Christmas Plum Cake | বড়দিনে বাড়িতেই সহজে বানিয়ে ফেলুন সুস্বাদু ক্রিসমাস প্লাম কেক! সঙ্গে জানুন কীভাবে ক্রিসমাসে কেক খাওয়ার প্রচলন শুরু হলো!
ক্রিসমাস ডেকোরেশনে সেজে উঠেছে চারিপাশ। এবার বড়দিন আরও ভালোভাবে উজ্জাপন করতে বাড়িতে সহজে বানান ক্রিসমাস প্লাম কেক। জানুন কীভাবে ক্রিসমাসে কেক খাওয়ার প্রচলন এলো।
ক্রিসমাস ২০২৩ (Christmas 2023) উপলক্ষ্যে গোটা শহরের অলি-গলি সেজে উঠেছে ক্রিসমাস ডেকোরেশন (Christmas Decorations) এ। চারিদিকে আলো, ক্রিসমাস ট্রিতে সেজে উঠেছে তিলোত্তমা। যেমন রেস্তোরাঁগুলিতেও চলছে দেদার খানাপিনা। তেমনি বেকারি অর্থাৎ কেকের দোকানেও দেখা যাচ্ছে ভিড়। বড়দিন মানেই কেক। বিশেষ করে ফ্রুট কেক, প্লাম কেক। অনেকেই বড়দিন উপলক্ষ্যে বাড়ির জন্য কেক কেনেন। তবে ভালো দোকানের প্লাম কেকের বেশ দাম। পাশাপাশি যারা বেকিং করতে ভালোবাসেন তারাই মুখিয়ে থাকেন এই সময়ে। যদি আপনিও বাড়িতে ক্রিসমাস প্লাম কেক (Christmas Plum Cake) বানাতে চান কিন্তু বুঝতে পারছেন না কীভাবে বানাবেন, তাহলে সেই উপায় রইলো এই প্রতিবেদনে।
কীভাবে বানাবেন ক্রিসমাস প্লাম কেক?
এই কেক ‘প্লাম কেক’ নামে পরিচিত হলেও এতে প্রায় কখনই প্লাম থাকে না। এই কেক হয় শুকনো। কেউ এটাকেই আবার ‘ফ্রুট কেক’ বলেন। কেউ আবার বলেন ‘ক্রিসমাস কেক’। দেশের একেক জায়গায় এই কেকটাকে একেকরকম নামে ডাকা হয়। ব্রিটিশ জমানা থেকেই কেক ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেছে। আর, বছর শেষে এই কেক খাওয়ার রেওয়াজ তৈরি হয়ে গিয়েছে ভারতীয়দের মধ্যে। এদেশে অবশ্য এই একধরনের কেকই না। নানা ধরনের কেক তৈরির রেওয়াজ আছে। আর, সেই সব কেক তৈরির কায়দাও আলাদা।
উপকরণ : ড্রাই ফ্লটস, কিশমিশ, টুটি ফ্রুটি, অরেঞ্জ জুস,দুধ, চিনি, সাদা তেল, ভ্যানিলা অসেন্স,ময়দা, গুঁড়ো দুধ, দারচিনি পাউডার, বেকিং সোডা, বেকিং পাউডার, ভিনিগার।
আরও পড়ুন : দোকানের মতো সুস্বাদু নলেন গুড়ের রসগোল্লা বানান বাড়িতেই! সঙ্গে জানুন নলেন গুড়ের নাম কেন 'নলেন'?
পদ্ধতি:
প্রথমে একটা বড় পাত্রে কালো কিশমিশ, কিশমিশ, টুটি ফ্রুটি নিয়ে অরেঞ্জ জুসে ভিজিয়ে রাখুন ২৪ ঘন্টা। এরপর আখরোট, কাজু, পেস্তা এসব কুচিয়ে নিতে হবে। এবার একটা বাটিতে হাফ কাপ দুধ নিয়ে এক কাপ গুঁড়ো করা চিনি আর এক কাপ সাদা তেল ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার এতে ভ্যানিলা অসেন্স দিয়ে আরও একবার মিশিয়ে নিন। এবার ২ কাপ ময়দা, হাফ কাপ গুঁড়ো দুধ, এক চামচ দারচিনি পাউডার, একচিমটে নুন দিয়ে খুব ভাল করে ফেটিয়ে নিতে হবে। এবার ভিজিয়ে রাখা ড্রাইফ্রুটস, কাজু-পেস্তা একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। ব্যাটার খুব ভাল করে ফেটিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন।
এর পরের পর্যায়ে অন্য একটা প্যান বসিয়ে তাতে প্রথমে ২০০ গ্রাম চিনি দিন। ২ মিনিটের মধ্যে চিনি গলতে শুরু করবে। এবার চিনি ভাল করে নেড়ে নিয়ে ফুটলে হাফ কাপ জল মিশিয়ে নিতে হবে। ক্যারামেলে ভাল রং আসলে তা ঠান্ডা করে কেকের মিশ্রণে দিন। এবার অ্যালুমিনিয়ামের কেক টিনে ভাল করে মাখন মাখিয়ে দিতে হবে। গ্যাসে একটা ডেকচি বা গভীর কড়াই বসিয়ে গরম করে নিন। এর মধ্যে একটা স্ট্যান্ড রাখুন। এবার ব্যাটার ফয়েল বা বাটিতে ঢেলে নিয়ে উপর থেকে চাপা দিয়ে রাখুন। এবার ব্যাটারের মধ্যে ১ চামচ বেকিং সোডা, ১ চামচ বেকিং পাউডার, এক চামচ ভিনিগার দিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে কেক টিনে এই মিশ্রণ ঢেলে দিন। এবার ৪৫ মিনিট বেক করে নিতে হবে। উপর থেকে ড্রাইফ্রুটস ছড়িয়ে আরও ১০ মিনিট বেক করে নিলেই তৈরি ক্রিসমাস প্লাম কেক (Christmas Plum Cake)।
বর্তমানে ২৫ তারিখ আসতে না আসতেই চারিদিকে দেখা যায় ক্রিসমাস ডেকোরেশন (Christmas Decorations)। ক্রিসমাস ২০২৩ (Christmas 2023) এও দেখা যাচ্ছে একই চিত্র। ব্রিটিশ জমানার পর থেকেই ভারতীয় কালচারেও ঢুকে পড়েছে ক্রিসমাস সেলিব্রেশন, ক্রিসমাস ট্রি এবং কেক। তবে এই ক্রিসমাস কেকের নেপথ্যে রয়েছে ইতিহাস।
মধ্যযুগের ইংল্যান্ডে বড়দিনের আগের সপ্তাহগুলো, যাকে অ্যাডভেন্ট বলা হয়, সেখানে আত্মত্যাগ, উপবাসের মত নানারকম রীতিনীতি চালু ছিল। অনেকে বলেন, উত্সব বা ভোগের মরসুমের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করার এটা একটা কায়দা ছিল। পাশপাাশি, বিশেষ সময় উদযাপনের জন্য খাবার সংরক্ষণ করারও ব্যাপার ছিল। তাই ওই সব প্রথা মানা হত। এই সময়েই বড়দিনের প্রাক্কালে একটি বিশেষ পুডিং জাতীয় খাবার তৈরির প্রথা ছিল। এই পুডিংয়ে ওটস, শুকনো ফল, মশলা, মধু এমনকী মাংসও থাকত। মনে করা হয়, সেই প্রথাই শতাব্দীর পর শতাব্দীর বিবর্তনে পাম কেকের চেহারা নিয়েছে। যেমন ষোড়শ শতকে সেই পুডিং তৈরির ক্ষেত্রে ওটসের জায়গায় নিয়েছিল ময়দা। পাশাপাশি, মাখন এবং ডিমকে মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যেস চালু হয়েছিল। মাংস মেশানোর প্রথা বাদ পড়েছিল। ঘন পিঠের মত খাবারটি ফুটন্ত জলের পাত্রে একটি মসলিন কাপড়ের ওপর তৈরি করত। ধনী পরিবারগুলো আবার, এই কেককে বেশ করে সেঁকে নিত। ক্রিসমাস উদযাপনের পরও ১২ দিন ধরে এই পিঠে জাতীয় খাবার খাওয়া হত।