কানপুরের এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ২৮৪ কোটি, ২৩ কেজি সোনা এবং ৬০০ কেজি চন্দনকাঠের তেল-সহ আরও অনেক কিছু।
পেশায় সুগন্ধি ব্যবসায়ী পীযূষের বাড়িতে অনেক টাকার সম্পত্তি লুকোনো আছে, এই খবর পেয়েই তাঁর বাড়িতে হানা দেয় ডিজিজিআই।আমদাবাদের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব জিএসটি ইন্টেলিজেন্স (ডিজিজিআই) ২০২১ সালের ডিসেম্বরে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের ব্যবসায়ী পীযূষ জৈনের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ।
প্রায় ১২০ ঘণ্টা ধরে ম্যারাথন তল্লাশি এবং ৫০ ঘণ্টা জেরার পর গ্রেফতার করা হয় ব্যবসায়ী পীযূষকে। তাঁর বাড়ি থেকে যে পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়, তা গুনতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়েছিল ডিজিজিআই কর্তাদের। অভিযান শুরু করেই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ১৭৭ কোটি। একই সঙ্গে ২৩ কেজি সোনা এবং ৬০০ কেজি চন্দনকাঠের তেল তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে।
বাড়ি ছাড়াও কানপুর এবং কনৌজের বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কে থাকা পীযূষের অ্যাকাউন্টেও বিপুল সম্পত্তির হদিস পাওয়া যায়। ১৭ কোটি নগদ টাকা উদ্ধার করা হয় পীযূষের কনৌজের কারখানা থেকে। অভিযান শেষে পীযূষের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ১৯৫ কোটিতে। উদ্ধার হওয়া মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ২৮৪ কোটি টাকা। পরে দুবাইয়েও পীযূষের দু’টি সম্পত্তির হদিস পান তদন্তকারী আধিকারিকরা।
পীযূষের বিরুদ্ধে মোট ৩১ কোটি টাকা আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। তার বিরুদ্ধে ভুয়ো বিল বানিয়ে জিনিস পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল। ভুয়ো সংস্থার নামে বিল তৈরির অভিযোগও ছিল।
ডিজিজিআই জানিয়েছিল, এর আগে কোনও তল্লাশি অভিযান চালিয়ে এত পরিমাণ সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়নি। তিনি আরও জানান, জেরার মুখে পীযূষ স্বীকার করে নেন, তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ জিএসটি ছাড়া পণ্য বিক্রি করে আয় করা।
পীযূষের বাবা মহেশচন্দ্র জৈন পেশায় রসায়নবিদ ছিলেন। তাঁর কাছ থেকেই পীযূষ এবং তাঁর ভাই অম্বরীশ সুগন্ধি তৈরির পদ্ধতি রপ্ত করেছিলেন। তবে মাত্র ১৫ বছরেই ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় জৈন পরিবারের। কানপুর থেকে সুগন্ধির ব্যবসাকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন দেশের অন্য প্রান্তেও। স্থানীয়রা দাবি করেন, পুরনো একটা স্কুটারে করে ঘোরাফেরা করতেন পীযূষ। দু’টি গাড়ি থাকলেও তা বার করতেন কালেভদ্রে। সচরাচর কোনও অনুষ্ঠানে যেতেন না তিনি। গেলেও পরনে থাকত পাজামা আর ফতুয়া। পীযূষের বাড়ি থেকে এত টাকা উদ্ধার করার খবর পেয়ে অবাক হয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যে, তাঁর বাড়িতে এত টাকা লুকনো আছে।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গে এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে নেমে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়-ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইডি। ইডি সূত্রে দাবি করা হয়, অর্পিতার ফ্ল্যাটে মিলেছে নগদ ২১ কোটি টাকারও বেশি। মিলেছে বহুমূল্যের গয়না এবং বৈদেশিক মুদ্রা। এই টাকার পরিমাণ দেখে চোখ কপালে উঠেছে রাজ্যবাসীর। তবে এই ঘটনার কয়েক মাস আগে কানপুরের এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে যে পরিমাণ সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছিল, তার কাছে অর্পিতার বাড়ি থেকে পাওয়া সম্পত্তি খুবই সামান্য।
- Related topics -
- দেশ
- ক্রাইম
- কানপুর
- ইনকাম ট্যাক্স
- আয়কর দপ্তর