Madhyamik 2024 | ৮০ দিনের মাথায় প্রকাশ মাধ্যমিক ২০২৪-এর ফলাফল! ৬৯৩ নম্বর পেয়ে প্রথম কোচবিহারের চন্দ্রচূড় সেন! পাশের হারে কলকাতাকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে জেলা!
মাধ্যমিকের ফলাফল ২০২৪ প্রকাশ করা হলো পরীক্ষার পর ৮০ দিনের মাথায়। এদিন মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গাঙ্গুলি সাংবাদিক বৈঠক করে মাধ্যমিকের কৃতি তালিকা প্রকাশ করেন। মেধা তালিকার প্রথম দশে রয়েছেন ৫৭ জন। যার মধ্যে মাত্র ১ জন রয়েছে কলকাতার। দেখুন প্রথম দশের তালিকা।
২ রা মে, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হল মাধ্যমিক ২০২৪ (madhyamik 2024)-এর ফলাফল। মাধ্যমিকের ফলাফল ২০২৪ (madhyamik result 2024) প্রকাশ করা হলো পরীক্ষার পর ৮০ দিনের মাথায়। এদিন পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গাঙ্গুলি সাংবাদিক বৈঠক করে মাধ্যমিকের কৃতি তালিকা প্রকাশ করেন। মেধা তালিকার প্রথম দশে রয়েছেন ৫৭ জন। যার মধ্যে মাত্র ১ জন রয়েছে কলকাতার। এছাড়া এবছর পাশের হার ৮৬.৩১ শতাংশ। অন্য বারের মতোই এবারও পাশের হারে কলকাতাকে টেক্কা দিল জেলা। পাশের হারের নিরিখে প্রথমে কালিম্পং, দ্বিতীয় পূর্ব মেদিনীপুর। তৃতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা।
মাধ্যমিকের ফলাফল ২০২৪ (madhyamik result 2024) অনুযায়ী, প্রথম হয়েছে কোচবিহারের রামভোলা হাই স্কুলের চন্দ্রচূড় সেন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩। এরপর দ্বিতীয় হয়েছে পুরুলিয়া জেলা স্কুলের সাম্যপ্রিয় গুরু। প্রাপ্ত নম্বর: ৬৯২। তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে ৩ জন পরীক্ষার্থী। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাইস্কুলের উদয়ন প্রসাদ, বীরভূম থেকে নিউ ইন্টিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের পুষ্পিতা বাঁশুরি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের নৈর্ঋতরঞ্জন পাল। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। এছাড়া মেধা তালিকায় কলকাতার একমাত্র প্রতিনিধি কমলা গার্লস হাই স্কুলের সোমদত্তা সামন্ত। দশম স্থান অধিকার করেছে সে। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪।
মাধমিক ২০২৪ এর প্রথম দশ -
প্রথম স্থান :
এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে কোচবিহারের রামভোলা হাইস্কুলের চন্দ্রচূড় সেন। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩। ৯৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে চন্দ্রচূড়।
দ্বিতীয় স্থান :
দ্বিতীয় হয়েছেন পুরুলিয়া জেলা স্কুলের সাম্যপ্রিয় গুরু। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯২। ৯৮.৮৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছে।
তৃতীয় স্থান :
তৃতীয় হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাইস্কুলের উদয়ন প্রসাদ, বীরভূম থেকে পুস্পিতা বাঁসুরি, নিউ ইন্টিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুল, ইলমবাজার। নৈঋত রঞ্জন পাল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১।
চতুর্থ স্থান :
চতুর্থ স্থানে জায়গা করে নিয়েছে হুগলির কামারপুকুরের রামকৃষ্ণ মিশন মাল্টিপারপস স্কুলের ছাত্র তপোজ্যোতি মণ্ডল। প্রাপ্ত নম্বর ৯৮. ৫৭ শতাংশ।
পঞ্চম স্থান :
পঞ্চম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের পারুলডাঙ্গা নসরতপুর হাই স্কুলের ছাত্র অর্ঘ্যদীপ বসাক। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৯ , ৯৮.৪৩ শতাংশ।
ষষ্ঠ স্থান :
ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে চার জন পরীক্ষার্থী। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাই স্কুলের ছাত্র কৃশানু সাহা, মালদহের মোজামপুর হাই স্কুলের ছাত্র মহম্মদ শাহাবুদ্দিন আলি, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র কৌস্তভ সাহু, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ বিদ্যালয়ের ছাত্রী অলিভ গায়েনের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮, ৯৮.২৯ শতাংশ।
সপ্তম স্থান :
সপ্তম স্থানে রয়েছে সাত জন পরীক্ষার্থী। দক্ষিণ দিনাজপুরের তিন জন পরীক্ষার্থী। বালুরঘাট গার্লস হাই স্কুলের আবৃত্তি ঘটক এবং অর্পিতা ঘোষ, বালুরঘাট হাই স্কুলের সাত্বত দে পেয়েছে ৬৮৭ (৯৮.১৭ শতাংশ)। এ ছাড়াও বীরভূমের সরোজিনী দেবী সরস্বতী শিশু মন্দিরের ছাত্র আরত্রীক সৌ, পূর্ব মেদিনীপুরের জ্ঞানদীপ বিদ্যাপীঠ হাই স্কুলের ছাত্র সুপম কুমার রায়, বিবেকানন্দ আশ্রম শিক্ষায়তনের ছাত্র কৌস্তভ মাল, এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের ছাত্র আলেখ্য মাইতিও সপ্তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
অষ্টম স্থান :
অষ্টম স্থানে রয়েছে চার জন পরীক্ষার্থী। পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান বিদ্যার্থী ভবন গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী, বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের ছাত্র দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর মিশন গার্লস স্কুলের ছাত্রী তনুকা পাল, নদিয়ার কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র হৃদি মল্লিক। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬ (৯৮ শতাংশ)।
নবম স্থান :
নবম স্থানে রয়েছে সাত জন পরীক্ষার্থী। পূর্ব মেদিনীপুরের রামকৃষ্ণ শিক্ষামন্দির হাই স্কুলের সায়ক শাসমল, সাগর জানা, বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম শিক্ষায়তনের ছাত্র সাগ্নিক ঘটক, নদিয়ার চাকদহ রামলাল অ্যাকাডেমির ছাত্র জিষ্ণু দাস, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র ঋতব্রত নাথ, ঋত্বিক দত্ত, সারদা বিদ্যাপীঠ হাই স্কুলের ছাত্র সায়নদীপ মান্না, শ্যামপুর হাই স্কুলের ছাত্র অরণ্যদেব বর্মন, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৫ (৯৭.৮৬ শতাংশ)।
দশম স্থান :
দশম স্থানে রয়েছে ১৫ জন পরীক্ষার্থী। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী ভূমি সরকার, মালদহের মোজামপুর হাই স্কুলের ছাত্র বিশাল মণ্ডল, বাকুঁড়ার বাঁকুড়া জেলা স্কুলের ছাত্র সৌভিক দত্ত, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া কাশীরামদাস ইনস্টিটিউটের ছাত্র অনীশ কোনার, পূর্ব বর্ধমানেরর পারুলডাঙ্গা নসরতপুর হাই স্কুলের ছাত্র অর্ণব বিশ্বাস, পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান বিদ্যার্থী ভবন গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী সম্পূর্ণা নাথ, হুগলির ইএলআইটি কো-এডুকেশন স্কুলের ছাত্র নীলাঙ্কন মণ্ডল, বাঁকুড়ার তালডাংরা ফুলমতি হাই স্কুলের ছাত্রী সৌমিক খান, গড় রায়পুর হাই স্কুলের ছাত্র সৌমদীপ মণ্ডল, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের ছাত্র অগ্নিভ পাত্র, পূর্ব মেদিনীপুরের কন্টাই মডেল ইনস্টিটিউশনের ছাত্র সম্পাদ পারিয়া, ঋতম দাস, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের শুভ্রকান্তি জানা, সারদা বিদ্যাপীঠ হাই স্কুলের ইশান বিশ্বাস, কমলা গার্লস হাই স্কুলের সোমদত্তা সামন্ত। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪ (৯৭.৭১ শতাংশ)।
মাধ্যমিক ২০২৪-এর ফলাফল দেখতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে- https://wbresults.nic.in/madhymik24/wbmpres24.htm
প্রসঙ্গত, চলতি বছর লোকসভা নির্বাচনের কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ২ রা ফেব্রুয়ারি। শেষ হয় ১২ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষায় নাম নথিভুক্ত করেছিল ৯,২৩,৬৩৬ জন। সাংবাদিক সম্মেলন থেকে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মোট ৯,১০,৫৯৮ জন পরীক্ষা দিয়েছে, এর মধ্যে ৪,০৩,৯০০ ছাত্র এবং ৫,০৮,৬৯৮ ছাত্রী। মোট ৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ২৫২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় পাস করেছে। পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, একাধিক কারণে মাধ্যমিকের ক্রিম সাফল্য দখল করছে জেলার ছেলেমেয়েরা। তারা শুধুমাত্রা প্রথম দশে অর্থাৎ মেধা তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে এমন নয়, পাশাপাশি পাশের হারেও তারাই শীর্ষে থাকছে। পাশের হার সবচেয়ে বেশি কালিম্পংয়ে, দ্বিতীয় স্থানে পূর্ব মেদিনীপুর। তৃতীয় হয়েছে কলকাতা। বিশেজ্ঞদের বক্তব্য, মেধার দিক থেকে জেলা কখনই পিছিয়ে ছিল না। নম্বর পওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছিল জেলার ছাত্রছাত্রীরা। একদিকে যেমন নম্বর তোলায় দক্ষতা অর্জন করেছে জেলা, অন্যদিকে শহরে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বাড়বাড়ন্তে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার চিত্র অনেকটাই বদলে গিয়েছে। বর্তমানে শহরের মেধাবী ছাত্রদের একটা বড় অংশ ইংরেজি মাধ্যম স্কুল পঠনপাঠন করে থাকে। অন্যদিকে জেলায় আজও বাংলা মিডিয়ামই ভরসা। তাই মাধ্যমিক ২০২৪ (madhyamik 2024) এ পাশের হার থেকেই এগিয়ে জেলা।