Mahalaya 2023 | মহালয়ায় দেবীপক্ষের সূচনা! কেন এই দিনেই চক্ষুদান করা হয় দেবী দুর্গার?
মহালয়াতে দেবীপক্ষের সূচনা। এদিনই পূর্বপুরুষদের শান্তি কামনার জন্য করা হয় তর্পণ। এবার এদিনই দেবীর চক্ষুদান করা হয়।
'আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক-মঞ্জীর; ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা;প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা....'! আজ, ১৪ই অক্টোবর, শনিবার মহালয়া ২০২৩ (Mahalaya 2023) মাতৃপক্ষের সূচনা হয়ে গেলো। আক্ষরিক অর্থে সূচনা হলো ২০২৩ এর দুর্গাপূজা (2023 Durga Puja)। প্রত্যেক বাঙালি গোটা বছর অপেক্ষা করে থাকে এই দিনটার। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠস্বরে ' মহিষাসুরমর্দিনী ' কাকভরেই বেজে ওঠে গোটা শহর তথা বাংলা জুড়ে। এদিনই আবার করা হয় তর্পণ, আঁকা হয় দেবী দুর্গার চোখ। তবে মহালয়ার দিনেই কেন দেবীর চক্ষুদান করা হয়?
' মহালয়া' শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রম। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাই হলেন, সেই মহান আলয়। পুরাণ থেকে মহাভারত, মহালয়া ঘিরে বর্ণিত আছে নানা কাহিনি। মহালয়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ রীতি। এই বিশেষ দিনই দেবীর দুর্গার চক্ষুদান হয়। দুর্গাপুজোর সূচনা হয়, দেবীর চক্ষুদানের মাধ্যমেই।
দূর্গা পুজো ২০২৩ সম্পর্কে আরও পড়ুন : পুজো উদ্বোধনের সঙ্গে একাধিক কর্মসূচি নিয়ে শহরে ফুটবল ম্যাজিশিয়ান রোনাল্ডিনহো! কলকাতার 'রামমন্দির' উদ্বোধনে শাহ!
রামায়ণ অনুসারে, বসন্ত কালে রাবণ দেবী দুর্গার পুজোর সূচ়না করেছিলেন। যা বর্তমানে বাসন্তী পুজো নামে পরিচিত। পরে শ্রীরামচন্দ্র শরৎকালে দুর্গার অকাল বোধনের আয়োজন করেন। এই পুজো অকালবোধন নামে পরিচিত। এরপর থেকেই শারদীয়া দুর্গা পুজো যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। প্রাচীনকাল থেকে রাজবাড়ি বা জমিদার বাড়িতে ধুমধাম করে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে।
তবে আগে মহালয়ার দিন দেবীর চক্ষুদান হতো না। আগে রথের দিন হতো দেবীরমূর্তির কাঠামো পুজো। এরপর মহাসপ্তমীর দিন নবপত্রিকা প্রবেশের পর হত দেবীর চক্ষুদান পর্ব।চক্ষুদানের পরপ্রতিমায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। মহাসপ্তমীর সকালে শুদ্ধাচারে ডান হাতে কুশের অগ্রভাগ নিয়ে দেবী দুর্গাকে কাজল পরানো হয়। প্রথমে ত্রিনয়ন, তারপর বাম চক্ষু ও শেষে ডান চক্ষু আঁকা হয় মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে। পর্দায় ঢাকা ঘেরাটোপে পুরোহিতের উপস্থিতিতে লেলিহান মুদ্রায় মোট ১০৮ বার বীজমন্ত্র জপ করা হয়। এর পরেই মৃন্ময়ী থেকে চিন্ময়ীতে রূপে প্রতিষ্ঠিত হন দেবী দুর্গা। তবে শুধু দুর্গার না, তার চার সন্তান তথা লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী ও কার্তিক, এমনকী তাদের বাহনদেরও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
কিন্তু, যুগের সঙ্গে রীতি বদলায়, মহালয়ার দিন হয় দেবীপক্ষের সূচনা। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরবর্তীকালে মহালয়ার দিনই প্রতিমার চোখ আঁকার চল শুরু হয়। পাশাপাশি বর্তমানে বারোয়ারি পুজোর সংখ্যা বহুগুণে বেড়েছে। তাই অনেক শিল্পীরা কাজের সুবিধার জন্য মহালয়ার আগেও উমার চোখ আঁকেন। তবে মহালয়ায় চক্ষুদানের গুরুত্ব হিন্দু ধর্মে তাৎপর্যবাহী। মহালয়া থেকেই শুরু হয় দুর্গাপুজো।
- Related topics -
- লাইফস্টাইল
- দুর্গাপুজো
- পুজো ও উৎসব
- মহালয়া
- দূর্গা পুজো ২০২৩