WB Jai Bangla Pension Scheme | জয় বাংলা প্রকল্প ~ মা মাটি মানুষের জয়
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিনিয়তই বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্য দিয়ে রাজ্যবাসীর উন্নতি সাধনে তৎপর থাকেন। এবার সেই পদক্ষেপে অন্তর্ভুক্ত হল আরও একটি নতুন সংযোজন ” জয় বাংলা” পেনশন যোজনা ।
ভূমিকা | Introduction of Jai Bangla Scheme
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিনিয়তই বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্য দিয়ে রাজ্যবাসীর উন্নতি সাধনে তৎপর থাকেন। এবার সেই পদক্ষেপে অন্তর্ভুক্ত হল আরও একটি নতুন সংযোজন ” জয় বাংলা” পেনশন যোজনা । জয়বাংলা পেনশন প্রকল্প টি র মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি বিশেষ পেনশন প্রকল্পের কার্যক্রম চালু করেছে। পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী তপশিলি জাতি এবং উপজাতি বিভাগের ব্যক্তিদের জন্য মাননীয় অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জয়বাংলা পেনশন প্রকল্পটি ঘোষণা করেন যার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত তপশিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য বিভাগের মানুষেরা প্রভূত উপকৃত হবেন। 'জয়বাংলা পেনশন প্রকল্পে'র আওতায় যাঁরা আছেন তাঁদের রাজ্য সরকার ৪০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে। প্রতিটি উপকারভোগীদের ব্যাংক একাউন্টে প্রতিমাসে ১০০০ টাকা করে সরাসরি প্রদান করা হবে ।
জয়বাংলা প্রকল্পের শুভারম্ভ | Launch of Jai Bangla Scheme
২০২০ সালে মে মাসের প্রথম দিকে জয় বাংলা প্রকল্প শুরু করার কথা বলা হয়েছিল এবং ২০২০ সালেরই মার্চ মাসের প্রথম দিকে বাস্তবায়িত করা হয় এই প্রকল্পটি। তপশিলি বন্ধু প্রকল্প এবং জয় জোহার প্রকল্প , এই দুটো পেনশন যোজনা চালু করা হয়। পূর্বে যেসব পেনশন প্রকল্প গুলো ছিল অর্থাৎ বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, বিকলাঙ্গ ভাতা বর্তমান এক সঙ্গে এই প্রকল্পের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে তপশিলি পরিবারদের উদ্দেশ্যে যে পেনশন যোজনা টির মাধ্যমে পেনশন দেওয়া হচ্ছে সেটা তপশিলি জাতি অর্থাৎ সিডিউল কাস্ট সম্প্রদায়ের প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য করা হয়েছে । এর নাম দেওয়া হয়েছে তপশিলি বন্ধু প্রকল্প।
জয়বাংলা প্রকল্পের বিভাগ | Department of Jai Bangla Scheme
জয়বাংলা পেনশন প্রকল্প কে বর্তমানে দুটি পৃথক ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে; একটি হচ্ছে তফসিলি বন্ধু আরেকটি হয়েছে জয় জোহার পেনশন প্রকল্প। তপশিলি বন্ধু পেনশন প্রকল্পে শুধুমাত্র এস সি সম্প্রদায়ের সমস্ত ব্যক্তিরাই আবেদন করতে পারবেন এবং জয় জোহার পেনশন প্রকল্পে তপশিলি জাতিরা আবেদনের করতে পারবেন। মানবিক পেনশন এর ক্ষেত্রে একত্রিত সকলেই আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
জয় বাংলা প্রকল্পের সাথে যুক্ত হওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের নাম| Multiple project of Jai Bangla Scheme
পশ্চিমবঙ্গে পূর্বে যে ভাতা বা পেনশন প্রকল্প গুলি ছিল তার সঙ্গে বহু নতুন-পুরনো প্রকল্প একত্রিত হয়ে মিলিত হয়েছে অনেকগুলো প্রকল্প অর্থাৎ সমস্ত সরকারি পেনশন প্রকল্প গুলোকে একটি ছাতার নিচে আনা হচ্ছে, আর নিম্নলিখিত প্রকল্পগুলি মিলিত হয়ে জয় বাংলা প্রকল্প নামকরণ করা হয়েছে।
১) মানবিক প্রকল্প
২) কৃষক বার্ধক্য ভাতা
৩) শিল্পী বার্ধক্য পেনশন
৪) তাঁত শিল্প বার্ধক্য পেনশন
৫) জয় জোহার প্রকল্প
৬) তপশিলি বন্ধু প্রকল্প (NEW)
৭) বিধবা ভাতা প্রকল্প
৮) বার্ধক্য ভাতা
৯) লোক প্রসার প্রকল্প
প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য | Features of Jai Bangla Scheme
পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত জয়বাংলা পেনশন প্রকল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল:
- যারা সুবিধাভোগী তারা সরাসরি তাদের ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাবেন।
- উক্ত প্রকল্পে আবেদন পদ্ধতি খুবই সহজ এবং ঝামেলামুক্ত ।
- প্রকল্পটির অধীনে থাকা সুবিধা ভোগীরা বার্ধক্য, বিধবা এবং মানবিক ও প্রতিবন্ধী পেনশনের জন্য একই সাথে আবেদন করতে পারবেন।
- জয় বাংলা প্রকল্পের আওতায় রাজ্যে কয়েক লক্ষ সাধারণ মানুষ উপকার পাবেন।
প্রকল্পের সুবিধাসমূহ | Benefits of Jai Bangla Scheme
- জয়বাংলা প্রকল্পের সুবিধা রাজ্যের সব সাধারণ মানুষ লাভ করতে পারবেন।
- জয়বাংলা প্রকল্পের আওতায় সাধারণ মানুষ তাদের ব্যাংক একাউন্টে ১০০০ টাকা করে পাবেন।
- জয়বাংলা প্রকল্পে তপশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য শ্রেণীর জাতিরা সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
- জয়বাংলা প্রকল্পে যুক্ত দুটি নতুন প্রকল্প, যথাক্রমে ~ তপশিলি বন্ধু প্রকল্প ও জয় জোহার প্রকল্প দুটির মাধ্যমে তপশিলি জাতি ও উপজাতি বয়স্ক মানুষরা অনেক উপকৃত হবেন।
- এই প্রকল্পের অধীনে প্রাপ্ত অর্থমূল্য সরাসরি সুবিধাভোগীর ব্যাংক একাউন্টে প্রতিমাসে জমা পড়বে।
- পূর্বে যে সকল সুবিধাভোগীরা বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা এবং বিকলাঙ্গ ভাতা পাচ্ছিলেন সেই সমস্ত ব্যাক্তিদের জয় বাংলা প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। যাঁরা ৬০০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা পেয়ে থাকেন বর্তমান সেই সব ব্যক্তিরা ১০০০ হাজার টাকা করে পাবেন।
- ট্রাইবাল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের 'জয় জোহার প্রকল্প' বার্ধক্য ভাতা সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং মানবিক পেনশনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে W&CD বিকলাঙ্গ ভাতার । এর ফলে মানুষের অনেকটা সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জয়বাংলা পেনশন প্রকল্প যোগ্যতার মানদন্ড |Eligibility of Jai Bangla Scheme
জয়বাংলা পেনশন প্রকল্প আবেদনের জন্য নিম্নলিখিত যোগ্যতা আবশ্যক:
- এই প্রকল্পের জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ৬০ বছর হতে হবে।
- মানবিক ও বিধবা পেনশন এর ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
- অবশ্যম্ভাবীভাবে আবেদনকারীর কাস্ট সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
- জয় বাংলা প্রকল্পে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীর নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে যার মাধ্যমে সরাসরি টাকা ট্রান্সফার করা যেতে পারে।
প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র বা ডকুমেন্টস| Require documents of Jai Bangla Scheme
এই প্রকল্পে আবেদনের জন্য যে সমস্ত ডকুমেন্টসগুলি লাগবে তা হল :
(1) ভোটার কার্ড
(2) আধার কার্ড
(3) ব্যাংক একাউন্ট এর তথ্য
(4) জাতির শংসাপত্র
(5) আয়ের শংসাপত্র
(6) ডিজিটাল রেশন কার্ড
(7) আবাসিক শংসাপত্র
(8) নমিনির প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
প্রকল্পে আবেদনের পদ্ধতি | Application process for Jai Bangla Scheme
এই প্রকল্পে আবেদনের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে করা যেতে পারে। প্রকল্পের আবেদন এর ফর্ম সরাসরি ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে আবেদনকারী গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস বা বিডিও অফিসে গিয়ে জমা দেবেন এবং আবেদন করবেন। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কমিশনার কর্তৃপক্ষ ডকুমেন্ট যাচাই করার পরই যথাযথ বাছাই করবেন।
প্রকল্পটিতে অনলাইনে আবেদন | Online application of Jai Bangla Scheme
অনলাইন আবেদন করতে www.jaibangla.wb.gov.in/ এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করা যাবে। যেসব আবেদনকারীরা অফলাইনে আবেদন করতে চান তাঁরা নিকটবর্তী গ্রাম পঞ্চায়েত, অঞ্চল অফিস কিংবা ব্লক অফিস (BDO), থেকে ফর্ম সংগ্রহ করে নেবেন এবং প্রয়োজনীয় নথি পূরণ করে নির্দিষ্ট ব্লক (BDO) অফিসে জমা করতে পারেন । তবে বর্তমানে আবেদন করার জন্য 'দুয়ারে সরকার' প্রকল্পের মাধ্যমে করা যেতে পারে । আবেদন করতে ইচ্ছুক প্রার্থীরা জয় জোহার প্রকল্প ফর্ম বা তপশিলি বন্ধু ফর্ম ভরে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
প্রকল্পের রূপায়ণ | Implementation of Jai Bangla Scheme
পূর্বে সব মিলিয়ে রাজ্যের সর্বমোট ২০ লক্ষ মানুষ পেনশন পেতেন। ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পে সব মিলিয়ে বর্তমানে ৬০ লক্ষ মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই প্রকল্পে সরকারের খরচ হয়েছে ১,২০০ কোটি টাকা।
প্রশ্নোত্তর - Frequently Asked Questions
জয়বাংলা প্রকল্পটির সূত্রপাত কবে ঘটে ?
২০২০ সালে মে মাসের প্রথম দিকে জয় বাংলা প্রকল্প শুরু করার কথা বলা হয়েছিল এবং ২০২০ সালেরই মার্চ মাসের প্রথম দিকে বাস্তবায়িত করা হয়।
জয় বাংলা প্রকল্পের সাথে যুক্ত হওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের নামগুলি কি?
১)মানবিক প্রকল্প, ২)কৃষক বার্ধক্য ভাতা, ৩) শিল্পী বার্ধক্য পেনশন , ৪) তাঁত শিল্প বার্ধক্য পেনশন , ৫) জয় জোহার প্রকল্প , ৬) তপশিলি বন্ধু প্রকল্প (NEW) ,৭) বিধবা ভাতা প্রকল্প , ৮)বার্ধক্য ভাতা , ৯) লোক প্রসার প্রকল্প ।
জয়বাংলা প্রকল্পের দুটি প্রধান বিভাগের নাম কী ?
জয়বাংলা পেনশন প্রকল্প কে বর্তমানে দুটি পৃথক ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে; একটি হচ্ছে তফসিলি বন্ধু আরেকটি হয়েছে জয় জোহার পেনশন প্রকল্প। তপশিলি বন্ধু পেনশন প্রকল্পে শুধুমাত্র এস সি সম্প্রদায়ের সমস্ত ব্যক্তিরাই আবেদন করতে পারবেন এবং জয় জোহার পেনশন প্রকল্পে তপশিলি জাতিরা আবেদনের করতে পারবেন। মানবিক পেনশন এর ক্ষেত্রে একত্রিত সকলেই আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
জয় বাংলা প্রকল্পে আবেদনের জন্য যে সমস্ত ডকুমেন্টসগুলি লাগবে সেগুলি কি?
(1) ভোটার কার্ড, (2) আধার কার্ড, (3) ব্যাংক একাউন্ট এর তথ্য, (4) জাতির শংসাপত্র, (5) আয়ের শংসাপত্র, (6) ডিজিটাল রেশন কার্ড, (7) আবাসিক শংসাপত্র, (8) নমিনির প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট।