আবহাওয়া

WB Weather | শনিবার পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা! দিনভর গরমের পর বিকেলে হতে পারে ঝড়-বৃষ্টি!

WB Weather | শনিবার পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা! দিনভর গরমের পর বিকেলে হতে পারে ঝড়-বৃষ্টি!
Key Highlights

আগামী শনিবার পর্যন্ত বিকেলের পর রাজ্য জুড়ে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি। তবে দিনভর দক্ষিণবঙ্গে থাকবে গরম।

অবশেষে গরমের হাত থেকে মুক্তি পেতে চলেছে বঙ্গবাসী। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ১৬ই মে দুপুরে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া দফতর (Weather Office)।  শনিবার পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা।

আলিপুর আবহাওয়া অফিস (Alipore Weather Office) সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরের পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। হাওয়া অফিসের তরফ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, ১৭ থেকে ২০ মে পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত ঝড়-বৃষ্টি (Rain and Storm) হবে। তবে সোমবার আচমকা ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় কলকাতা-সহ রাজ্যের বহু জেলায় তাপমাত্রা কমে যায়। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, আগামী কয়েকদিন কলকাতায় সকাল থেকে দিনভর গরম ও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে। কলকাতার পাশাপাশি পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলাতেই দিনের বেলায় গরমের সঙ্গে থাকবে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি।

 তবে বিকেলের পর থেকেই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে খবর। জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে শনিবার পর্যন্ত। বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত দমকা ঝোড়ো হাওয়া এবং ও বজ্রপাতেরও পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। বুধবার দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

 অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গেও শনিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং হালকা ঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের কিছু অংশে ইতিমধ্যেই ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বিহার থেকে ওড়িশা পর্যন্ত একটি অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে, যার টানেই বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি ও ঝড়ের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

উল্লেখ্য, সোমবার বিকেল হতেই কলকাতা ঢেকে যায় কালো মেঘে। আচমকাই শুরু হয় দমকা হাওয়া। এরপরে ক্ষণিকের ঝড়-বৃষ্টি রীতিমতো তছনছ করে দেয় গোটা শহর। বহু এলাকায় ভেঙে যায় দোকানপাট, গাছ-পালা, ছিড়ে যায় ইলেকট্রিকের তার, সন্ধে বেলায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। কেবল কলকাতাতেই নয়, কয়েক মিনিটের তান্ডব চলে প্রায় গোটা রাজ্য জুড়ে। সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ ১৫ই মে সোমবারের ঝড়-বৃষ্টিতে রাজ্য জুড়ে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। জানা গিয়েছে, গাছ পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ১ জন ও হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় বাড়ি চাপা পড়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

অন্যদিকে, আচমকা ঝড়-বৃষ্টিতে ব্যহত হয় ট্রেন চলাচলও। বন্ধ হয়ে যায় শিয়ালদহ (Sealdah) দক্ষিণ শাখা ও হাওড়া-বর্ধমান (Howrah-Burdwan) মেন লাইনের ট্রেন, যার ফলে অফিস ফেরত যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। কেবল ঝড় বৃষ্টির তান্ডবই নয়, বৃষ্টির মধ্যে আগুনের ভয়ে প্রাণ হাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আওতায় থাকা কোলাঘাট স্টেশনের যাত্রীরা।

গতকাল রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভাইরাল হয় কোলাঘাট স্টেশনের (Kolaghat Station) এক ভয়াবহ ঘটনার ভিডিও। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, ঝড়ের দাপটে একাধিক যায়গায় ওভেরহেড (Overhead) তারে গাছের ডাল এসে পড়ে। যার ফলে লেগে যায় আগুন। ঝড়ের মধ্যে তীব্র গতির হাওয়াতে সেই আগুনের ফুলকি এসে পরে রেললাইনে, বাদ যায়নি স্টেশনও। সঙ্গে শোনা যায় বিস্ফোরণের মতো বিকট শব্দ। এদিকে শর্টসার্কিটের (Short circuit) ফলে দাঁড়িয়ে যায় ট্রেন। গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে প্রাণ রক্ষার জন্য ছোটাছুটি শুরু করেন যাত্রীরা।

সোমবারের এই ঘটনায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার (South Eastern Railway Principal Chief Operations Manager) দীপককুমার ঝা (Deepakkumar Jha) জানিয়েছেন, ঝড়-বৃষ্টির কারণে তিনটি লাইন বন্ধ থাকলেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক। রাত ন’টার পর লাইনগুলো ট্রেন চলাচলের উপযুক্ত করা হয়। তবে ব্যারাকপুরে পৌনে এগারোটার সময় বাতিল করে দেওয়া হয় মাঝেরহাট থেকে রানাঘাটগামী ট্রেন। পাশাপাশি শিয়ালদহ মেন ও দক্ষিণের যাত্রীদের ভোগান্তিও ছিল রাত পর্যন্ত।