Cyclone Michaung Update | আজই ল্যান্ডফল ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজ়াউম’ এর! ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে বইছে ঝোড়ো হাওয়া! বঙ্গের ১১টি জেলাতেও জারি সতর্কতা!
‘মিগজ়াউম’ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অন্ধপ্রদেশে সতর্কতা জারি। ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া শুরুর সময়ই প্রায় ১০০ কিমি বেগে বইছে হাওয়া। কলকাতা-সহ বঙ্গের ১১ রাজ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টির সতর্কতা।
ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজ়াউম’ (Cyclone Michaung ) এর তান্ডবে কার্যত লন্ডভন্ড তামিলনাড়ু- চেন্নাই! জলমগ্ন অধিকাংশ অঞ্চল। এবার তান্ডব চালাতে ক্রমশ অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে এগিয়ে চলেছে এই ঘূর্ণিঝড়। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড়ের সামনের ভাগ ইতিমধ্যেই প্রবেশ করেছে অন্ধ্রপ্রদেশে। এই সময়ে ৯০ থেকে ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। এদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু করে ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজ়াউম’।
ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজ়াউম’ এর ল্যান্ডফল :
ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট (Cyclone Update) সম্পর্কে মৌসম ভবন জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone in Bay of Bengal) শক্তি বাড়াচ্ছে। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় এই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থল ছিল ওঙ্গোলের ২৫ কিমি পূর্ব-দক্ষিণপূর্বে। এরপর দুপুর দেড়টা নাগাদ শুরু হয় ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া। ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট (Cyclone Update) অনুযায়ী , সকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের একটা অংশ ভূভাগের ওপর অবস্থান করছিল। তবে দুপুর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থল ভূভাগে প্রবেশ করে। এই সময়ে ঝোড়ো হাওয়ার বেগ থাকার কথা ঘণ্টায় ১০০ কিমি। জানা গিয়েছে দক্ষিণ অন্ধ্রের উপকূল দিয়ে ভূভাগে প্রবেশ করছে এই ঘূর্ণিঝড়টি। ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এই আবহে।
দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের সার্কেল স্থলভাগ স্পর্শ করে এগিয়ে যাচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়াবিদদের অনুমান অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর ও মছলিপত্তনামের মাঝামাঝি বাপাটলা উপকূলে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে স্থলভাগে। সেই সময় এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার হবে ৷ সর্বোচ্চ যা ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগ হতে পারে। দক্ষিণবঙ্গে পুরোপুরি মেঘলা আকাশ। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা ১১ জেলাতে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজ়াউম’ এর তান্ডব :
ঘূর্ণিঝড়ের সামনের ভাগ ইতিমধ্যেই প্রবেশ করেছে অন্ধ্রপ্রদেশে। এই সময়ে ৯০ থেকে ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে বুধবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ওড়িশা উপকূলেও বুধবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ মৎস্যজীবীদের। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ ভারতে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরি উপকূলে। বৃষ্টি হতে পারে অন্ধ্রপ্রদেশ কেরালা, মাহে, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, পন্ডিচেরি ও করাইকালে। বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
পাশাপাশি চেন্নাইয়ের আবহাওয়ার খবর (Chennai Weather News) অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজ়াউম’ এর প্রভাবে ভারী বর্ষণে ইতিমধ্যেই ভেসে গিয়েছে চেন্নাই। প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে বহু এলাকা জলমগ্ন। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তাঘাট কার্যত নদীতে পরিণত হয়েছে। বহু যানবাহন জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। জায়গায় জায়গায় বড় বড় গাছ, দেওয়াল এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বন্যার জল প্রবেশ করায় বেশ কয়েকটি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা সাময়িক ভাবে স্থগিত। জলরুদ্ধ হয়ে পড়েছে মেট্রো স্টেশনগুলি। অবিরাম বর্ষণের কারণে বেশ চেন্নাইয়ের কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। প্রশাসনের তরফে চেন্নাইয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বেসরকারি অফিসের কর্মীদেরও বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। গতকাল, ৩রা ডিসেম্বর ১৪৪ ধারা জারি করা হয় পুদুচেরি (Puducherry) উপকূলে। প্রবল বৃষ্টির জেরে নির্মীয়মাণ ভবনের দেওয়াল ভেঙে যাওয়ার ফলে চেন্নাইয়ের ইস্ট কোস্ট রোডে মৃত্যু হয় দুই ব্যক্তির।
চেন্নাইয়ের আবহাওয়ার খবর (Chennai Weather News) অনুযায়ী, বৃষ্টি থেমে গেলেও চেন্নাই এখনও জলমগ্ন। ফলে ৫৫০টি উড়ান বাতিল করেছে ইন্ডিগো (IndiGo)। ভিস্তারা (Vistara) বাতিল করে ১০টি উড়ান। সব মিলিয়ে চেন্নাইকে সংযোগকারী ১০০০টি উড়ান বাতিল হয় গতকাল। যদিও এদিন দুপুর থেকে ফের চেন্নাই থেকে উড়ান পরিষেবা শুরু করেছে ইন্ডিগো। তবে ৫ ই ডিসেম্বর বাতিল থাকবে ১২২৪৬ স্যার এম বিশ্বেশরায়া টার্মিনাল বেঙ্গালুরু-হাওড়া দুরন্ত এক্সপ্রেস। ১২৮৪০ চেন্নাই-হাওড়া মেল বাতিল থাকবে ৫ ই ডিসেম্বর এবং ৬ই ডিসেম্বর। ২২৮৬৪ স্যার এম বিশ্বেশরায়া টার্মিনাল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সাপ্তাহিক সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস বাতিল থাকবে ৬ ই ডিসেম্বর। ৫ ই ডিসেম্বর এবং ৬ ই ডিসেম্বর বাতিল থাকবে ১২৮৬৪ স্যার এম বিশ্বেশরায়া টার্মিনাল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। ১২৮৬৮ পুদুচেরি-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস বাতিল থাকবে ৬ই ডিসেম্বর। ১২৮৪২ চেন্নাই সেন্ট্রাল-শালিমার করমণ্ডল এক্সপ্রেস বাতিল থাকবে ৫ই এবং ৬ ই ডিসেম্বর।
পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া :
ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজ়াউম’ এর প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal weather) এর ওপরেও। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone in Bay of Bengal)‘মিগজ়াউম’ ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ে বাংলার ভাগ্যে শুধুই মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টি।ই থাকছে। দুর্যোগের আশঙ্কা নেই। তবে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে কার্যত বদলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal weather)। উধাও শীতের আমেজ। দিনভর মেঘলা আকাশ দক্ষিণবঙ্গে। বেড়েছে তাপমাত্রাও। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা-মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ১১ জেলাতে।
পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News) অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার এর মধ্যে বৃষ্টি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতে। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তর ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া এবং কলকাতা জেলায়। বৃষ্টির সঙ্গে হালকা ঝোড়ো হওয়া হতে পারে উপকূলের জেলাগুলিতে। ঝোড়ো হাওয়া বা মৎস্যজীবীদের জন্য কোনও সতর্কবার্তা নেই বাংলা উপকূলে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় সাত ডিগ্রি বেড়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার মূলত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে শহরে। তবে জানা গিয়েছে শুক্রবার থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে, শনিবার থেকে ফের নামতে পারে তাপমাত্রার পারদ।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News) অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গের জেলায় একই রকম পরিবেশ। শুকনো আবহাওয়া থাকবে আরও চার-পাঁচ দিন। উত্তরপূর্ব ভারত লাগোয়া জেলাগুলি এবং পার্বত্য এলাকায় কুয়াশার সম্ভাবনা রয়েছে। পার্বত্য এলাকা ছাড়া আপাতত মেঘমুক্ত পরিষ্কার আকাশ। আগামী তিন চার দিনে উত্তরবঙ্গে তাপমাত্রা প্রায় একই রকম থাকবে।
- Related topics -
- দেশ
- আবহাওয়া
- আবহবিদ
- আবহাওয়া দফতর
- আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর
- আবহাওয়া আপডেট
- আবহাওয়া দফতর
- ভারত
- দক্ষিণবঙ্গ
- উত্তরবঙ্গ
- শহর কলকাতা
- বৃষ্টিপাত
- ঘূর্ণিঝড়
- চেন্নাই
- তামিলনাড়ু
- অন্ধ্রপ্রদেশ
- রাজ্য