রাজনৈতিক

Panchayat Election 2023 | কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করলো না সুপ্রিম কোর্ট!

Panchayat Election 2023 | কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করলো না সুপ্রিম কোর্ট!
Key Highlights

পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলো কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায় বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। নওশাদকে কেন্দ্রিয় নিরাপত্তার নিৰ্দেশ।

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election 2023) নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta Highcourt) রায়ই বহাল রাখলো সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। পঞ্চায়েত ভোটে মোয়াতেন করতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force)। শীর্ষ আদালতের এই রায়ে ধাক্কা খেলো রাজ্য সরকার। পাশাপাশি ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক। নওশাদ সিদ্দিকিকে (Nawshad Siddique) কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়ার অনুমতি।

বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। কেবল মনোয়ন পত্র জমা দেওয়া নিয়েই খড়গ্রাম (Khagram), চোপড়া (Chopra), ভাঙড়ে (Bhangar) একের পর এক বোমাবাজি, গোলাগুলি এমনকি মৃত্যুর খবর শিরোনামে উঠে আসছিলো বারবার। এই পরিস্থিতি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তবে রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার (West Bengal Government)। তাদের দাবি ছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার রায় পুনর্বিবেচনা করা উচিত। শীর্ষ আদালতে এই মামলা যাওয়ার পর আজ অর্থাৎ ২০ই জুন, মঙ্গলবার ওই ডেকেই স্বীকৃতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

এদিন শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়, স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে হাইকোর্টের সেই নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবেন সুপ্রিম কোর্ট। তাই কমিশন ও রাজ্যের স্পেশাল লিভ পিটিশন (Special Leave Petition) খারিজ করা হয়েছে বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নাগরত্ন (Supreme Court Justice Nagarathna)।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের মামলার শুনানিতে এদিন রাজ্যের পক্ষ থেকে সওয়াল ছিল, গত ১৩ জুন প্রথম নির্দেশ দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১৫ জুন ফের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই সওয়ালের প্রেক্ষিতে বিচারপতির পাল্টা প্রশ্ন, এই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির কী পরিবর্তন হয়েছে? এরপর রাজ্য জানায়, ভোটের জন্য ইতিমধ্যেই ৫ ভিন রাজ্য থেকে পুলিশ চাওয়া হয়েছে। এর উত্তরে বিচারপতির পাল্টা প্রশ্ন, তাহলে রাজ্যের কাছে পর্যাপ্ত পুলিশ নেই? এরপর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে ঘিরে যে অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে সেই সম্পর্কে বিচারপতির কটাক্ষ, নির্বাচন করানো মানে হিংসার লাইসেন্স দেওয়া নয়। হিংসা কখনও নির্বাচনের সহযোগী হতে পারে না।

অন্যদিকে, নওশাদ সিদ্দিকিকেও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা (Calcutta High Court Judge Rajashekhar Mantha)। উল্লেখ্য, খুন হওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন আইএসএফ (ISF) বিধায়ক। নাম না করেই তিনি বলেন, যে কোনও সময়ে তার ওপর হামলা করা হতে পারে। যার ফলে নিরাপত্তা চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নওশাদ। এরপর আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তাকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এদিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, রাজ্যের বিশাল সংখ্যক বিধায়ক নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। আর বর্তমান নির্বাচনের পরিবেশে ভাঙড়ের বিধায়কের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়ার প্রয়োজন আছে। ফলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নওশাদ সিদ্দিকির থ্রেট (Threat) বিবেচনা করে নিরাপত্তা দিতে হবে।

রাজ্যের বিশাল সংখ্যক বিধায়ক নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। আর বর্তমান নির্বাচনের পরিবেশে ভাঙড়ের বিধায়কের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়ার প্রয়োজন আছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর (নওশাদ সিদ্দিকি) থ্রেট বিবেচনা করে এই নিরাপত্তা দিতে হবে।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা

বিচারপতি মান্থার এই নির্দেশের পর আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানিতে নওশাদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করা হবে বলে জানানো হয়। প্রসঙ্গত, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করে তোলার জন্য তৎপর কলকাতা ও শীর্ষ আদালত। যার ফলেই ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার রায়ে বহাল থাকলো সুপ্রিম কোর্ট। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, প্রতি জেলার জন্য ২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিতে পারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission)। জানা যাচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কপি হাতে পেলেই এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আবেদন করা হবে। গতকালই অর্থাৎ সোমবার সন্ধ্যায় কমিশনের অফিস থেকে বেরোনোর সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা (State Election Commissioner Rajeev Sinha) বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরপরই আজ কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে বহাল রাখলো শীর্ষ আদালত।