Chandrayaan 3 | চাঁদের বুকে অশোক স্তম্ভের ছাপ ফেলবে 'চন্দ্রযান-৩'! ভিডিওতে দেখুন কীভাবে কাজ করবে রোভার 'প্রজ্ঞান'!
চাঁদের দক্ষিণ মেরুর উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছে ইসরোর চন্দ্রযান-৩। ২৩সে অগাস্ট অবতরণ করে চাঁদে ঘুরে পরীক্ষার সময়ই মাটিতে অশোক স্তম্ভের ছাপ ফেলবে এই চন্দ্রযান।
গোটা বিশ্বের জন্য মহাকাশ সম্পর্কিত নতুন অধ্যায় শুরু করতে গতকাল অর্থাৎ ১৪ই জুলাই দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে পৃথিবীর ভূমি ছেড়ে চাঁদের উদ্দ্যেশ্যে পাড়ি দিয়েছে 'চন্দ্রযান-৩' (Chandrayaan-3)। সুষ্ঠুভাবে উক্ষেপন সম্পন্ন করেছে ইসরোর (ISRO) এই মহাকাশযান। এবার অপেক্ষা কেবল চাঁদের মাটিতে পৌঁছানো। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (Indian Space Research Organization) এই চন্দ্রাভিযান কেবল দেশের জন্যই নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ন। কারণ চন্দ্রযান-৩ এর যাত্রা যদি সদল হয় তাহলে সর্বপ্রথম এই যান নামবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। এর আগে কোনও যানই এই অঞ্চলে পৌঁছায়নি।
২৩সে বা ২৪ সে অগাস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণ করবে চন্দ্রযান ৩। চাঁদের এই দিকটিতে এর আগে কোনও দেশই পর্যবেক্ষণ করতে পারেনি। এছাড়াও এই মেরুতে জল ও আরও গহ্বর পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলেই চন্দ্রযান-৩ এর দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। তবে কেবল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেই নয়, চাঁদের বুকে ভারত সরকারের অশোক স্তম্ভের (Ashok Stambh) ছাপও ফেলতে চলেছে দেশের গর্ব চন্দ্রযান-৩।
ইসরো জানিয়েছে, চন্দ্রযান-৩ মিশনের মূল উদ্দেশ্য হল মহাকাশযানটিকে প্রথমে চাঁদের পৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করানো। তারপর রোভারটিকে চাঁদের পৃষ্ঠে স্থাপন করানো। এই রোভারটিই চাঁদের বুকে ঘুরে বেরিয়ে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করবে । চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানটিতে রয়েছে ছয় চাকার একটি ল্যান্ডার (Lander) ও রোভার মডিউল (Rover Module)। চাঁদের পৃষ্ঠ তথ্য সংগ্রহের জন্য এগুলিতে থাকছে একাধিক পেলোড (Payloads)। উল্লেখ্য, এই মহাকাশযানে থাকা রোভারের নাম হলো 'প্রজ্ঞান’ (Pragyan)। আর এই প্রজ্ঞানের পিছনের চাকাতেই রয়েছে ইসরোর ছাপ সমন্বিত ভারতের জাতীয় প্রতীক অশোক চক্রের প্রতীক। অর্থাৎ যখন চন্দ্রযান-৩ এর রোভারটি চাঁদের পিঠে ঘুরেফিরে কাজ চালাবে তখন তার চাকায় থাকা সেই প্রতিকৃতি ছাপ পড়ে যাবে চাঁদের বুকে।
ইতিমধ্যেই, কীভাবে রোভার চাঁদে কাজ করবে এবং কীভাবেই বা চাঁদের মাটিতে অশোক স্তম্ভের ছাপ ফেলবে তা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে ইসরোর পক্ষ থেকে তাদের অর্থাৎ ইসরোর ইউটিউব চ্যানেলে একটি গ্রাফিক্যাল ভিডিয়ো শেয়ার করা হয়েছে।
চন্দ্রযান এর রোভার কীভাবে চাঁদে কাজ চালাবে তা দেখতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে -
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে উৎক্ষেপণ করেছিল ইসরোর চন্দ্রযান-২ (Chandrayaan-2)। তবে চাঁদের মাটিতে পা রাখতে পারেনি ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার। কিন্তু ইসরোর দ্বিতীয় চন্দ্রযাত্রা সফল না হলেও পুরোপুরি কিন্তু ব্যর্থও নয়। কারণ অরবিটার (Orbiter) এখনও কাজ করে চলেছে। সেইবার ইসরো তাদের ইউটিউব চ্যানেলে দৃশ্যকল্পের একটি ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা শেয়ার করেছিল।ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে চাঁদের পিঠে প্রথমে সফ্ট অবতরণ করে ল্যান্ডারটি। এর পর এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যায় ল্যান্ডারটি। তারপর এর মধ্যে থাকা রোভারটি বেরিয়ে আসে ধীরে ধীরে। দেখা যায় রোভারের দুই দিকে তিনটি, তিনটি করে মোট ছয়টি চাকা রয়েছে। শক্তি উৎপন্ন করার জন্য রয়েছে একটি সোল্যার প্যানেলও। সোলার প্যানেলটির মাথার দিকে রয়েছে দু'টি ট্রান্সমিট অ্যান্টেনা (Transmit Antennas)। বাম দিক ও ডান দিকে রয়েছে দু'টি ন্যাভিগেশন ক্যামেরা। রয়েছে একটি এপিএক্সএস (Alpha Particle X-ray Spectrometer)। এছাড়াও রয়েছে রোকার বগি অ্যাসেম্বলি (Rocker Compartment Assembly)। এই অত্যাধুনিক রোভার যখন চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে পরীক্ষা শুরু করে তখনই দেখা যায় এর পেছনের চাকা মাটিতে ছাপ ফেলছে অশোক স্তম্ভের।
ইতিমধ্যেই, গতকাল উৎক্ষেপণের পরে আজ শনিবার পৃথিবীর কক্ষপথে ঢুকে গেছে চন্দ্রযান-৩ । আলাদা হয়েছে পেলোডও। এরপর পৃথিবীর কক্ষে পাঁচ বার প্রদক্ষিণ করে চাঁদের পথ ধরবে ইসরোর চন্দ্রযান। জানা গিয়েছে, সব ঠিক থাকলে আগামী ৫ থেকে ৬ই অগাস্ট চাঁদের কক্ষপথে ঢুকে যাবে চন্দ্রযান-৩। প্রপালসন মডিউল আলাদা হয়ে যাবে ল্যান্ডার থেকে। এরপর ২৩সে অগাস্ট গতি কমিয়ে চাঁদের মাটিতে ধীরে ধীরে নামানো হবে ল্যান্ডার বিক্রমকে।