রাজ্য

E-Prescriptions in Govt. Hospitals | সরকারি হাসপাতালে ই-প্রেসক্রিপশন চালু করার নির্দেশিকা!

E-Prescriptions in Govt. Hospitals | সরকারি হাসপাতালে ই-প্রেসক্রিপশন চালু করার নির্দেশিকা!
Key Highlights

ডাক্তারের হাতে লেখা প্রেসক্রিপশন নিয়ে আর ভুগতে হবে না বিভ্রান্তিতে। রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে প্রেসক্রিপশন তৈরী হবে কম্পিউটারের মাধ্যমে।

সরকারি হাসপাতালে প্রেসক্রিপশন (Prescriptions) সংক্রান্ত বড় সিদ্ধান্ত! ধীরে ধীরে হাতে লেখা প্রেসক্রিপশন বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতর (West Bengal Health Department)। চিকিৎসার পর কম্পিউটারের মাধ্যমে ওষুধ লিখবেন ডাক্তাররা।

ডাক্তার দেখানোর পর পেঁচানো পেঁচানো হাতের লেখায় রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রেসক্রিপশন বা ওষুধের তালিকা লিখে দেন ডাক্তাররা, যা আমি আপনি তো দূর অনেক সময় ওষুধ দোকানদারও বুঝে উঠতে পারেন না। যার ফলে ওষুধের নাম বুঝতে আবার দৌড়াতে হয় হাসপাতালে। কিছুক্ষেত্রে আবার দেখা গেছে, প্রেসক্রিপশনে ডাক্তারের হাতের লেখা বুঝতে না পেরে ভুল ওষুধ দিয়ে ফেলেছেন ওষুধ দোকানদার। এই সমস্যা চলে আসছে দীর্ঘ সময় ধরে। তবে এবার আর কষ্ট করে পড়তে হবেনা ডাক্তারের হাতের লেখা।

সূত্রের খবর, রাজ্যের ব্লক থেকে মেডিক্যাল কলেজ স্তরের সমস্ত হাসপাতালের সুপারদের ই-প্রেসক্রিপশন (E-Prescription) সম্পর্কে নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে,  হাতে লেখা প্রেসক্রিপশন বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে স্বাস্থ্য দফতর। যার পরিবর্তে চালু হবে  ই-প্রেসক্রিপশন। অর্থাৎ রোগী দেখার পর চিকিৎসক ওষুধ লিখবেন কম্পিউটারে টাইপ করে, যার প্রিন্ট-আউট পাবেন রোগী।

স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, ধাপে ধাপে সরকারি হাপাতালের ডাক্তারদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিষয়টিতে সড়গড় করা হচ্ছে। পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে সব হাসপাতালে। ই-প্রেসক্রিপশন সম্পর্কে স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, এই ধরণের প্রেসক্রিপশনের ফলে ডাক্তারের হাতের লেখা নিয়ে আর বিভ্রান্ত হতে হবেনা রোগী বা রোগীর পরিবারকে। এছাড়াও কম্পিউটারে প্রেসক্রিপশন তৈরী করার জন্য প্রত্যেক রোগীর তথ্যও মজুত থাকবে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। যার ফলে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Calcutta Medical College) কোনও রোগীর যাবতীয় তথ্য প্রয়োজনে বাঁকুড়া জেলা হাসপাতালের (Bankura District Hospital) চিকিৎসকও পেতে পারেন।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের পর্যালোচনা বৈঠকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের যক্ষ্মা রোগীদের তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারি পোর্টালে তুলতে হবে আরও বেশি করে। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, যক্ষ্মা আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যার থেকে নথিভুক্ত রোগীর সংখ্যা কম। তাতে জাতীয় যক্ষ্মা (Tuberculosis) দূরীকরণ কর্মসূচিতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে মত স্বাস্থ্যকর্তাদের।

পর্যালোচনা বৈঠকে আরও বলা হয়েছে, অনেকেই যক্ষ্মার চিকিৎসা করেন বেসরকারি হাসপাতালে, যার তথ্য সরকারের কাছে থাকে না। ফলে সেই তথ্য সংগ্রহ করতে জেলার ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট সেলকে (Clinical Establishment Cell) বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সেই তথ্য জোগাড় করতে হবে। এছাড়াও,যক্ষ্মায় মৃত্যুর ঘটনার পর্যালোচনাও করতে হবে নিয়মিতভাবে। 'ডেথ রিভিউ কমিটি' (Death Review Committee) গঠনের মাধ্যমে এই পর্যালোচনা করা হবে খবর। যক্ষ্মা রোগীদের জন্য হাসপাতালে হাওয়া-বাতাস খেলে, এমন জায়গায় আলাদা ওয়ার্ড চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও হাসপাতালের সুপারদের।

উল্লেখ্য,  রাজ্যের ৯১৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২০১টিতে চালু করা হবে ই-প্রেসক্রিপশন। মহকুমা থেকে জেলা, স্টেট জেনারেল ও সুপারস্পেশ্যালিটি স্তরের হাসপাতালগুলির অন্তত ৫০ শতাংশ ওয়ার্ডে এই ব্যবস্থা চালু করার নির্দেশিকা দিয়েছে স্বাস্থ দফতর। রাজ্যের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট সংগঠনের সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী জানান, এখন সব কিছুই ডিজিটাল মাধ্যমে হচ্ছে, যার ফলে ই-প্রেসক্রিপশন চালু করার সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই এসএসকেএম, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের কয়েকটি বিভাগ ও জেলার কিছু হাসপাতালে ই-প্রেসক্রিপশন চালু করা হয়েছে। এবার রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে এই সুবিধা চালু হলে বড় বিভ্রান্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে আমজনতা।