দেশ

ISRO Chandrayaan 3 | 'জয় হে'! সর্বপ্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে 'সফ্ট ল্যান্ডিং' করলো বীর 'বিক্রম'! চন্দ্রযান-৩ এর মিশন সাক্সেস!

ISRO Chandrayaan 3 | 'জয় হে'! সর্বপ্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে 'সফ্ট ল্যান্ডিং' করলো বীর 'বিক্রম'! চন্দ্রযান-৩ এর মিশন সাক্সেস!
Key Highlights

২৩ সে অগাস্ট নির্ধারিত সময়ের আগেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করলো ইসরোর চন্দ্রযান-৩। ভার্চুয়ালি যোগ হয়ে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে ১৪০ কোটি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী।

বিশ্ব ইতিহাস গড়লো ভারত (India)! চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফ্ট ল্যান্ডিং করলো ইসরোর চন্দ্রযান-৩ (ISRO ChandraYaan 3)। গোটা বিশ্ব দরবারে আজ ভারতের সম্মানের দিন। এই 'ডেভেলপিং কান্ট্রি'ই দেখালো অদম্য জেদ এবং ইচ্ছা শক্তি থাকলে সব সম্ভব। ২৩সে অগাস্ট, সন্ধে ৬টা ৪ মিনিটের আগেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করলো চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram)।

পূর্ব পরিকল্পিত সময়সূচি অনুযায়ী, এদিন ঘড়ি ধরে ৫টা ৪৫ মিনিটে অবতরণ প্রক্রিয়া শুরু করেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। অবতরণ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ইসরোর অফিস ভরে ওঠে করতালিতে। চন্দ্রযান-৩ এর যাত্রা শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। প্রথম থেকেই ভারতবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন তারা, চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার 'বিক্রম' চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবেই। সেই কথাই রাখলেন আমাদের গর্বের বিজ্ঞানীরা।

বিকেল ৫টা ২০ মিনিট থেকে 'বিক্রমে'র অবতরণের সরাসরি সম্প্রচার শুরু করে ইসরো। অবতরণ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিক্রমের গতি ১,১৫০ মিটার প্রতি সেকেন্ডে কমিয়ে আনা হয়। এরপর 'রাফ ব্রেকিং' পর্যায়ে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে বিক্তমের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার কমিয়ে প্রথমে ৭ কিলোমিটারে আনা হয়। এরপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ক্রমশ গতি কমিয়ে চাঁদের 'কুমেরু'তে সফ্ট ল্যান্ডিং করে চন্দ্রযান-৩ এর 'বিক্রম'।

চাঁদের মাটিতে নামার সঙ্গে সঙ্গে খুশির জোয়ারে ভেসে ওঠে গোটা ইসরো অফিস। একে অপরকে আলিঙ্গন করেন বিজ্ঞানীরা। সকলেরই মুখে ফুটে ওঠে হাসি। উল্লেখ্য, চন্দ্রযান-৩ এর অবতরণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরই ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। অবতরণ সফল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হাতে ছোট্ট জাতীয় পতাকা নাড়িয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি। এরপরই দেশবাসীর জন্য ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। টিম চন্দ্রযানকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ১৪০ কোটি দেশবাসীকেও শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী মোদি।

টিম চন্দ্রযানকে, বিজ্ঞানীদের আমার শুভেচ্ছা। তাঁরা এই মুহূর্তটির জন্য বছরের পর বছর ধরে পরিশ্রম করেছেন। ১৪০ কোটি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা। ভারতের উদীয়মান ভাগ্যের আহ্বান এই মুহূর্তে। অমৃতকালের আহ্বান। অন্তরীক্ষে নতুন ভারতের উদয়। আমি এখন দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশবাসীর সঙ্গে সঙ্গে আমার মনও এখানেই ছিল।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

গত ১৪ই জুলাই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র (Satish Dhawan Space Center, Sriharikota) থেকে উৎক্ষেপণ হয় চন্দ্রযান-৩। ৪০দিন পর শেষ হয় চন্দ্রযান-৩ এর যাত্রা। এর আগে চাঁদের দক্ষিণ মেরু ছোঁয়ার স্বপ্নে ২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করে চন্দ্রযান ২ (Chandrayaan 2)। তবে উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ করতে পারেনি ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযান। সেই ব্যর্থতার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। গোটা বিশ্বের কাছে মাথা নত করতে হয়েছিল দেশের বিজ্ঞানীদের। বরাবরই ভারতকে ভিন্ন নজরে দেখে এসেছে গোটা বিশ্ব। বহু বছর 'বাবুদের' শাসনের পর ধীরে ধীরে সবক্ষেত্রে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছে ভারত। ভারত মানেই বিশ্বের কাছে যেন 'জনবহুল এক দেশ', ভারত মানেই যেন 'গরিব দেশ', ভারত মানেই যেন 'অসংখ্য যাত্রী-সহ একটি ট্রেন'! তবে এই চিত্র আজ বদল করলো চন্দ্রযান-৩। ইসরোর বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করলেন, কীভাবে খারপ পরিস্থিতি পেরিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, কীভাবে গোটা দুনিয়ার কাছে নিজেদের প্রমাণ করতে হয়, ভারত মানে সাফল্য, ভারত মানে জয়!

চন্দ্রযান-৩ এর অবতরণ সফল হওয়ার পর, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর ন্দ্রযানের পিছনে কায়িক পরিশ্রম করা বিজ্ঞানীর দলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরো প্রধান এস সোমনাথ (ISRO chief S Somnath)। ইসরোর চেয়ারপার্সন এস সোমানাথ এই সাফল্যের জন্য প্রোজেক্ট ডিরেক্টর পি ভিরামুথুভেল (P Veeramuthuvel), সহকারী পরিচালক কল্পনা (Kalpana), মিশন ডিরেক্টর শ্রীকান্ত (Srikanth) এবং ইউআরএসসি ডিরেক্টর ভি শঙ্করনকে (V Sankaran) অভিনন্দন জানান। ইসরোর চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্য মুছে দিলো গত চার বছরের গ্লানি। আজ সকল ভারতীয়ই যেন রয়েছেন চাঁদে।