কলার উপকারিতা

কলার উপকারীতা ও খাদ্যগুণ, Benefits and food value of banana in bengali

কলার উপকারীতা ও খাদ্যগুণ, Benefits and food value of banana in bengali
Key Highlights

কলা বিভিন্ন গুণাগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল। এই ফলটিতে রয়েছে দৃঢ় কোষ গঠনকারী কিছু উপদান যথা ভিটামিন এবং খনিজ। তাছাড়া ক্যালরির একটি ভাল উৎস হল কলা। এই ফলে কঠিন খাদ্য উপাদান এর সাথে সাথে জল জাতীয় উপাদানের সমন্বয় অন্য কোন তাজা ফলের তুলনায় বেশি পরিমাণে বিদ্যমান। অন্যদিকে কলার মধ্যে উপস্থিত থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উত্‍পাদনে সহায়তা করে।

কলার বিভিন্ন পুষ্টিগুণ, Nutrient benefits of banana

কলার মতো সর্বগুণসম্পন্ন খুব কম ফলই আছে। কলায় উপস্থিত ভিটামিন, মিনারেল আর ফাইবার আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। এছাড়াও এই ফলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কলা খাওয়া উচিত। কলায় প্রচুর পুষ্টিগুণ বর্তমান। যেমন -

● ত্বক সুস্থ রাখা : কলা আমাদের ত্বক সুস্থ রাখার জন্য খুব ভালো একটি খাবার। কলার মধ্যে ভিটামিন C বিদ্যমান যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

● চুলের ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়ে তোলা: কলাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় তা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাছাড়াও কলায় থাকা ভিটামিন বি-6 এবং ভিটামিন সি চুলের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে এবং চুলকে মজবুত করে তোলে।

● শরীর থেকে ফ্যাট কমানো: কলায় কোলিনসহ সকল ধরনের ভিটামিন B রয়েছে যা শরীরে চর্বি জমতে দেয় না। তাছাড়া কলায় সহজে হজমযোগ্য শর্করা থাকে এবং এই শর্করা পরিপাকতন্ত্রতে খাদ্য সহজে হজম করতে সাহায্য করে। 

Also read :

কলা খাওয়ার উপকারিতা কি কি? Advantages of eating banana

দামে কম কিন্তু মানে সেরা এমনই একটি খাবার হল কলা যা খেতেও সুস্বাদু। কলা অনেকেরই প্রিয় ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি যথা মিনারেল, ফাইবার ইত্যাদি রয়েছে। এসব উপাদান দেহের সুস্থতার জন্য খুবই উপকারী। জেনে নিন কলার উপকারিতা কি কি!

• কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। আমাদের দেহে পটাশিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে হলে প্রতিদিন একটি কলা খাওয়া উচিত।

• কলা এক মিষ্টি ফল হলেও সুগার বাড়ায় না। এর জিআই ভ্যালু ভালো হওয়ায় কারণে ডায়াবেটিস
রোগীরা নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।

• দেহে দুর্বলতা দেখা দিলে এই ফল খেলে শরীরে শক্তি পাওয়া যাবে।

• কলায় পটাশিয়ামের পাশাপাশি ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। উক্ত দুই উপাদানই আমাদের দেহের হাড়কে শক্ত করতে কার্যকরী।

• কলায় থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধান করে।

ছোট বাচ্চাদেরও কলা খাওয়ানো কেন উচিত, Why should little children eat bananas in a regular basis?

• ফাইবার থাকায় কলা শিশুদের পেট পরিষ্কার রাখে এবং পাশাপাশি হজমশক্তিও বৃদ্ধি করে।

• কলায় ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বর্তমান। এই উপাদানগুলোও শিশু সহ বড়দের দেহের জন্যও অনেক উপকারী।

•শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্যও কলা খাওয়া খুব আবশ্যক।

আমাদের দেহের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে কলার প্রয়োজনীয়তা, Banana in combating various diseases of our body

কলায় অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট থাকে এবং এই অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যের সমস্যা, যেমন হার্টের অসুখ, শারীরিক দুর্বলতা দূর করা ইত্যাদির ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী।

● কলা আমাদের হার্ট সুস্থ রাখার জন্য জরুরী। নিয়মিত একটি কলা খাওয়ার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে। তাই নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় কলা রাখলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভবনা কম হয়ে যায়। এই ফল পটাশিয়ামের এক অনন্য উৎস হওয়ার কারণে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। তাই বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা নিয়মিত কলা খান তাদের অন্যদের থেকে হার্টের সমস্যা কম হয় এবং হজম ক্ষমতা বেশি।

● কলা নিয়মিত খাওয়ার কারণে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই উপকারী ফলটি হাইপারটেনশন  রোগও নিয়ন্ত্রিত করে। যেহেতু কলা সোডিয়াম মুক্ত হয় সেকারণে রক্তের সমস্যার জন্য কলা খুব উপযোগী।

● রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং কিডনির কাজকর্ম ভালো রাখার জন্য পটাশিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নিয়মিত কলা খেলে আমদের কিডনির কার্যক্রম ভালো রাখা সম্ভব। এক গবেষণায় লক্ষ্য করা হয়েছে যে সপ্তাহে ৪-৬ টি কলা খাওয়ার মাধ্যমে কিডনি রোগের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কম হয়ে যায়। তাই সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত কলা খাওয়া উচিত।

Also read :

কলা খাওয়ার ক্ষতিকর কিছু দিকও রয়েছে, Harmful sides of eating banana 

কলার যেমন বহু উপকারিতা রয়েছে তেমনি কলা খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে।

• কলায় অনেক বেশি পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে। তাই অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুতরাং আমাদের পরিমান মতোই কলা খাওয়া উচিৎ। এক দিনে ২ টি কলা খাওয়া যথেষ্ট, এর বেশি না খাওয়াই ভালো।

• কলা শর্করা সমৃদ্ধ একটি নরম এবং কিছুটা আঠালো ধরনের খাবার। তাই কলা খাওয়ার পর ব্রাশ করে নেওয়া উচিত, তা না হলে দাঁত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যেতে পারে।

• গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কলা খাওয়ানো উচিত। কলায় অনেক বেশি পরিমাণ অ্যামিনো এসিড রয়েছে। তাই অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে রক্তনালিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

• কারোর যদি এলার্জি জনিত সমস্যা থাকে তবে সেই ব্যক্তির কলাগাছের মুকুল বা কান্ড না খাওয়াই উত্তম।

উপসংহার, Conclusion 

দেহে শক্তির যোগান দিয়ে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করার ক্ষেত্রে কলা একটি অত্যন্ত উপকারী ফল। দিনের শেষে
অত্যন্ত সহজলভ্য ও সস্তা এই ফল আপনার পুষ্টির চাহিদা মেটানোর সাথে খিদে মেটাতেও সহায়তা করে। পাশাপাশি কাঁচা কলাও এক সহজলভ্য সবজি যা খাবার তালিকায় রাখলে সহজেই আপনার পুষ্টির চাহিদা মিটবে। তাহলে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে কলার পুষ্টিগুণ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা প্রয়োজনীয়।

Also read :