দেশ

Independence Day | লালকেল্লার কড়া নিরাপত্তায় ব্যবহার এআই! 'সেলফি' তুলেই ১০হাজার জিততে পারেন আপনি!

Independence Day |  লালকেল্লার কড়া নিরাপত্তায় ব্যবহার এআই! 'সেলফি' তুলেই ১০হাজার জিততে পারেন আপনি!
Key Highlights

স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে কড়া নিরাপত্তা বলয়ে গোটা দিল্লি। স্বাধীনতা দিবসে 'সেলফি' প্রতিযোগিতার ঘোষণা কেন্দ্র সরকারের। জিততে পারলেই ১০,০০০ টাকা পাবেন অংশগ্রহণকারী।

৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস (77th Independence Day) উদযাপনের জন্য সেজে উঠেছে গোটা ভারত (India)। কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়েছে গোটা দিল্লি (Delhi)। আগামীকাল, ১৫ই অগাস্ট লালকেল্লা (Red Fort ) চত্বরে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi )। যার ফলে  হাই অ্যালার্ট (High Alert) জারি করা হয়েছে রাজধানীতে। জানা গিয়েছে, লালকেল্লা চত্বর ও লাগোয়া চত্বরে নির্দিষ্ট এলাকা জুড়ে ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি, নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাও (Artificial Intelligence)।

 মঙ্গলবার দিল্লির লালকেল্লায় তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তারপরই শুরু হবে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান। ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী (India Independence Day Speech)। সম্পর্কিত মহলের অনুমান, স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে ব্রিটিশ আমলের দাসত্বের চিহ্ন মুছে ফেলতে ইন্ডিয়া গেটে (India Gate) নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর (Netaji Subhash Chandra Bose) মূর্তি স্থাপন থেকে বাদল অধিবেশনের শেষদিনে সংসদে আইপিসি (IPC), সিআরপিসি-র (CRPC) পরিবর্তে নতুন তিনটি আইনের বিল পেশ সকল বিষয়েই ভাষণ দেবেন মোদি। জানা গিয়েছে, এবারের লালকেল্লার প্রধান সমারোহ অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি হিসেবে ১৮০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাতে গ্রামপ্রধান থেকে শুরু করে শিক্ষক, নার্স, কৃষক, জেলে, সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রজেক্টে কাজ করেছেন এমন শ্রমিক, খাদিতে কাজ করছেন শ্রমিক, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক, কিসান সম্মান নিধি পান এমন দুই ব্যক্তিসহ কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কর্মরত কর্মীরাও রয়েছেন।

তবে, স্বাধীনতা দিবসের সকল প্রস্তুতির মধ্যেই সন্ত্রাসবাদী হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রানুযায়ী,  পাকিস্তান মদতপুষ্ট লস্কর-ই-তৈবা এবং জইশ-ই-মহম্মদ গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ভারতে হামলা চালানোর ছক কষা হচ্ছে। ইন্টালিজেন্স মারফত এই খবর পাওয়া মাত্রই হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে গোটা দিল্লি জুড়ে। শহরজুড়ে একাধিক এলাকায় নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন জনবহুল এলাকা, রেল স্টেশন, বিমানবন্দর এবং লালকেল্লা চত্বরে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসেই স্বাধীনতা দিবসের এই হামলার পরিকল্পনার তথ্য পেয়েছিল ভারতীয় ইন্টালিজেন্স এজেন্সিগুলি। গত মে মাসে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়। যেখানে উল্লেখ করা হয়, লস্কর-ই-তৈবার গোষ্ঠী ১৫ই অগাস্টে দিল্লিতে একটি বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেছে। দিল্লির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, রেল স্টেশন, দিল্লি পুলিশ হেডকোয়ার্টার এমনকী ন্যাশনাল ইন্টালিজেন্স এজেন্সির (National Intelligence Agency) দফতরে হামলা চালানোর ছক কষা হয়েছে বলে অনুমান।

স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য এবং ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণের নিরাপত্তার জন্য লালকেল্লা চত্বর ও লাগোয়া চত্বরে নির্দিষ্ট এলাকা জুড়ে ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ট্রাফিক বন্ধ থাকবে।ইতিমধ্যেই গোটা শহরজুড়ে নজরদারি বাড়িয়েছে দিল্লি পুলিশ। পেট্রোল ভ্যানের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ১০ হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে শহরজুড়ে। পাশাপাশি ১০০ সিসিটিভি ক্যামেরা, অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম (Anti-Drone System) লাগানো হয়েছে লালকেল্লা চত্বরে। এছাড়াও স্বাধীনতা দিবসের নিরাপত্তার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা নিম্নরূপ।

  • সোমবার থেকে দিল্লিতে রাস্তায় মোতায়েন থাকবেন ১০ হাজার পুলিশকর্মী।
  • গাড়িতে নাকাতল্লাশি শুরু হয়েছে রবিবার থেকেই। রাস্তায় রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে শুরু হয়েছে তল্লাশি। ঘন ঘন চালানো হচ্ছে টহলদারি।
  • ১৫ই আগস্ট লাল কেল্লা চত্বরে প্রধানমন্ত্রী যতক্ষণ থাকবেন ততক্ষণ গোটা এলাকায় থাকবে 'নো ফ্লাই জোন' (No Fly Zone)।
  • গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কমান্ডো মোতায়েন করা হচ্ছে। বেশ কিছু বাজার এলাকা, মেট্রো স্টেশন, বিমানবন্দরে মোতায়েন থাকছে কমান্ডো বাহিনী।
  • এনএসজি (NSG), এসপিজি (SPG) কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী এবং দিল্লি পুলিশও মোতায়েন থাকছে।
  • নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার হচ্ছে এআই (AI) প্রযুক্তি। অটোমেটিক ফেসিয়াল রেকগনিশন সিস্টেম (Facial Recognition Systems) রাখা হয়েছে  লালকেল্লা চত্বরে।
  • নিরাপত্তার খাতিরে থাকছে এয়ার-ডিফেন্স গান, স্নাইপার।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসের পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী। মেজর নিকিতা নায়ার (Major Nikita Nair) এবং মেজর জেসমিন কওর (Major Jasmine Kaur) জাতীয় পতাকা উত্তোলনে প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করবেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সঙ্গে সঙ্গে, ‘লাইন অ্যাস্টার্ন ফর্মেশনে’ (Line Astern Formation) ভারতীয় বায়ুসেনার দুটি অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার মার্ক-৩ ‘ধ্রুব’ (Helicopters Mark-3 'Dhruv') অনুষ্ঠানস্থলে ফুলের পাপড়ি বর্ষণ করবে বলে জানা গিয়েছে।

তবে, ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসের অন্যতম আকর্ষণ সরকার আয়োজিত সেলফি প্রতিযোগিতা (77th Independence Day Selfie Contest)। যাতে জিতলে মিলতে পারে প্রচুর পরিমাণ অর্থ পুরস্কার। মোদী সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং উদ্যোগের বিষয়ে দিল্লির ১২টি জায়গায় ১২টি ‘সেলফি পয়েন্ট’ স্থাপন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সেলফি পয়েন্টগুলিতে সাধারণ মানুষ সেলফি তুলে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সামিল হতে পারবেন। সরকারের মাইগভ (MyGov) পোর্টালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি অনলাইন সেলফি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। ১৫ই থেকে ২০ই অগস্টের মধ্যে এই পোর্টালে, সেলফি পয়েন্টগুলিতে তোলা ছবি পোস্ট করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। প্রতিটি সেলফি পয়েন্টে তোলা একটি করে সেলফি বেছে নিয়ে মোট ১২ জনকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হবে। জানা গিয়েছে, এই বিজয়ীরা প্রত্যেকেই ১০,০০০ টাকা করে অর্থ পুরস্কার পাবেন কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে।

পাশাপাশি, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে ‘হরঘর তিরাঙ্গা’ (Harghar Tiranga) প্রচারও চালু করেছে সরকার। ১৩ই থেকে ১৫ই অগস্ট পর্যন্ত এই প্রচারে অংশ নিতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রচারের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলির প্রোফাইল ছবি বদলে, ভারতের জাতীয় পতাকার ছবি দিয়েছেন। দেশের প্রত্যেক নাগরিককেও, তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের ডিসপ্লে পিকচার (Display Picture) বদলে জাতীয় পতাকার ছবি দিতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।