSF) তরফ থেকে দাবি, তাঁরা স্পর্শকাতর, অতি স্পর্শকাতর বুথের তালিকাই পাননি। যা হাতে পেলে বাহিনী মোতায়েনের কাজ অনেকটা সহজ হতো। বিএসএফের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী সঠিক জায়গায় মোতায়েন করা হয়নি। ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত কোথায় কোথায় বাহিনী মোতায়েন হবে, স্পর্শকাতর বুথ কোনগুলি তার তালিকা বারবার চেয়েও পাওয়া যায়নি। বিএসএফের দাবি, কমিশনের পরিকল্পনাহীনতার জন্যই রাজ্যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এত বিশৃঙ্খলা হয়েছে। পাশাপাশি বিএসএফ জানিয়েছে, যে বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল সেখানে কোনও অশান্তি হয়নি। বরং যেখানে রাজ্য পুলিশ ছিল সেখানেই বোমাবাজি, গোলাগুলি, খুন, ভোট চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিএসএফের আরও বড় অভিযোগ, ভোটের দিন অর্থাৎ শনিবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাম্পে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রাখা হয়। এরপর দুপুর হয়ে যাওয়ার পর তাদের নিয়ে এলাকা ঘুরতে বের হয় রাজ্য পুলিশ। যার ফলে অশান্তি আটকানোর জন্য কিছু করার থাকে না কেন্দ্রীয় বাহিনীর।
তবে বিএসএফ-র পাল্টা রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের (State Election Commissioner) যুক্তি, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বলা হয়েছিল রাজ্যেআসার পর জেলার নোডাল অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্পর্শকাতর বুথের তালিকা নিয়ে নিতে। কিন্তু সময়াভাবে তাঁরা করতে তা পারেননি। কারণ, কমিশনের চাওয়ামতো ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে অনেক দেরিতে। যার ফলে এতে কমিশনের কোনও দায় নেই বলেই দাবি নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার (Rajib Sinha)।
ইতিমধ্যেই বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড চিঠি দিয়ে জানান,রাজ্যে অন্তত সাড়ে ৫ হাজার বুথে পুনর্নির্বাচনের করার সুপারিশ করে রিপোর্ট দিতে চলেছেন আইজি বিএসএফ (IG BSF)। উল্লেখ্য, তিনিই বাহিনী সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন। সমস্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই তিনি এই সুপারিশ করতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে। পুনর্নির্বাচনের সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশন এবং হাইকোর্টে রিপোর্ট দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার লিখিত রিপোর্ট দেওয়া হতে পারে।
৮ই জুলাই শনিবার রাজ্যে এক দফার পঞ্চায়েত ভোটে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১৮ জন। প্রাক ভোট হিংসায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। ২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসার ঘটনা রাজ্য পেরিয়ে দেশ এমনকি বিদেশেও এখন খবরের শিরোনামে।
- Related topics -
- রাজনৈতিক
- রাজ্য
- নির্বাচন কমিশনার
- পঞ্চায়েত নির্বাচন
- নির্বাচন
- কেন্দ্রীয় বাহিনী
- প্রতিরক্ষা
- বিএসএফ
- বিজেপি
- তৃণমূল কংগ্রেস
- সিপিএম