Panchayat Election 2023 | রাজ্যে আরও ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী! মোট ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী নিয়ে কাজ শুরু কমিশনের!
রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায় রাজ্যে আসতে চলেছে আরও ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। মানুষের আস্থা পাওয়ার দায়িত্ব কমিশনকে নেওয়ার পরামর্শ হাইকোর্টের।
আগামী ৮ই জুলাই এক দফায় রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election 2023)। ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বহু জলঘোলা হয়েছে আগেই। অবশেষে নির্বাচনের জন্য কোথায়, কোন এবং কত বাহিনী নিয়োগ হবে তা নির্বাচন কমিশনকে জানাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য আগেই মোতায়েন করা হয়েছিল ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force)। যারা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় রুট মার্চ করতে শুরু করেছেন। এরপর উল্লেখ্য,গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার চিঠি লিখে জানায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে (State Election Commission) জানিয়েছে, ভোটের জন্য আসতে চলেছে আরও ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে এখনও বাকি ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বাজতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য (West Bengal)। নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া নিয়েই শুরু হয় বোমাবাজি,গোলাগুলি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ইতিমধ্যেই সংঘর্ষের কারণে রাজ্যে ১৯ দিনে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলার নানা প্রান্তে গুলি, বোমা চলছে, ঝরছে রক্ত। এই অবস্থায় ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। তবে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। যদিও হাইকোর্টের রায়তে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে। এরপর ২২ কোম্পানি ও পরে আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোটের ১০ দিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী আসতে চলেছে রাজ্যে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কমিশনকে দেওয়া চিঠি অনুযায়ী, ১১ জেলায় পাঠানো হচ্ছে সিআরপিএফ, ৬ জেলায় আসছে সিআইএসএফ, ৯ জেলায় আসছে বিএসএফ। দুই ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম ও নদিয়ায় সিআরপিএফ পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, রাজ্যের ২২টি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে মুর্শিদাবাদে (Murshidabad)। এখানে মোট ২৭ কোম্পানি বাহিনী বরাদ্দ হয়েছে। তারপরেই বেশি বাহিনী থাকবে বাঁকুড়ায় (Bankura)। এই জেলায় মোতায়েন হয়েছে ২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। তারপরে উত্তর ২৪ পরগনায় (North 24 Parganas) এখানে মোতায়েন করা হয়েছে ২৩ কোম্পানি বাহিনী। এছাড়াও, বীরভূম (Birbhum), দক্ষিণ ২৪ পরগণা (South 24 Parganas), নদিয়া (Nadia), পুরুলিয়াতেও (Purulia) থাকছে ভাল রকমের নিরাপত্তা। এখনও পর্যন্ত কোন জেলায় কত বাহিনী মোতায়েন হয়েছে, তার তালিকা-
- আলিপুরদুয়ার - মোট ৭ কোম্পানি (এসএসবি -৬ , আইটিবিপি-১)
- বাঁকুড়া- মোট ২৫ কোম্পানি (সিআরপিএফ-১১, সিআইএসএফ-৪ ও এসএপি- ১০)
- বীরভূম- মোট ২০ কোম্পানি (সিআরপিএফ-৮, আইটিবিপি- ১১ ও আরপিএফ-১)
- কোচবিহার- মোটা কোম্পানি ১৫ (বিএসএফ-১০, আইটিবিপি-১ ও আরপিএফ ৪)
- দক্ষিণ দিনাজপুর- মোট কোম্পানি (বিএসএফ -৭)
- দার্জিলিং- মোট কোম্পানি ৬ (বিএসএফ -১ এসএপি- ৬)
- কালিম্পং- মোট ৫ কোম্পানি (আইটিবিপি-১, এসএসবি-৪)
- হুগলি- মোট কোম্পানি ১৩ (সিআরপিএফ- ২, এসএসবি-১ ও এসএপি- ১০)
- হাওড়া- মোট ১১ কোম্পানি (বিএসএফ ১ ও এসএপি- ১০)
- জলপাইগুড়ি- মোট ১১ (বিএসএফ-৩, এসএসবি-২, আইটিবিপি-৫ ও আরপিএফ- ১)
- ঝাড়গ্রাম- মোটা ১১ কোম্পানি (সিআরপিএফ- ৬, বিএসএফ-১১)
- মালদা- মোট ১৮ কোম্পানি (সিআরপিএফ- ৪, বিএসএফ- ৭, সিআইএসএফ-২, এসএসবি-৫)
- মুর্শিদাবাদ- মোট ২৭কোম্পানি (সিআরপিএফ-৩, বিএসএফ-১২, সিআইএসএফ-২, এসএসবি-১, আইটিবিপি- ২, আরপিএফ- ৭)
- নদিয়া- মোট ১৯ কোম্পানি (সিআরপিএফ-৬, বিএসএফ-৭, সিআইএসএফ-২, এসএসবি-২, আইটিবিপি-২)
- উত্তর ২৪ পরগনা- মোট ২৩ কোম্পানি (সিআরপিএফ- ৩, বিএসএফ-১, সিআইএসএফ-৯ ও এসএপি- ১০)
- পশ্চিম বর্ধমান- মোট ৯ কোম্পানি (এসএসবি-১, আরপিএফ-৩, এসএপি-৫)
- পশ্চিম মেদিনীপুর- মোট ২০ কোম্পানি (সিআরপিএফ- ১, আরপিএফ-৪, এসএপি- ১৫)
- পূর্ব বর্ধমান- মোট ২১ কোম্পানি (এসএসবি-১, এসএপি-২০)
- পূর্ব মেদিনীপুর- মোট কোম্পানি ১৯ (সিআরপিএফ- ৪, এসএপি- ১৫)
- পুরুলিয়া- মোট ২১ কোম্পানি (সিআরপিএফ- ৩, সিআইএসএফ-৬,
- এসএসবি-৬, আইটিবিপি-১ ও এসএপি-৫)
- দক্ষিণ ২৪ পরগনা- মোট ১৯ কোম্পানি (সিআরপিএফ- ৫, বিএসএফ-৪, এসএপি- ১০)
- উত্তর দিনাজপুর- মোট ফোর্স ১০ (বিএসএফ ১০)
২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আর ১০ দিন বাকি। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে জটিলতা অব্যাহত। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ইস্যুতে কমিশনের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি উদয় গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা চলছিল। এদিন অর্থাৎ বুধবারের শুনানি শেষে আদালত কমিশনের কাজে কোনও হস্তক্ষেপ করে না।
বরং পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেবল মনোনয়ন পর্বেই কমিশনের বিরুদ্ধে এক গুচ্ছ অভিযোগ জমা পড়েছে। সেক্ষেত্রে কমিশনকে আদালতের পরামর্শ, মানুষের আস্থা এবং ভরসা পাওয়ার মতো কাজ করতে হবে কমিশনকে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নূন্যতম প্রয়োজন, তারা কীভাবে যাতায়াত করবেন, কোথায় থাকবেন সবই দেখতে হবে নির্বাচন কমিশনকেই।
- Related topics -
- রাজনৈতিক
- প্রতিরক্ষা
- প্রতিরক্ষা বাহিনী
- পশ্চিমবঙ্গ সরকার
- কলকাতা হাইকোর্ট
- সুপ্রিম কোর্ট
- নির্বাচন কমিশনার
- পঞ্চায়েত নির্বাচন
- নির্বাচন
- নির্বাচন কমিশন
- কেন্দ্রীয় সরকার
- কেন্দ্রীয় বাহিনী
- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক
- রাজ্য