বাংলাদেশের ৫টি রহস্যময় স্থান | 5 mysterious places in Bangladesh
মানুষ মাত্রই কৌতুহলী আর সেই কৌতুহল যদি হয় রহস্যের সন্ধানে তাহলে এ্যাডভেঞ্জার জীবনের মজাই আলাদা। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে আছে নানা রহস্যময় তথ্য।
আজ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য রহস্যময় স্থান ও ঘটনা থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে কিছু রহস্যাবৃত ঘটনা ও স্থান তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
গানস অফ বরিশাল | Guns of Barisal:
গানস অফ বরিশাল হল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের একটি রহস্যময় স্থান। ব্রিটিশরা যখন বর্তমান বাংলাদেশের বরিশাল অঞ্চলে আসে তখন এর নাম ছিলো বাকেরগঞ্জ। তৎকালীন সময়ে এক ব্রিটিশ সিভিল সার্জন প্রথম বারের মত গভীর সাগরের দিক থেকে এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি কামান ছোড়া গুলির আওয়াজের মতন শব্দ শুনতে পান। তিনি বরিশালের এই আওয়াজের মতন বিশ্বে অন্যান্য দেশেও এমন কামানের বিকট শব্দ অনেকে শুনতে পেতেন। ১৮৭০ সালে প্রথম বারের মতো বরিশাল গানসের কথা শোনা যায়। ১৮৮৬ সালে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির হিসাব অনুযায়ী বরিশাল সহ অন্যান্য জেলা যেমন নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, হরিশপুর খুলনা-তেও বরিশালের মত গানস এর ন্যায় ভয়ঙ্কর শব্দের আওয়াজ শোনা যেত।
টি ডি লাতুশ ১৮৯০ সালে এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বরিশাল গানস শুধুমাত্র গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ নয়, ব্রক্ষ্মপুত্রের ব-দ্বীপেও শোনা যেত। আছড়ে পড়া সমুদ্রের ঢেউ-এর শব্দের চেয়ে সেই শব্দগুলোকে কামানের শব্দই বেশী বলে মনে হত। এই স্থানে ১৯৫০ সাল থেকে কিভাবে এই ভয়ংকর শব্দ শোনা যেত, তা এখনও জানা যায়নি।
বগা লেক:
বাংলাদেশের এ এক আশ্চর্য রকমের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর বগা লেক-কে অনেকে বগাকাইন হ্রদ বলে থাকি। বান্দর বনের রুমা সদর উপজেল থেকে এই লেকটি ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে প্রায় তিন হাজার ফুট উচ্চতায় প্রায় পনের একর জমি নিয়ে বিস্তৃত। এখানে বাউম ও খুমি সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করেন। নীল পানির এই দ্বীপটিতে শীতের মৌসুমে বহু পর্যটক ঘুরতে আসেন।
সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড:
'সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড'-এই নামটি ব্রিটিশদের দেওয়া। বাংলাদেশের সুন্দরবনের দুবলার চর থেকে প্রায় ত্রিশ-চল্লিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এl সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড। প্রায় তিন হাজার আট শত বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে এর বিস্তৃতি এ সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড যাকে আমরা অতলস্পর্শীও বলে থাকি।
বঙ্গোপসাগরের নিকটে একটি গভীর উপত্যকা আছে যাকে ওয়াটার ক্যানিয়ন বলে। বাংলাদেশের জেলেরা সেখানে মাছ ধরতে যান।সেখানে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়।জেলেরা মাছ ধরতে গিয়েই প্রথম ওখানকার জলের রং আলাদা আলাদা দেখতে পান।কেউ এর রহস্যের সন্ধানেও কোন চমকপ্রদ তথ্য পাননি।
চিকনকালা:
বাংলাদেশ ও বার্মার নো ম্যান্স ল্যান্ডের কাছাকাছি লোকেরা প্রায় প্রতি বছর বনের ভিতরে গেলে ধুম-ধাম শব্দ পেয়ে তার ভয়ে বনের ভিতর হতে দ্রুত পালিয়ে আসতে চেষ্টা করে। শোনা যায়, যারা দৌড়ে পালিয়ে না এসে বনের ভিতরই থেকে যান তারা আর ফেরত আসতে পারেন না। কিছু দিন পর তাদের খোজ আনতে গেলে তাদের মৃত দেহ পাওয়া যায় তবে মৃত ব্যাক্তিদের শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন না থাকলেও তাদের মুখমন্ডলে আতংকের ছাপ স্পষ্ট বুঝা যায়।
জ্বীনের মসজিদ:
লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায় দেনায়েতপুর নামক স্থানে ঐতিহাসিক স্থাপনা জ্বীনের মসজিদটি অবস্থিত। ১৮৮৮ সালে প্রায় ৫৭ শতাংশ জমির উপর নির্মিত এ মসজিদটির দৈর্ঘ ১১০ ফুট বাই ৭০ ফুট। ভারতের দিল্লীর শাহী মসজিদের আদলে নির্মিত এ মসজিদটির তিনটি গম্ভুজ আছে এবং মসজিদটির তলদেশে প্রায় ২৫ ফুট গভীরে একটি ইবাদতের ঘর আছে যা বর্তমানে জলে ভরাট।
কথিত আছে মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুল্লাহ ঐ তলদেশ এর ঘরটিতৈ ইবাদতে মগ্ন থাকতেন। মসজিদটির সামনে পাশে দুটো পুকুর সহ প্রায় ১৫ ফুট ভিত্তির উপর নির্মিত এর নির্মাণ কাজের গম্ভুজ কারুকার্য নকশা পর্যটকদের বেশ আকর্ষিত করে।
- Related topics -
- আন্তর্জাতিক
- লাইফস্টাইল
- ইতিহাস