Immunity Boosting Food | বাড়ছে করোনার নয়া সংক্রমণ জেএন-১ এর প্রকোপ! এই অবস্থায় সুস্থ্য থাকতে নিয়মিত রসুন খান এভাবে!
শীতের মরশুমে মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেছে ভারতে এনফ্লুয়েঞ্জা করোনার নয়া সংক্রমণ জেএন-১। এই অবস্থায় বয়স্ক থেকে শিশুদের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার হিসেবে রসুন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। জানুন রসুনের উপকারিতা এবং কীভাবে খাবেন।
দেশে নতুন করে ভয় ধরাচ্ছে করোনার নয়া সব ভ্যারিয়েন্ট জেএন-১ (Corona Sub Variant JN-1)। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বর্ষ বরণের প্রাক মুহূর্তে করোনার প্রকোপ থেকে রক্ষা পায়নি পশ্চিমবঙ্গও। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের খবর অনুযায়ী, গোটা দেশ জুড়ে এখনও পর্যন্ত চার হাজারের বেশি মানুষ কোভিড আক্রান্ত রয়েছেন। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে করোনা কেস (Corona cases in West Bengal) ৭। গতদিনের তুলনায় ২ জন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত এই কোভিড নতুন সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা খুব একটা নেই। সম্প্রতি কেরল থেকে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট প্রসঙ্গে চিকিৎসক মহল জানাচ্ছে, মূলত যাঁদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কম, তাঁদের ক্ষেত্রে বিপদের ভয় বেশি। এই তালিকায় যেমন আছেন বয়স্ক মানুষ, তেমনই আছেন ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত বা রোগ সারিয়ে ওঠা মানুষ ও শিশুরাও। কারণ তাঁদের ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ শক্তি দুর্বল হওয়ায় এই নতুন করোনা বেশ সমস্যায় ফেলতে পারে। তাই গোড়াতেই কয়েকটি লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হতে বলেছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে সকলকেই ইমিউনিটি বাড়ায় এমন খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাররা। এই বিষয়ে দুর্দান্ত কাজ করতে পারে রসুন।
রসুন করে ইমিউনিটিকে 'বুস্ট' করার কাজে বেশ কার্যকর। এর একাধিক পুষ্টিগুণের ফলে রসুনকে ভারতে এনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza in India) রোধক খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার (Immunity boosting foods for kids) হিসেবে খ্যাত। ভারতে এনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza in India), ছোট বড় সকল ভাইরাসকেই দূরে রাখবে রসুন। দেখে নিন রসুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং কীভাবে খাবেন।
রসুনের গুণ :
বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই ভেষজে রয়েছে একাধিক পুষ্টিগুণ। রসুনে রয়েছে-ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২, ভিটামিন বি ৩, ভিটামিন বি ৬, ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন, ক্যালশিয়ামের মতো একাধিক উপকারী উপাদান। আর এই সমস্ত উপাদান দেহে পুষ্টির ঘাটতি মিটিয়ে ফেলার কাজে সিদ্ধহস্ত। শুধু তাই নয়, এতে মজুত থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একাধিক ক্রনিক রোগ থেকেও রক্ষা করে।
রসুনের উপকারিতা :
- কাঁচা রসুন একটি পাওয়ারফুল ডিটক্স। এটি আমাদের শরীররে অবাঞ্চিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। কাঁচা রসুনশরীরের ভেতরের হেভি মেটালসকে বের করে দিতে সাহায্য করে।
- এই ভেষজতে রয়েছে অ্যালিসিন নামক একটি উপাদান। যা ইমিউনিটি বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। বিশেষত, ফ্লু ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই উপকারী উপাদান শরীরের ঢাল হিসাবে কাজ করে। এমনকী করোনার মতো ঘাতক ভাইরাসের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই উপাদান।
- শীতের দিনে জীবাণু থেকে রক্ষা করে রসুন। নিয়মিত রসুন সেবন করলে অনায়াসে ব্যাকটেরিয়ার খেল খতম করে দিতে পারবেন।
- মেনোপজ হয়েগিয়েছে যেসে সব মহিলাদের প্রায়ই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যার মধ্যে হাড়ের দুর্বলতাও রয়েছে। রসুন মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন বাড়ায়, ফলে হাড় দুর্বল হয় না।
- যাঁদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে , তাঁরা সকালে খালি পেটে রসুনের একটা কোয়া খেলে উপকার পাবেন।
- কাঁচা রসুন রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল, টোটাল কোলেস্টেরল এবং এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে থাকে।
সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কীভাবে রসুন খাবেন?
করোনার ভ্যারিয়েন্ট হোক কিংবা অন্য কোনও ভাইরাস, বয়স্ক থেকে শিশুদের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার (Immunity boosting foods for kids) হিসেবে রসুনের কার্যকারিতা অতুলনীয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চিকিৎসকরা রোজ রসুন খেতে বলেন ঠিকই। তবে সঠিক নিয়মে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে রোজ সকালে উঠে এক কোয়া রসুন চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। এভাবেই সবথেকে বেশি উপকার মিলবে। যদি রসুন চিবিয়ে খেতে না পারলে রসুন জল দিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। এই কাজটা করলেও বাড়বে ইমিউনিটি। সেই সঙ্গে রান্নাতেও রসুনের ব্যবহার কিছুটা হলেও বাড়াতে পারেন।
করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন ১ ফের নতুন করে ভয় ধরাতে শুরু করেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকায় প্রথম এই ভ্যারিয়েন্ট এর খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। আস্তে আস্তে অন্যান্য দেশেও এই উপরূপের খোঁজ মিলতে শুরু করে। ভারতে প্রথম জেএন ১ ভাইরাসের খোঁজ পাওয়া যায় কেরলে। যদিও দেশের একাধিক রাজ্যে এই উপরূপের খোঁজ মেলায় ইতিমধ্যেই রাজ্যগুলিকে বিশেষ বিশেষ নির্দেশিকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে কলকাতায় যাঁদের শরীরে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের পরীক্ষার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে নতুন এই সাব ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করা বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে খবর। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তদের লক্ষণগুলি দেখে বোঝা কঠিন হচ্ছে যে তারা এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছে কিনা। তবে নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত হলে ডায়রিয়ার প্রকোপ এবং বমি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ফলে করোনার এই ভ্যারিয়েন্ট থেকে রক্ষা পেতে খাওয়া দাওয়া এবং কোভিড বিধির ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন চিকিৎসকরা।
[এই প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া শ্রেয়।]