POCSO Act | নাবালক-নাবালিকাদের দ্রুত প্রাপ্তমনস্ক হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে পকসো আইনে বয়স কমানোর আর্জি হাইকোর্টের!
১৭ বছর নাবালকের বিরুদ্ধে ১৪ বছরের নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগের মামলার শুনানিতে মধ্যপ্রদেশ আদালতের গোয়ালিয়র বেঞ্চের কেন্দ্রের কাছে পকসো আইনে বয়স কমিয়ে ১৬ করার সুপারিশ।
দিন দিন দেশ জুড়ে ক্রমশ বাড়ছে ধর্ষণ, যৌন হেনস্থার মতো ঘটনা। বর্তমানে প্রায়শই খবরের শিরোনামে উঠে আসে নাবালক বা নাবালিকার বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থার অভিযোগ। কখনো সেই বয়স হয় ২০ কখনো ১৮ আবার কখনো ১৩। এই ঘটনার ওপর ভিত্তি করেই পকসো আইনের (POCSO Act) বয়সসীমা কমানোর সুপারিশ দিলো মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট (Madhya Pradesh High Court)।
মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের গোয়ালিয়র বেঞ্চের (Gwalior Bench of Madhya Pradesh High Court) সুপারিশ, বর্তমানে শিশুরা দ্রুত প্রাপ্তমনস্ক হয়ে পড়ছে। ১৮ বছরে পা দেওয়ার আগেই অনেকে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হয়। ফলে অনেকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে এবং তাদের জীবন নষ্ট হয়েছে। ফলে আদালতের পরামর্শ, এই আইনের ক্ষেত্রে বয়স কমিয়ে ১৬ করা হোক।
ইন্টারনেটের যুগে কিশোর-কিশোরীরা অনেক দ্রুত প্রাপ্তমনস্ক হয়ে যায়। ১৮ বছরে পা দেওয়ার আগেই অনেকে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হয়। অনেকক্ষেত্রে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অনেকের জীবন নষ্ট হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পকসো আইনের অধীনে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে একটি যৌন হেনস্থার মামলা চলছিল। ২০২৩ সালে ১৭ বছরের নাবালকের বিরুদ্ধে এক ১৪ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এই কান্ডের জন্য নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে যৌন হেনস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নাবালককে গ্রেফতার করা হয় এবং নাবালিকাকে আদালতের নির্দেশে গর্ভপাত করানো হয়। কিন্তু, ধৃত নাবালককের আইনজীবীর পাল্টা অভিযোগ, দুই পক্ষের সম্মতিতেই যৌন সঙ্গম হয়েছিল। ফলে এই ঘটনাটি কোনওভাবেই ধর্ষণ হতে পারে না।
এদিন অর্থাৎ শুক্রবার এই মামলা ওঠে মধ্য প্রদেশ হাইকোর্টে। এরপর দুপক্ষের যুক্তি শুনে আদালতের গোয়ালিয়র বেঞ্চ কেন্দ্রকে পকসো আইনের ক্ষেত্রে বয়সের মাপকাঠি কমানোর সুপারিশ দেয়। পাশাপাশি এই মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, পকসো আইনের আওতায় একাধিক এমন মামলা আসে যেখানে, দুই কিশোর কিশোরী বা নাবালক নাবালিকার পরিবার ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থার অভিযোগে এফআইআর (FIR) দায়ের করে থাকেন। বহুক্ষেত্রে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে সে দোষী সাবস্ত হয়ে শাস্তি পায়। কিন্তু পরবর্তীকালে দেখা যায় দু'জনের সম্মতিতেই যৌন সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ফলে এই বিষয়ে বহু জলঘোলা হয়ে থাকে।
এছাড়াও এক নাবালিকার যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত একটি মামলা নিয়ে শুনানিতে মেঘালয় হাইকোর্টের বিচারপতি ওয়ানলুরা দেইংডোহর সিঙ্গল বেঞ্চ (Single Bench of Justice Wanlura Deingdohar of Meghalaya High Court) পর্যবেক্ষণ করে জানায়, বর্তমানে একজন ১৬ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরী বা নাবালক-নাবালিকা সঙ্গমের বিষয়ে নিজের থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ফলে এই অভিযোগকে ধর্ষণ বলা চলে না। ২০১২ পকসো আইনের ৩ ও ৪ নং ধারার (POCSO Act, 2012, Section 3 and 4) প্রসঙ্গ তুলে এই বক্তব্য পেশ করে আদালত। পরে ওই মামলায় পকসো আইনের আওতায় দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজ করে দেন বিচারপতি এবং অভিযুক্তকেও মুক্তির রায় দেওয়া হয়। এরপর এদিন অর্থাৎ শুক্রবারও একই প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রের কাছে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের গোয়ালিয়র বেঞ্চের সুপারিশ, পকসো আইনের ক্ষেত্রে বয়ের মাপকাঠি ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করা হোক।