বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

Aditya L1 Mission | পৃথিবীর টান ছেড়ে সূর্যের পথে আদিত্য এল-১! এখন থেকেই শুরু ভারতের প্রথম সৌরযানের তথ্য সংগ্রহ!

Aditya L1 Mission | পৃথিবীর টান ছেড়ে সূর্যের পথে আদিত্য এল-১! এখন থেকেই শুরু ভারতের প্রথম সৌরযানের তথ্য সংগ্রহ!
Key Highlights

১৯সে সেপ্টেম্বর পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের মায়া কাটিয়ে সূর্যের পথ ধরল আদিত্য এল-১। তার আগেই সফলভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেছে আদিত্য এল-১ মিশন।

পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে এবার সূর্যের কাছে মায়াজালে প্রবেশ করলো আদিত্য এল ১ (Aditya L1)। আজ, ১৯সে সেপ্টেম্বর, পরিকল্পনা মাফিক পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের টান পেরিয়ে সূর্যের পথ ধরলো আদিত্য এল ১ মিশন (Aditya L1 mission)। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (Indian Space Research Organization)  বা ইসরো (ISRO) জানিয়েছে, ভারতের প্রথম সৌরযানের পঞ্চমবার কক্ষপথ পরিবর্তন সফলভাবে হয়েছে। ১৯ সে সেপ্টেম্বর, রাত ২টো নাগাদ  সূর্যযানের কক্ষপথ বদল করা হয়।      

ইসরো জানিয়েছে, মরিশাস, বেঙ্গালুরু এবং পোর্ট ব্লেয়ারে ইসরোর ‘গ্রাউন্ড স্টেশন’ রয়েছে। আর সেখান থেকেই সৌরযান আদিত্য এল-১ কে (Aditya L1) পর্যবেক্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা। সোমবারের মধ্যরাতটি ভারতের প্রথম সৌর-অভিযান আদিত্য এল ১ মিশন (Aditya L1 mission) এর জন্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রান্স-ল্যাগরেজিয়ান পয়েন্ট ১ ইনসার্শন (TL1) প্রয়োগ করল ইসরো। অর্থাৎ সোমবার রাতেই পৃথিবীর মায়া সম্পূর্ণ ভাবে ত্যাগ করল আদিত্য-এল ১।  এরপর ঠিক চার মাস পরে সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে এল-১ পয়েন্টে পৌঁছবে আদিত্য এল-১ (Aditya L1)। 

গত ২রা সেপ্টেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিক্যাল বা পিএসএলভি- সি৫৭ ( PSLV-C57) রকেটে চেপে সূর্যের দিকে পাড়ি দেয় ইসরোর প্রথম সূর্যযান। উৎক্ষেপণের এক ঘণ্টা ৫ মিনিট পর সফলভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপিত হয় মহাকাশযানটি। এরপর পৃথিবীর চারিপাশে উপবৃত্তাকার পথে ঘুরতে শুরু করেআদিত্য। ইসরো জানিয়েছে, ট্রান্স-ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান পয়েন্টের মধ্য দিয়ে কক্ষপথ পরিবর্তন করেছে আদিত্য এল ১। এরপর ১১০ দিন ধরে আদিত্য এল ১ পাড়ি দেবে সূর্যের দিকে।  

উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই  নানা তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু  করে দিয়েছে আদিত্য এল ১ (Aditya L1)। পৃথিবী থেকে ৫০ হাজার কিলোমিটার দূরে পৌঁছে পৃথিবীর আশপাশে কী ধরণের কী ধরনের উপাদান রয়েছে, আপাতত সেই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে চলেছে আদিত্য এল ১।  ইসরো জানিয়েছে, কাজ শুরু করেছে সৌরযানের মধ্যে থাকা ‘স্টেপ’ প্রযুক্তি। মূলত সৌরজগতের নানা উপাদান নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালানোই এই স্টেপের কাজ। আদিত্য এল ১-এর গায়ে মোট ছ’টি সেন্সর রয়েছে, যার সাহায্যে সূর্যের কাছাকাছি থাকা আয়ন ও ইলেকট্রন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। সেই তথ্য বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হবে ইসরোর কাছে। 

 তবে আদিত্য এল ১ মিশনের (Aditya L1 mission) আসল পরীক্ষা সোলার করোনাকে নিয়ে।  করোনা হল সূর্যের একেবারের বাইরের স্তর। আমাদের পৃথিবীর যেমন অ্যাটমস্ফিয়ার আছে, সূর্যের তেমন অ্যাটমস্ফিয়ার আছে। সূর্যের পিঠ (সারফেস) ও তার উপরের স্তর করোনার মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য অনেক। সারফেসের গড় তাপমাত্রা ৫৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। কোথাও ৫৮০০ ডিগ্রি আবার কোথাও ৫২০০ ডিগ্রি সেলসিয়ারের কাছাকাছি। করোনার তাপমাত্রা সেখানে প্রায় ২ লক্ষ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। কখনও তারও বেশি। এই তাপমাত্রার তারতম্য হতে থাকে সবসময়। করোনা এখন যেভাবে দেখা হবে, ঠিক পর মুহূর্তেই তার রং, আকার বদলে যাবে। সূর্য কিন্তু তার করোনাকে সবার সামনে প্রকাশ করে না। একে দেখতে হলে সূর্যের প্রচন্ড তেজকে ঢাকা দিতে হয়। সেটা খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। তার জন্য হয় সূর্যের কাছাকাছি যেতে হবে, নয়ত সোলার অজারভেটরিতে কৃত্রিম উপায় চেষ্টাচরিত্র করতে হবে। আদিত্য এল-১ মিশনে (Aditya L1 Mission) ইসরোর সৌরযানটি  সূর্যের কাছে গিয়েই এই করোনা নিয়ে পরীক্ষা করবে।