West Bengal Weather | বঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস! বইতে পারে ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া! এরই মাঝে ভারতে চরম জল সংকটের আশঙ্কা!
পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর অনুযায়ী, এখনই নেই কোনও নিস্তার বর্ষণ থেকে। তবে এরই মাঝে দুশ্চিন্তার খবর মিললো আইএমডি আবহাওয়া স্যাটেলাইট দ্বারা। চরম জল সংকটে পড়তে চলেছে ভারত। ৫৪০ টিরও বেশি জেলা জল নিয়ে চাপে পড়েছে।
সপ্তাহের শুরুতেই বদল পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal Weather)। এদিন সকালে কলকাতার কিছু অংশ-সহ রাজ্যের বেশ কয়েক জেলা ভিজেছে বৃষ্টিতে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর অনুযায়ী, এখনই নেই কোনও নিস্তার বর্ষণ থেকে। রাজ্যে দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তরের বেশ কিছু জায়গায় বর্ষণের সম্ভাবনা প্রবল। এমনকি দু একটি জেলায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়ার সম্ভাব্য গতিবেগ ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার। তবে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (IMD) থেকে পাওয়া তথ্য ইঙ্গিত করছে যে চরম জল সংকটের সম্মুখীন হতে চলেছে ভারত।
পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া :
পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) বলছে, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শুষ্ক আবহাওয়া খানিকটা থাকতে পারে মঙ্গলবার পর্যন্ত। তবে বুধবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজ্যের দুই জেলায়। বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তবে তারপর আবহাওয়ায় বদল আসতে পারে। এদিন নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম-সহ দক্ষিণের কিছু জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)। বাকি জেলাগুলোতেও আজ বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির হাত ধরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কিছুটা নিচে। দু একটি জেলায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা। হাওয়ার সম্ভাব্য গতিবেগ থাকতে পারে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার। আজ, সোমবার বৃষ্টি বাড়বে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। এদিন পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকবে। বৃষ্টির বেশি সম্ভাবনা পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদে। ৫০ কিলোমিটার গতি বেগে দমকা ঝোড়ো হওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস এই জেলাতে। কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গের জেলাতেও ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো হাওয়া সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা।তবে বৃষ্টির প্রভাব কেটে গেলে বুধবার থেকে পারদের লাগাতার উত্থান।
অন্যদিকে, শহর কলকাতায় আজ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)। ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলেই জানা গিয়েছে। তবে মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হবে। বুধবার থেকে ক্রমাগত বাড়বে তাপমাত্রা। সোমবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে থাকতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গে দার্জিলিংয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকায় হালকা তুষারপাতের সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে। হযে অফিস সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গে খুর হালকা তুষারপাত হতে পারে দার্জিলিংয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকা সিকিম সংলগ্ন এলাকাতে। দার্জিলিং ও কালিম্পং এর উঁচু পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার, বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি অথবা শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও আছে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পার্বত্য এলাকায়। সিকিমে তুষারপাত এর প্রভাব পড়বে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায়। উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাতেও হালকা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। মঙ্গলবার পর্যন্ত দার্জিলিং ও কালিম্পং পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টি চলবে। উত্তরবঙ্গের ফের বৃষ্টি বাড়তে পারে বুধ ও বৃহস্পতিবার।
জল সংকটে ভারত!
গ্রীষ্ম আসার আগেই চিন্তার ভাঁজ পরিবেশবিদদের। সম্প্রতি আইএমডি আবহাওয়া স্যাটেলাইট (IMD Weather Satellite) দ্বারা জানা গিয়েছে, চরম জল সংকটের সম্মুখীন হতে চলেছে ভারত। যার ফলে ইতিমধ্যেই পালঘর, সাংলি, সোলাপুর, পুনের মতো উল্লেখযোগ্য এলাকা সহ ৫৪০ টিরও বেশি জেলা জল নিয়ে চাপে পড়েছে। আইএমডি এর স্ট্যান্ডার্ডাইজড রেসিপিটেশন ইভাপোট্রান্সপিরেশন ইনডেক্স (SPEI) অনুসারে, ২৮সে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯৮টি জেলা বেশ ভালোরকম শুষ্ক অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, বিশেষ করে উপদ্বীপ, মধ্য এবং পশ্চিম ভারতে, বাষ্পীভবনের হারকে প্রভাবিত করছে, ফসলের চাপকে বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ করে পালঘরের মতো উপকূলীয় অঞ্চলে, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, কর্ণাটক, কেরালা এবং তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলিতে জলের ঘাটতি চরমে পৌঁছোচ্ছে। জানা গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে উপকূলীয় জেলা পালঘর, সোলাপুর, সাংলি, পুনে, রাজকোট, জুনাগড়, দ্বারকা, মহীশূর, এর্নাকুলাম, ত্রিশুর, বেলগাঁও, রায়গড়, রত্নাগিরি, ত্রিবান্দ্রম, মাদুরাই এবং ভেলোর।
আইএমডি আবহাওয়া স্যাটেলাইট (IMD Weather Satellite) দ্বারা জানা গিয়েছে, মুম্বাই সহ আরও ৪৪২ জেলাও শুষ্ক অবস্থা দেখাতে শুরু করেছে, যদিও ৯৪ টির মতো গুরুতর নয়। এদিকে আগামী মাসগুলিতে বাষ্পীভবনের হার আরও বেশি হতে পারে এবং মধ্য ও উপদ্বীপের ভারতের কিছু অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা প্রত্যাশিত। বলা হচ্ছে পর্যাপ্ত প্রাক-মৌসুমি বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বিশেষ করে এপ্রিল মাস থেকেই চরম তাপমাত্রা ও জল সংকটের সম্মুখীন হতে চলেছে ভারত। যার প্রভাব কৃষির বাইরেও সুদূরপ্রসারী। বাঁধ ও খালের জলের স্তর, পানীয় জলের প্রাপ্যতা এবং জনস্বাস্থ্যকে ব্যাপক ভাবে চাপে ফেলতে পারে জলের অভাব।