আন্তর্জাতিক

Bangladesh MP Murder | বাংলাদেশী সাংসদকে খুনের জন্য ৫ কোটি টাকা সুপারি! কসাই ডেকে ছাল-হাঁড় ছাড়িয়ে টুকরো করে দেহ লোপাট! রয়েছে 'হানি ট্র্যাপ'ও!

Bangladesh MP Murder | বাংলাদেশী সাংসদকে খুনের জন্য ৫ কোটি টাকা সুপারি! কসাই ডেকে ছাল-হাঁড় ছাড়িয়ে টুকরো করে দেহ লোপাট! রয়েছে 'হানি ট্র্যাপ'ও!
Key Highlights

সন্দেহ করা হচ্ছে, আনারকে খুন করার পরিকল্পনা অন্তত একমাস আগে করা হয়েছিল। আনারকে খুন করতে ‘হানি ট্র্যাপ’ ব্যবহার করা হয়। এই গোটা খুনের ঘটনার পেছনে 'মাস্টারমাইন্ড' হিসেবে উঠে আসছে আনওয়ারুল আজিমের বাল্যকালের বন্ধু আখতারুজ্জামান শাহীন নামক এক ব্যক্তির নাম।

বাংলাদেশি সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের ‘খুনের’ ঘটনায় তোলপাড় দুই দেশ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সামনে আসছে ভয়াবহ রহস্য! বাংলাদেশী সাংসদ খুনের ঘটনা নিচ্ছে নয়া মোড়। সিআইডি (CID) সূত্রে খবর, ঝিনাইদহ (jhenaidah)-৪ আসনের  সাংসদের দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা হয়েছে! এমনকি আনারকে খুন করতে ব্যবহার করা হয় ‘হানি ট্র্যাপ’ বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন শিলাস্তি রহমান নামে এক মহিলা, জিহাদ হাওলাদার নাম এক কসাই।

ঘটনার সূত্রপাত :

গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন আজিম। প্রথমে তিনি উঠেছিলেন বরাহনগরের এক বন্ধুর বাড়িতে। সেখান থেকে দু’দিন পর নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ১৮ মে নিখোঁজ ডায়েরি করেন ওই বন্ধু। উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যেরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারত সরকারের সঙ্গে। তার পর সংসদ সদস্যের খোঁজ শুরু হয়। ৮ দিন ধরে 'নিখোঁজ' থাকার পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেন, খুনই হয়েছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল। যদিও তখনও পর্যন্ত আজিমের দেহ উদ্ধার করা হয়নি। ঘটনার তদন্তে বিধাননগর এবং ব্যারাকপুর কমিশনারেট কলকাতার নিউটাউনের অ্যাকোয়াটিকার পাশে একটি আবাসনে যায়। যে ফ্ল্যাটে আনওয়ারুল ছিলেন বলে মনে করা হয়। সেই ফ্ল্যাটে রক্তের দাগ মেলে আর তার পরেই পদে পদে এই খুনের ঘটনা নতুন মোড় নেওয়া শুরু করে।

কীভাবে খুন করা হয় বাংলাদেশী সাংসদ আনারকে?

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে ডাকা হয়েছিল বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুলকে। সন্দেহ করা হচ্ছে, আনারকে খুন করার পরিকল্পনা অন্তত একমাস আগে করা হয়েছিল। এই কারণে কলকাতার নিউটাউনের অভিজাত আবাসন সঞ্জীবা গার্ডেনের বি ইউ ব্লকের ৫৬ নম্বর ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আনারের বাল্যবন্ধু এবং বর্তমানে মার্কিন নাগরিক আক্তারুজ্জামান। সেখানেই তাঁকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। কুচি কুচি করে দেহ কেটে তা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। শুধু তাই নয়, প্রমাণ লোপাটের জন্য শরীর থেকে তুলে ফেলা হয়েছিল চামড়াও। হাড় আলাদা করে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয় দেহ, সন্দেহ গোয়েন্দাদের। যদিও, এখনও দেহের কোনও অংশ উদ্ধার হয়নি। এক ক্যাব চালকের উপর সন্দেহ ছিল পুলিশের। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বেশ কিছু তথ্য পায় পুলিশ। সিআইডি (CID) সূত্রের খবর, মৃতদেহ টুকরো টুকরো করার পরে পোলেরহাট থানার অন্তর্গত ভাঙড়ে ফেলা হয়েছিল কিনা সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতেই সেই এলাকায় যায় সিআইডির টিম। কিন্তু, কোনও দেহাংশ উদ্ধার হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। 

খুনে ‘হানিট্র্যাপে’র যোগ!

আনারকে খুন করতে ‘হানি ট্র্যাপ’ ব্যবহার করা হয় বলে জানা গিয়েছে। এই খুনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশে সৈয়দ আমানুল্লাহ, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশের আরটিভি নিউজ-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে শিলাস্তি রহমানকে ‘হানি ট্র্যাপ’ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। জানা গিয়েছে, ঝিনাইদহ (jhenaidah) এর কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামে আক্তারুজ্জামানের একটি রিসোর্ট আছে। প্রতিবছর তিনি দেশে ৬ মাস থাকেন। সেখানে তাঁর কাছে নিয়মিত আসতেন শিলাস্তি। আরটিভি নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, যেখানে আনারকে হত্যা করা হয়, সেখানেই ছিলেন শিলাস্তি রহমান। ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের কথা উল্লেখ করে তাতে বলা হয়েছে, শিলাস্তি রহমান হলেন আক্তারুজ্জামান শাহীনের বান্ধবী। শাহীন আনারকে কলকাতা নিতে এই মহিলাকেই ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। সব পরিকল্পনা করে শাহীন ১০ মে ঢাকায় ফিরে এলেও শিলাস্তি থেকে যান কলকাতায়। তিনি ১৫ তারিখে বিমানে ঢাকা ফেরেন। তদন্ত অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ১৩ তারিখেই খুন করা হয় আনারকে। সেদিনই শিলাস্তি আমানুল্লাহ এবং আনারের সঙ্গে নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটে ঢোকেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক জানান, ওই ফ্ল্যাটে শিলাস্তি ঢুকলেও তিনি সেই খুনের সময়ে সামনে ছিলেন না। সাংসদকে খুন করার পর আমানুল্লাহ এবং শিলাস্তি আনারের টুকরো করা একটি ট্রলির মধ্যে দেহ রাখেন বলে খবর। সেটা নিয়েই তারা বের হয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

এই গোটা খুনের ঘটনার পেছনে 'মাস্টারমাইন্ড' যিনি তিনি আনওয়ারুল আজিমের বাল্যকালের বন্ধু আখতারুজ্জামান শাহীন নামক এক ব্যক্তি। বাংলাদেশি হলেও সে মার্কিন নাগরিক। জানা গিয়েছে, তার সঙ্গে আনার পরিবারের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। সন্দেহ করা হচ্ছে, পাঁচ কোটি টাকা সুপারি দিয়ে পরিকল্পনা মোতাবেক এই গোটা ছক করা হয়েছিল। যদিও আক্তারুজ্জামান শাহীন বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম 'কালের কণ্ঠ'-কে বলেন, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ঘটনার সময় বাংলাদেশে তিনি ছিলেন না বলেও দাবি করেন। তার কথা প্রমাণ করার জন্য পাসপোর্ট দেখার আবেদনও করনে। তবে ঠিক কী কারণে বাংলাদেশী সাংসদকে খুন করা হয় তা এখনও জানা যায়নি।

তবে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশি সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের ‘খুনের’ ঘটনায়  রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি জিহাদ হাওলাদার নামের এক কসাইকে গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে, তাঁর বয়স ২৪ বছর। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, পেশায় কসাই জিহাদ আদতে বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা। অবৈধ ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলে‌ন তিনি। আজিমকে ‘খুনে’র প্রায় দু’মাস আগে অভিযুক্তেরা জিহাদকে মুম্বই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসে‌ন। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় আনওয়ারুলকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন জিহাদ। ধৃতকে জেরা করার পর তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত আখতারুজ্জামানের নির্দেশেই জিহাদ সব কাজ করেছিলেন। জিহাদ ছাড়াও আরও চার জন বাংলাদেশি নাগরিক এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। আনওয়ারুলকে তাঁরা প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। মৃতের পরিচয় যাতে বোঝা না যায় তাই তাঁরা শরীরের হাড় এবং মাংস আলাদা করে ফেলেন। এর পর হাড় ও মাংস টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে সব কিছু পলিথিন ব্যাগে ভরে ফ্ল্যাটের বাইরে গিয়ে ফেলে দেন। উল্লেখ্য, সাংসদ খুনের তদন্তে বাংলাদেশের পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের সিআইডিও জোরকদমে আসরে নেমেছে। এপার বাংলা, ওপার বাংলা দুই প্রান্তের তদন্তকারী অফিসাররা রহস্যভেদের জন্য জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছেন। 


R G Kar | 'তিলোত্তমা' ধর্ষণ ও খুনের দিন ভোরে সেমিনার রুম চত্বরের বাথরুমেই রক্তের দাগ ধুয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তার
R G Kar | 'চাপ দেওয়া হয়েছিল', পুলিশের টাকার দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে মুখ খুললেন আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার বাবা
R G Kar | 'তিলোত্তমা' ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এক প্রত্যক্ষদর্শীর সন্ধান পেল সিবিআই? ঘুরে যেতে পারে আরজি কর কাণ্ডের মোড়
Teesta Treaty | তিস্তা জলচুক্তি নিয়ে ভারতকে হুঁশিয়ারি বাংলাদেশের, কেন এই চুক্তি নিয়ে বিরোধিতা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ?
Aparajita Bill | ধর্ষণ বিরোধী 'অপরাজিতা বিলে' সম্পূর্ণ সমর্থন বিজেপির, ‘ঐতিহাসিক দিন' বললেন মুখ্যমন্ত্রী
R G Kar | সিবিআইয়ের হাতে একা সন্দীপ ঘোষ নয়, গ্রেফতার হয়েছে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ আরও ৩ জন
স্বনামধন্য লেখিকা লীলা মজুমদারের জীবনী | Biography of Leela Majumdar