Manipur Violence | মণিপুরে হিংসার ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি শাহের! মণিপুরে যেতে চান বলে কেন্দ্রকে চিঠি মমতার!
মণিপুরে হিংসার ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে এককালীন ১০ লক্ষ আর্থিক সাহায্য ও একজনকে চাকরির প্রতিশ্রুতি অমিত শাহের। মণিপুরে যাবেন বলে কেন্দ্রকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখনও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মনিপুর (Manipur)। পরিস্থিতি সমান দিতে মোতায়েন করা হয়েছে সেনা বাহিনী। কিন্তু তা-ও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা যাচ্ছে না। উপরন্তু এক আশংকার কথা তুলে ধরেন সেনা সর্বাধিনায়ক। এহেন অবস্থার মধ্যেই হিংসাবিধ্বস্ত মণিপুরে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)।
আজ অর্থাৎ ৩০সে মে মঙ্গলবার মণিপুরে জাতিগত হিংসার ঘটনার প্রেক্ষিতে কেন্দ্র সরকার (Central Government) এবং রাজ্য সরকার (Manipur Government) যৌথ ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, মনিপুরে হিংসার ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি পরিবারের ১ জনের জন্য চাকরির প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের (N Biren Singh) বৈঠকের পরেই আর্থিক সহায়তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাতেই ৪ দিনের সফরে মণিপুরে পৌঁছন শাহ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয়কুমার ভল্লা (Ajay Kumar Bhalla) এবং আইবির ডিরেক্টর তপনকুমার ডেকা (Tapan Kumar Deka)। সূত্রের খবর, সেই রাতেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আর্থিক বৈঠকে বসে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক চূড়ান্ত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
দীর্ঘদিন ধরে মণিপুরের উত্তাপের ফলে আকাশ ছোঁয়া দরে পৌঁছেছে জিনিস পত্রের দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতেও রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই সমস্যা দূর করতেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। এদিনের বৈঠকে অমিত শাহ জানান, অভাবজনিত মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতি ঠেকাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পেট্রল, রান্নার গ্যাস, চাল এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের জোগান বৃদ্ধি করা হবে।
প্রসঙ্গত, মণিপুরের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন, এবার সেই হিংসাবিধ্বংস মণিপুরে নিজে যেতে চান বলে কেন্দ্রকে চিঠি দিলেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে মণিপুরকে রক্ষা করার বার্তা আগেই দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইট করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। একতা, শান্তি ও সম্প্রীতি রাখার আবেদন জানানোর পাশাপাশি মণিপুরে আটকে থাকা ব্যক্তিদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে খুলেছিলেন কন্ট্রোল রুম, চালু করেছিলেন বিশেষ হেল্পলাইন নম্বরও। এবার সেখানে নিজেই যেতে চান বলে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে, মণিপুরের ঘটনা নিয়ে আশঙ্কার কথা বললেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (CDS) বা সেনা সর্বাধিনায়ক জেনারেল অনিল চৌহান (Army Commander General Anil Chauhan)। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ইউরোপে যুদ্ধ, উত্তর সীমান্তে চিনের লালফৌজ মোতায়েন এবং নিকটবর্তী এলাকায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য একটি ভিন্ন ধরণের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
২০২০ সালের আগে, বিদ্রোহ দমন অভিযানের জন্য মণিপুরে সেনাবাহিনী ছিল, অসম রাইফেলস ছিল। যেহেতু বিদ্রোহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে ও উত্তর সীমান্তের চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি, তাই আমরা সেনাবাহিনীকে প্রত্যাহার করতে পেরেছি।
সেনা সর্বাধিনায়ক আরও বলেন, মনিপুরের চ্যালেঞ্জ এখনও শেষ হয়নি। পরিস্থিতি পুরো ঠিক করতে হলে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর সাহায্য নিতে হবে। পাশাপাশি জেনারেল চৌহান ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুব একটা ভাল নয়। ইউরোপে যুদ্ধ, উত্তর সীমান্তে চিনা সেনার অব্যাহত মোতায়েন এবং নিকটবর্তী এলাকায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা, সবই ভারতীয় সামরিক বাহিনীর জন্য একটি ভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করছে বলে আশঙ্কা করেন সেনা সর্বাধিনায়ক।