Junk Food Day | মুখরোচক স্বাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যের উপকারও করবে এই জাঙ্ক ফুড! দেখুন এই তালিকায় রয়েছে কোন কোন খাবার!
প্রতি বছর ২১ সে জুলাই বিষব্যাপী পালন করা হয় জাঙ্ক ফুড দিবস। এই দিন নিয়ম ভঙ্গ করে খেতেই পারেন জাঙ্ক ফুড।
আধুনিকতার সঙ্গে পাল্টে গিয়েছে সব। যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে জামাকাপড় এমনকি খাওয়াদাওয়াও। প্রায় সকলের খাদ্যাভাসেই অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে 'জাঙ্ক ফুড' (Junk Food)। এখন ভালোমন্দ খাবার মানেই পিজ্জা, বার্গার, চিপস, ফ্রাইড চিকেন ছাড়া যেন কিছু মাথাতেই আসেনা। জাঙ্ক ফুড আমাদের শরীরের ক্ষতি করে- এই কথা ছোটবেলার থেকে আমরা শুনে আসলেও বর্তমানে খুব কম ব্যক্তিই পুরোপুরি জাঙ্ক ফুড ত্যাগ করতে পেরেছেন। যার ফলে অসংখ্য ব্যক্তি আক্রান্ত নানা রকমের রোগে। তবে আজকের দিনে আপনি খেতেই পারেন জাঙ্ক ফুড। কারণ বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ২১সে জুলাই পালন করা হয় জাঙ্ক ফুড দিবস (Junk Food Day)।
জাঙ্ক ফুড দিবসের ইতিহাস । History of Junk Food Day :
১৯০০ দশকের সময় শুরু হয় 'প্যাকেজ' খাবার অর্থাৎ প্যাকেটের খাবারের উৎপত্তি হয়। মূলত দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধর (World War II) সময় নানান প্যাকেটের খাবারের ব্যবহার বেশি করে শুরু হয়। তবে তখনও 'জাঙ্ক ফুডে'র উৎপত্তি হয়নি। ১৯৭০ এর সময়ের দিকে অণুজীববিজ্ঞানী মাইকেল জ্যাকবসন (Microbiologist Michael Jacobson) 'জাঙ্ক ফুড' শব্দটির প্রথম ব্যবহার করেন। জাঙ্ক ফুডের মূল লক্ষ্য ছিল অতিরিক্ত শর্করা ও লবণ যুক্ত সংরক্ষণকারী খাবার প্রদান করা যা কম পরিমাণে খেলেই একজন প্রাপ্ত বয়স্কের খিদে এবং শরীরের খাবারের চাহিদা মিটবে। খুব কম সময়ের মধ্যেই জাঙ্ক ফুড হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষের পছন্দের খাবার। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানান সংস্থা বাজারে আনতে থাকে ভিন্ন ধরণের, ভিন্ন স্বাদের জাঙ্ক ফুড।
স্বাস্থ্যকর জাঙ্ক ফুড । Healthy Junk Food :
জাঙ্ক ফুডের উৎপত্তির সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই নির্ভর হয়ে পড়েছেন এই ধরণের খাবারের ওপর। তবে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের দ্বারা ক্রমশ সামনে এসেছে জাঙ্ক ফুডের ক্ষতিকর শারীরিক প্রভাব। ফলে বর্তমানে জাঙ্ক ফুড খেতে নিষেধ করেন বিশেষজ্ঞরা। রোগভোগ থেকে দূরে থাকতে এবং শরীর চর্চার জন্য অনেকেই জাঙ্ক ফুড খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। তবে এর স্বাদ এবং তৃপ্তি যেন দেয় অন্য সুখ। ফলে বছরের একটা দিনকে 'চিট ডে' (Cheat Day) করার জন্য জাঙ্ক ফুড দিবস পালন করা হয়। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও ব্যক্তি মানসিক অবসাদগ্রস্ত হলে এক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা পালন করতে পারে অতিরিক্ত মিষ্টি বা কম সময়ে তৈরী খাবার, অর্থাৎ জাঙ্ক ফুড। তবে জাঙ্ক ফুড দিবস পালন মানেই কিন্তু কেবল ভাজা ভুজি নয়। এমনও কিছু জাঙ্ক ফুড রয়েছে যা আদতে 'জাঙ্ক ফুড' হলেও শরীরে তেমন ক্ষতি করে না। ফলে আজকের দিনে এই খাবারগুলি নিশ্চিন্তেই খেতে পারেন। দেখে নিন জাঙ্ক ফুড দিবস পালন করার জন্য এমন কোন কোন স্বাস্থ্যকর খেতে পারবেন।
১. পপকর্ন । Popcorn :
সিনেমা দেখতে দেখতে পপকর্ন খাওয়ার মজাই যেন আলাদা। বাটার পপকর্ন, চিজ পপকর্ন, ক্যারামেল পপকর্নের মতো হরেক রকমের পপকর্ন পাওয়া যায় বাজারে। একটা খেলে যেন চলতেই থাকে হাত। অনেকে এই জাঙ্ক ফুডকে স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ মনে করলেও আসলে কিন্তু তা নয়। বরং মাখন ও লবণ ছাড়া পপকর্নের রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা। এয়ার-পপড পপকর্নে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকে। এছাড়াও এটিতে রয়েছে পলিফেনল (Polyphenols) নামক এক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Antioxidants) যা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। ফলে প্রি-প্যাকেজড মাইক্রোওয়েভ পপকর্ন বেছে না নিয়ে সাধারণ পপকর্ন বানিয়ে তাতে স্বাদের জন্য ভেষজ বা মশলা হালকা ছিটিয়ে নিতে পারেন।
২. চকোলেট । Chocolate :
পৃথিবীতে চকোলেট খেতে পছন্দ করেন না এমন ব্যক্তি খুব কমই আছেন। এই সুস্বাদু খাবারেরও রয়েছে স্বাস্থ্যগুণ। ডার্ক চকোলেট (Dark Chocolate) এমনকি দুধের চকোলেট যাতে উচ্চ শতাংশ কোকো অর্থাৎ প্রায় ৭০ শতাংশ বা তারও বেশি কোকো থাকলে তা স্বাস্থ্যের উপকার করতে পারে। এই ধরণের চকোলেটে ফ্ল্যাভোনয়েড (Flavonoids) নামক ম্যাগনেসিয়াম (Magnesium) এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে, কম চাপ এবং প্রদাহ হ্রাস সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকার করতে সক্ষম।
৩. লবণাক্ত বাদাম । Salted Nuts :
বাদাম চর্বিযুক্ত খাবার। তবে এতে মনোস্যাচুরেটেড (Monounsaturated) এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (Polyunsaturated) থাকে যা হার্টের জন্য স্বাস্থ্যকর। এছাড়াও বাদাম ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ সহ প্রয়োজনীয় পুষ্টিতেও পরিপূর্ণ। বাদাম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং সামগ্রিক কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
৪. সম্পূর্ণ চর্বিযুক্ত দই । Full Fat Yogurt :
যাদের আইসক্রিম খেতে খুব ভালো লাগে কিন্তু শরীর সুস্থ্যতার জন্য খেতে পারেন না তারা সম্পূর্ণ চর্বিযুক্ত দই খেতে পারেন। যেমন খেতেও সুস্বাদু তেমনই স্বাস্থ্যের জন্যও খুব ভালো। ভরপুর শর্করা ও ক্যালসিয়াম (Calcium) সমৃদ্ধ এই দই ঠান্ডা করে খেতে পারেন। আরও স্বাদের জন্য সামান্য চিনি এবং ফল কেটে মিশিয়ে খেতে পারেন।
৫. চিজ । Cheese :
চিজে ভিটামিন কে- টু (Vitamin K2) থাকে যা হাড় এবং ধমনীর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও চিজ ক্যালসিয়ামের জন্যও খুব ভালো উৎস। তবে চিজ নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা। কারণ চিজের যেমন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তেমনই অতিরিক্ত পরিমান শরীরের ক্ষতিও করতে পারে।
- Related topics -
- লাইফস্টাইল
- খাদ্যগুণ
- চকলেট
- স্বাস্থ্য
- পেটপুজো