Kaliaganj Case in WB | কালিয়াগঞ্জ-কাণ্ডে বিজেপিকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর! রিপোর্ট চাইলেন রাজ্যপাল!
কালিয়াগঞ্জ-কান্ড নিয়ে উত্তাপ রাজ্য জুড়ে। বিজেপির চক্রান্ত করা ঘটনা, নবান্নে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিজি ও মুখ্যসচিবের কাছ থেকে রিপোর্ট চাইলেন রাজ্যপাল।
নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত কালিয়াগঞ্জ (Kaliaganj Rape Case)। এবার এই ঘটনা প্রসঙ্গে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কালিয়াগঞ্জ-কাণ্ডে উত্তেজনা এবং পুলিশকে মারধরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনা প্রেক্ষিতে তীব্র নিন্দার তীর বিজেপির (BJP) দিকে। ঘটনায় দিল্লির সংযোগ রয়েছে বলেও তোপ দাগলেন রাজ্যের শাসক দল।
শুক্রবার কালিয়াগঞ্জে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। ঘটনার প্রতিবাদে বঙ্গের নানান প্রান্তে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে গেরুয়া শিবির। এই নিন্দনীয় ঘটনায় সিবিআই (CBI) তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে দেয়। সেই ভিডিওতে দেখা যায় ধর্ষিত মৃত নাবালিকার দেহ মাটিতে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে কয়েকজন রাজ্য পুলিশ (West Bengal Police)। যার পরেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ওঠে নানান প্রশ্ন। তর্ক-বিতর্কের মুখে পড়তে হয় তৃণমূলকেও।
নাবালিকার মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চার এএসআই (ASI) পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ডও করে রাজ্য সরকার। কিন্তু তাতেও থামেনি ঘটনার উত্তাপ। মঙ্গলবার কালিয়াগঞ্জ জুড়ে তাণ্ডব চালায় বিক্ষোভকারীরা। এলাকা হয়ে ওঠে উত্তপ্ত। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় থানায়, ভাঙচুর করা হয় একাধিক দোকানপাটও।
বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরে আরও একটি ভিডিও। যাতে দেখা যায় বেশ কিছু পুলিশকর্মীকে মারধর করেছে বিক্ষোভকারীরা। ঘটনার প্রেক্ষিতে কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ৪টি ওয়ার্ডে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এই ধারা জারি থাকবে শুক্রবার পর্যন্ত ৪, ৫, ৬ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। ইতিমধ্যেই সব রাজনৈতিক দলকে চিঠি পাঠিয়ে রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার জানিয়ে দিয়েছেন,আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই মুহূর্তে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলায় কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।
অন্যদিকে, বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে কালিয়াগঞ্জ-কান্ড ঘিরে উত্তেজনা এবং পুলিশকে মারধরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কালিয়াগঞ্জকাণ্ডে তাণ্ডব চালিয়েছে বিজেপি। গুন্ডামি, জল্লাদগিরি করেছে, মেয়ে পুলিশদের ওপরেও হামলা করা হয়েছে। ঘটনায় পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ নিতে বলেছি। তবে নাবালিকার মৃতদেহ এভাবে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি, কিন্তু পাথর ছোড়া হচ্ছিল।
মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় রাজ্য সরকারের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য থানায় ব্যাগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মুখমন্ত্রী। সঙ্গে জানান অভিযুক্তদের সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পুলিশের উপর হামলা করা হয়েছে। এমনকি বিহার থেকে লোক নিয়ে এসে কালিয়াগঞ্জে হামলা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালিয়াগঞ্জের নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মৃত নাবালিকার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, কালিয়াগঞ্জ ধর্ষণ কাণ্ডে উত্তাপ, ভাঙচুর ও পুলিশকে মারধরের অভিযোগে ইতিমধ্যে ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও (CV Anand Bose)। এনসিপিসিআর-এর চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনোগর (Priyank Kanunogo) সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। ঘটনায় অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করার আশ্বাস দেন ডিজিপি (DGP)। রাজ্যপাল জানান, পরিস্থিতি বিবেচনা করে দিল্লিতে তাঁর কর্মসূচি স্থগিত রেখে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এমনকি ডিজি ও মুখ্যসচিবকে আলাদা ভাবে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথাও বলেন রাজ্যপাল।