Cyber Crime | পরিচিত ব্যক্তির কণ্ঠস্বরে ফোনে কেউ টাকা চাইছে? সাবধান! AI ভয়েস ক্লোনিং দ্বারা প্রতারিত হচ্ছেন বহু!
এআই ক্লোনিং দ্বারা ব্যবহার করে সাইবার প্রতারণার নয়া জাল বিছিয়েছে প্রতারকরা। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে দেশে সাইবার প্রতারণার আর্থিক অংক ৭০,০০০কোটি!
সাইবার প্রতারণা এই ডিজিটাল যুগে প্রায় সকলের কাছেই বড় চিন্তা ও ভয়ের কারণ। যত সমাজ উন্নত হচ্ছে, যত ডিজিটালাইজড হচ্ছে সব ততই যেন বাড়ছে এই ধরণের অপরাধ। যেমন বর্তমানে যত ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংস্থা (artificial intelligence companies in india) এবং এআই-র ব্যবহার বাড়ছে ততই বাড়ছে এই নয়া প্রযুক্তি দ্বারা প্রতারণা। এমনকি এখন AI Voice cloning app সব থেকে বড় মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতারকরা বিভিন্নভাবে যে কোনও মানুষের কণ্ঠস্বর জোগাড় করছে। তারপর ভয়েস ক্লোনিং অ্যাপের মাধ্যমে সেই কণ্ঠস্বরের হুবহু বাক্য তৈরি করছে। এবং সেটিকে ডিজিটাল ভাবে চালিয়ে প্রতারণা করছে বিভিন্ন মানুষকে। আর এভাবেই সাধারণ মানুষের খোয়া যাচ্ছে প্রচুর অর্থ। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিই ভারতের বিভিন্ন সাইবার থানা থেকে আরম্ভ করে স্থানীয় থানায়, সাইবার অপরাধের অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়ছে। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ২০২৩এ সাইবার আর্থিক প্রতারণার অঙ্ক এসে দাঁড়িয়েছে ৭০,০০০কোটি টাকার কম বেশি। আর সেই প্রতারণার টাকার ১০%বেশি উদ্ধার হয়নি এখনও পর্যন্ত।
প্রতারণার নয়া ভয় এআই ভয়েস ক্লোনিং :
এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-র ব্যবহার বেশ বেড়েছে। গোটা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারতও পিছিয়ে নেই। ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংস্থা (artificial intelligence companies in india) এর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। সাধারণ মানুষের কাছে আরও সহজ লোভ্য হয়ে উঠছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। কিন্তু সব ভালোরই খারাপ রয়েছে। এক্ষেত্রেও তাই। সাইবার প্রতারকরা এআই-র সাহায্যে প্রতারণার নয়া জাল পেতেছে। জানা গিয়েছে, প্রতারকরা বিভিন্নভাবে যে কোনও মানুষের কণ্ঠস্বর জোগাড় করছে। তারপর ভয়েস ক্লোনিং অ্যাপের মাধ্যমে সেই কণ্ঠস্বরের হুবহু বাক্য তৈরি করছে। এবং সেটিকে ডিজিটাল ভাবে চালিয়ে প্রতারণা করছে বিভিন্ন মানুষকে। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমি আপনি যে রকম ভাবে কথা বলি, ঠিক সেই ভাবেই একই কন্ঠস্বর নকল করা হয় এই অ্যাপের মাধ্যমে। যার ফলে যারা ওই কণ্ঠস্বরটি চিনতে পারেন, তেমন লোককে ফোন করে টাকা চাওয়া হচ্ছে। কোনও ব্যক্তি যখনই তার পরিচিত এই কন্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছেন, তখনই তিনি কোনও কিছু না বুঝেই প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে দিচ্ছেন। যার ফলে ঠকছে প্রচুর মানুষ। প্রতারকরা সামাজিক মাধ্যম থেকে ভিডিও বা অডিও জোগাড় করছে। নইলে নানা অছিলায় ফোন করে ভয়েস রেকর্ড করে নিচ্ছে। তার পর সেই কণ্ঠস্বরকে নকল করছে।
এই ধরনের ঘটনায় ইতিমধ্যে ভুক্তভোগী দিল্লি, নয়ডা এবং তামিলনাড়ুর বিভিন্ন বয়স্ক মানুষেরা। সাইবার আধিকারিকদের বক্তব্য, সাইবার প্রতারকরা ভয়েস ক্লোনিং অ্যাপের মাধ্যমে ফোন করে বেশিরভাগই বয়স্ক এবং আর্থিক ভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের টার্গেট করছে। ভয়েস ক্লোনিং অ্যাপের মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে তার একান্ত পরিচিত ব্যক্তির কণ্ঠস্বর বসিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে। যেহেতু পরিচিত কণ্ঠস্বর সেহেতু কোনও বাছবিচার না করে ফোনের ওপাশ থেকে পরিচিত ব্যক্তির চাহিদা মতো টাকা দিয়ে ফেলছেন ফোন প্রাপক। যখন জানতে পারছেন আসল ঘটনা, তার আগেই সাইবার প্রতারকরা রীতিমতো বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে কেটে পড়ছে। এই নয়া প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকতে সাইবার আধিকারিকরা পরামর্শ দিচ্ছেন যাতে কোনও বিপদের ফোন এলে আগে ফোনটি কেটে সেই ব্যক্তিকে ফোন করে তার বিপদের কথা জেনে নেওয়া। এটুকু পরীক্ষা না করে নিলে আগামিদিনে প্রচুর মানুষ প্রতারিত হবেন।
২০২৩ সালের সাইবার প্রতারণার আর্থিক অংক ৭০,০০০কোটি!
ফোনের মাধ্যমে, মেসেজের মাধ্যমে, ভুয়া আইপি ঠিকানা (fake ip address) দিয়ে সাইবার প্রতারণার ঘটনা নতুন নয়। রোজই এই অপরাধের শিকার হয়ে থাকেন অসংখ্য মানুষ। জমা পরে অসংখ্য অভিযোগ। তবে সাইবার প্রতারণার শিকার হওয়ায় দেশে কত অর্থ চুরি হয় সেই অংকটা সকলের কাছেই অজানা। সম্প্রতি এই বিষয় সংক্রান্ত তথ্য জানিয়েছে সাইবার দফতর। জানা গিয়েছে, ২০২২সালে সাইবার প্রতারণার আর্থিক অংক ছিল ১০০০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। তবে ২০২৩এ সেই আর্থিক প্রতারণার অঙ্ক এসে দাঁড়ায় ৭০,০০০কোটি টাকার কম বেশি। আর সেই প্রতারণার টাকার ১০%বেশি উদ্ধার হয়নি এখনও পর্যন্ত।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতবর্ষে বড় শহর থেকে ছোট শহরগুলিতে সাইবার প্রতারণার শিকার বেশি। এছাড়াও দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ প্রতারকদের ভুয়া আইপি ঠিকানা (fake ip address) বিদেশী। যেমন দুবাই, বাংলাদেশ, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশের। রাজ্যের সাইবার আধিকারিকদের দাবি, পাকিস্তান কিংবা ওই জাতীয় যে সমস্ত দেশ রয়েছে, সেখানে ওই IP সংক্রান্ত কোনও চিঠি লিখলে তার উত্তর পাওয়া যায় না। যার ফলে ওই প্রতারকদের নাগাল পাওয়া যায় না। এই সমস্ত তথ্য পাচারের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলির ভূমিকা সব থেকে বেশি। কারণ ব্যাঙ্কগুলি বিভিন্ন এজেন্ট মারফত লোন দেবার নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের গোপন নথি জোগাড় করে। যেগুলি সাইবার প্রতারকদের হাতে চলে যায়। ফলে সাইবার প্রতারকদের ফোন ৮০% বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে ওদের শিকারদের কাছে।
সাইবার ক্রাইম আধিকারিক সূত্রে খবর, প্রতিবছর ১৫-২০% হারে সাইবার অপরাধ বাড়ছে। সারা দেশের মধ্যে বছরে পশ্চিমবঙ্গে বছরে ৮০,০০০ এর বেশি সাইবার অপরাধের অভিযোগ জমা পড়ছে। যে অভিযোগ কলকাতা, শিলিগুড়ি, বর্ধমান, বাঁকুড়া এই ধরনের রাজ্যের ছোট বড় শহরগুলির থেকে হচ্ছে। তবে সাইবার অপরাধীরা গ্রাম বাংলাকে অপেক্ষাকৃত কম টার্গেট করছে।