Covid JN.1 in India | ভারতে কোভিডের নয়া ভ্যারিয়েন্ট জেএন-১ এর প্রকোপ! রাজ্যগুলিকে নির্দেশিকা দিলো কেন্দ্র! ফের কি ফিরছে কোভিড বিধি?
ভারতে করোনাভাইরাসের নতুন রূপ জেএন-১ বাড়াচ্ছে চিন্তা। উৎসবের মরশুমে জেএন-১ নিয়ে রাজগুলিকে নির্দেশিকা দিলো কেন্দ্র। দেখুন কী কী নির্দেশ মানতে হবে এবং সুস্থ্য থাকতেই বা কী করবেন।
শীতে উৎসবের মরশুমে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ভারতে করোনাভাইরাসের নতুন রূপ (New variant of coronavirus in India) জেএন-১! ভারতে মিলেছে এই নয়া ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ। পাশাপাশি ক্রমশ পজিটিভ হচ্ছে আক্রান্তদের কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট (Covid Test Report)। এমতো অবস্থায় রাজ্যগুলিকে কড়া নির্দেশিকা দিলো কেন্দ্র। নতুন গাইডলাইন দিয়ে সব রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবদের চিঠি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। কেন্দ্রের গাইডলাইন নিয়ে স্বাস্থ্যভবনে বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে বলে খবর।
সম্প্রতি খবরের শিরোনামে এসেছে কোভিড ১৯ করোনভাইরাস কেস কেরালা (Covid 19 coronavirus cases in Kerala) ও উত্তরপ্রদেশের খবর। ইতিমধ্যেই কেরলে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে চারজনের এবং উত্তরপ্রদেশে একজনের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, মৃতদের শরীরে কোভিডের সাব-ভেরিয়েন্ট জেএন.১ এর সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৩৩৫ জন রোগী কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৭০১। ফলে বেশ চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে ভারতে করোনাভাইরাসের নতুন রূপ (New variant of coronavirus in India)। এছাড়াও সামনেই রয়েছে বড়দিন-নতুন বছরের উৎসব। এই সময়ে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে সতর্ক করে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে।
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন-১ সম্পর্কে কেন্দ্রের নির্দেশিকায় কী জানানো হয়েছে?
- নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে,বিভিন্ন উৎসবে ভিড়ের দিকে বাড়তি নজরদারি রাখতে হবে। জনস্বাস্থ্যর দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে যাতে নতুন করে সংক্রমণ না ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমিত এলাকায় কোভিড নিয়ম ফের নিশ্চিত করতে হবে।
- নিয়মিত জেলাভিত্তিক আক্রান্তদের রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট (Covid Test Report) এর ক্ষেত্রে আরও বেশি যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষত, আক্রান্তের শরীরে কোভিডের নতুন কোনও সংক্রমণের নমুনা রয়েছে কিনা, এ ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- শ্বাসকষ্ট সংক্রান্ত সংক্রমণে লাগাম দেওয়ার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে।
- ভারতে ইনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza in India) লক্ষণের মতো করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের লক্ষণ অনেকটা এক" ফলে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সংক্রমণ (Influenza) এবং মাত্রাতিরিক্ত শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা রাজ্যের কোথায় কোথায় ঘটছে তার পূর্ণাঙ্গ হিসেব রাখতে বলা হয়েছে।
- RT-PCR-এর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। যে সংখ্যায় বলা হয়েছে সেই সংখ্যায় অ্যান্টিজেন টেস্টও করতে বলা হয়েছে।
করোনা মহামারী শুরুর ২ বছর পর চলতি বছরের ৩১ মার্চ থেকে কোভিড প্রোটোকলের যাবতীয় বিধিনিষেধ সরকারিভাবে তুলে নিয়েছিল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে এ ব্যাপারে প্রতিটি রাজ্যকে নির্দেশও পাঠানো হয়েছিল। তবে সাড়ে আটমাসের মাথায় ১৮ই ডিসেম্বর ফের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যগুলিকে জানানো হল, কোভিড নিয়ম মেনে চলতে হবে। আট দফা নির্দেশিকা মেনে চলার কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পাঠানো চিঠিতে। সব রাজ্যগুলিকে কোভিড পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। ফের ফিরিয়ে আনতে বলা হচ্ছে প্রতিদিনের মনিটরিং জেলা ভিত্তিক SARI এবং ILI কেস কতগুলো হচ্ছে সেগুলি নিয়ে মনিটরিং করতে বলা হয়েছে কেন্দ্রের নির্দেশিকায়। পাশাপাশি কোভিড পজিটিভ হলে সেগুলি ইনসাকগ (Insacog) ল্যাবরেটরিতে জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য পাঠাতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শীতকালে সর্দি-কাশি, ঠান্ডা লাগার সমস্যা নতুন নয়। তবে এই ধরনের সমস্যার উৎস যে শুধু সাধারণ ঠান্ডা লাগা, সেটা প্রথমেই ধরে নেওয়া ঠিক হবে না। বিশেষ করে যেখানে কোভিড আতঙ্ক নতুন করে ছড়াচ্ছে, সেখানে সর্দি-কাশি হলে তা পাত্তা না দিলে বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই ঝুঁকি এড়াতে নতুন করে কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রের তরফ থেকে।
সুস্থ্য থাকতে কী করবেন?
- ভারতে ইনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza in India) ও কোভিডের সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে উৎসবের মরশুমেই করোনা নিয়ে চিন্তার মেঘ ঘনাচ্ছে দেশে। এই সময় শীতে ঝুঁকি এড়াতে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
- বাসে, ট্রামে, মেট্রোতে মাস্ক ব্যবহার করতে পারলে ভাল। যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
- খাওয়ার আগে এবং বাইরে থেকে ফিরে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা জরুরি।
- সর্দি-কাশিতে ভুগছেন এমন কারও থেকে দূরত্ব বজায় রাখার কথাও বলা হচ্ছে। সর্দি, জ্বর, কাশি যদি তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয়, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
উল্লেখ্য।, কোভিড নিয়ে দেশগুলিকে কড়া নজরদারি করার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (World Health Organization)। পাশাপাশি জিনোম সিকোয়েন্সের তথ্য শেয়ার করার জন্য বলা হয়েছে। শুধু ভারত নয়, বিশ্বজুড়েই নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট। ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুরে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। হাসপাতালগুলিতে বেড নেই। তথৈবচ হাল আইসিসিইউতেও। সংক্রমণ ঠেকাতে তাই ফের মাস্ক বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পাশাপাশি বিমানবন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে সকলের মাস্ক পরা এবং কোভিডের দুটি টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সিঙ্গাপুরের দেখানো পথে হেঁটে মাস্ক বাধ্যতামূলক করেছে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া বিমানবন্দরেও। একই সঙ্গে করোনা মোকাবিলায় আগের মতো দূরত্ববিধি মেনে চলা, বারবার হাত স্যানিটাইজ করার আবেদন জানানো হয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকারের তরফে।