লাইফস্টাইল

Mouth Ulcer | মুখের ঘা নিমেষের মধ্যে ঠিক করুন ঘরোয়া পদ্ধতিতে!

Mouth Ulcer | মুখের ঘা নিমেষের মধ্যে ঠিক করুন ঘরোয়া পদ্ধতিতে!
Key Highlights

মাউথ আলসার হলে ঘরোয়া পদ্ধতিতেই নিরাময় করা সম্ভব ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে।

মাউথ আলসার (Mouth Ulcers) বা মুখের ঘা হল ছোট ছোট ঘা যা মুখের  মাড়ি, ঠোঁট, গাল বা তালুতে হয়ে থাকে। এগুলি "ক্যাঙ্কার সোর" (Canker Sores) বা "অ্যাফথাস আলসার"  (Aphthous Ulcers) নামেও পরিচিত যার অর্থ "আগুন লাগানো" (On Fire)। এই ধরণের ঘা হলে খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে জল খেতে গেলেও উঠে যায় নাভিশ্বাস।

সাধারণত মাউথ আলসার ছোটখাটো আঘাত, হরমোনের পরিবর্তন এবং মানসিক চাপের মতো কারণের জন্য হয়ে থাকে। হলুদ বা লাল রঙের এই ঘা হলে অসহ্য জ্বালাভাব হয়, যার ফলে কোনও রকম শক্ত বা তরল খাবার খেলেই যন্ত্রনা করে। এছাড়াও সামান্য ছোঁয়া লাগলেও ব্যথা হয় খুব।

মাউথ আলসার হওয়ার কারণ | Causes Of Mouth Ulcers :

মাউথ আলসার বা মুখের ঘা হওয়ার কোনো সঠিক কারণ নেই। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এটি দুর্ঘটনাক্রমে কামড়ানো বা খুব জোরে দাঁত ব্রাশ করার মতো ঘটনার কারণে ঘটতে পারে। এছাড়াও হরমোন পরিবর্তন (Hormonal Changes), মানসিক চাপের মতো কারণেও হতে পারে মুখের ঘা। দেখে নিন কী কারণে মাউথ আলসার হয়।

  •   ভিটামিনের ফরেক্স বি ১২ (Vitamin B12) বা আয়রনের (Iron) অভাবে।
  •   কিছু খাবারের প্রতি সংবেদনশীলতা, বিশেষ করে অ্যাসিডিক (Acidic) খাবার, মশলাদার, বা কিছু ফল ও সবজির কারণে।
  •   মহিলাদের ক্ষেত্রে তাদের মাসিক পূর্বের সিন্ড্রোম (Premenstrual Syndrome)
  •   মুখের মধ্যে সাধারণ ভাইরাল বা ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ (Viral or Fungal or Bacterial Infection) হলে।
  •   মুখের ভেতর পরিষ্কার না থাকলে।
  •   বিশ্রামের অভাবে।

মাউথ আলসার নিরাময়ের ঘরোয়া পদ্ধতি | Home Remedies For Mouth Ulcers :

ভাগ্যক্রমে মাউথ আলসার ছোঁয়াচে রোগ নয়। এমনকি কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতেই ১ বা ২ সপ্তাহের মধ্যে মুখের আলসার ঠিক করা সম্ভব। ফলে জেনে নিন আপনার বা আপনার পরিবারের কারুর মাউথ আলসার হলে কীভাবে তা ঘরোয়া পদ্ধতিতে নিরাময় করবেন।

১. নারকেল তেল | Coconut Oil :

নারকেল তেল একটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল (Antimicrobial) এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এজেন্ট (Anti-Inflammatory Agent) হওয়ার কারণে, এটি মাউথ আলসারের জন্য হওয়া ফোলাভাব এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এর জন্য একটি শুকনো পরিষ্কার তুলা নিয়ে শুদ্ধ নারকেল  তেলের মধ্যে ভিজিয়ে রাখুন। এই টেলি ভেজানো তুলোগুলি ঘাগুলির ওপর সারা রাতের জন্য রেখেদিন এবং সকালে তুলে নিন। এতে ঘা অনেকটা ঠিক হয়ে যাবে। আপনার নারকেল তেল ব্যবহার করতে যদি অসুবিধা হয় সেক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন লবঙ্গ তেলের।

২. নুন জল | Salt Water :

মুখের ঘা হলে নুন জল দিয়ে গার্গেল করলে সর্বোত্তম উপকার পাবেন। লবণাক্ত জল একটি অসমোটিক এজেন্ট (Osmotic Agent) হিসাবে কাজ করে। ব্যাকটেরিয়া দূর করতেও ব্যাপক কাজ করে নুন জলের গার্গেল। এর জন্য ১ টেবিল চামচ নুন দিয়ে এক গ্লাস গরম জলে দিয়ে দিনে অন্তত দুবার গার্গল করুন। আপনি লবণাক্ত জলকে বেকিং সোডা দিয়েও প্রতিস্থাপন করতে পারেন।

৩. তুলসী পাতা | Basil Leaves :

তুলসীর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল (Anti-Bacterial) বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন তুলসী আপনার মুখের ভিতরে জীবাণু মারার জন্য এবং মুখের আলসারের উপসর্গগুলি উপশম করতে কাজ করবে ম্যাজিকের মতো। এর জন্য সকালে ৫ থেকে ৬টি পরিষ্কার ও তাজা তুলসী পাতা চিবিয়ে তারপর জল খান। এভাবে দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ বার তুলসী পাতা খেয়ে জল খান।

৪. মধু | Honey :

মধু যুগ যুগ ধরে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হয়ে রয়েছে। ব্যাকটেরিয়ারোধী এবং প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য মধু অত্যন্ত কার্যকর। ২০১৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মধু মুখের আলসারের আকার, ব্যথা এবং ঘা কমাতে উল্লেখযোগ্যভাবে কাজ করে। এর জন্য প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ বার মুখের ঘায়ের অংশে মধু লাগিয়ে রাখুন।

এছাড়াও মুখের ঘা থেকে রক্ষা পেতে সুষম খাদ্য গ্রহণ করার চেষ্টা করুন, এড়িয়ে চলুন খুব তেল এবং মশলাদার খাবার। এছাড়াও মুখের ভেতর পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। মাউথ আলসার হলে চেষ্টা করুন খিচুড়ি, দই, কলা, পেঁপে, সেদ্ধ ডিম, পনির ইত্যাদির মতো নরম খাবার খাওয়ার।