Hawaii Wildfire | গাড়ি চেপে পালানোর চেষ্টাও ব্যর্থ! হাওয়াইয়ে দাবানলে পুড়ে মৃত ৫৩! ছাই দ্বীপের অধিকাংশ!
মঙ্গলবার থেকে দাবানলে পুড়েছে হাওয়াইয়ের মাউয়ি দ্বীপ। প্রাণ বাঁচাতে সমূদ্রে ঝাঁপ দেন অনেকে। তবুও হু হু করে ছড়িয়ে পড়তে থাকা আগুনের হাত থেকে বাঁচতে পারেন নি অনেকে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা উদ্ধারকারীদের।
ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে হাওয়াই (Hawaii)। প্রাণরক্ষার খাতিরে রীতিমতো সমুদ্রে ঝাঁপ দিচ্ছে মানুষজন। গত কয়েকদিনে হাওয়াইয়ের মাউই (Maui) দ্বীপে এই ভয়াবহ দাবানলের (Wildfires in Hawaii ) দৃশ্য আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে আনুমানিক ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও উদ্ধাকারীদের মোতে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
গত মঙ্গলবার থেকে হাওয়াইয়ের মাউয়ি দ্বীপের কাছেই হ্যারিকেন ঝড় (Hurricane) আছড়ে পড়ে। এরপরেই হাওয়ার ধাক্কায় লাহাইনা (Lahaina) এলাকায় ঝড়ের দাপট শুরু হয়। সেখান থেকেই অগ্নিকাণ্ডের সূচনা বলে জানা গিয়েছে। এই আগুন চোখের পলকে ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। যার জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা মাওয়ি দ্বীপ। অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে সমুদ্রে ঝাঁপ দেন।আবার অনেকেই আটকে পড়েন জ্বলন্ত দ্বীপেই। অনেকে আবার কোনওমতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে প্রাণ হাতে করে পালান। আপাতত মাউয়ি দ্বীপের এই দাবানলে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। তবে উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা দাবানলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দাবানলের আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে, অনেক ক্ষেত্রে বাসিন্দারা পালানোর সময় পর্যন্ত পাননি। এমন কিছু পোড়া গাড়ি রয়েছে, যার ভিতর রয়েছে পোড়া দেহ। দেখে বোঝা যাচ্ছে গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। কিন্তু যানজটে আটকে আর গাড়ি থেকে বের হতে পরেননি। গাড়িতে বসেই পুড়ে চাই হয়েছেন বহু মানুষ। অনেকে আগুন থেকে বেঁচে গেলেও, পড়েছেন বিষাক্ত ধোঁয়ার কবলে। এতটাই বিষাক্ত ছিল সেই ধোঁয়া যে অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়, অনেকে বমিও করে ফেলেন। কয়েক মুহূর্তের নোটিশে পালিয়ে যেতে হয়েছে। ফলে অনেকেই জানেন না, তাঁদের প্রিয়জনরা সুরক্ষিত রয়েছে কিনা। এই ধ্বংসযজ্ঞের জেরে শহরের সমস্ত ল্যান্ডমার্ক এলাকাগুলি পুড়ে গিয়েছে। ফলে মাউইকে আর চিনতেই পারছেন না বাসিন্দার।
হাওয়াইয়ের দাবানলকে ইতিমধ্যেই বিপর্যয় হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (US President Joe Biden)। রাষ্ট্রের তহবিল ব্যবহার করে ত্রাণের ব্যবস্থা করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, হাওয়াইয়ের গভর্নর জশ গ্রিন (Hawaii Governor Josh Green) জানিয়েছেন, কিছু কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সম্পূর্ণরূপে পুড়ে গিয়েছে দ্বীপ, ঐতিহাসিক লাহাইনা সেতু। হাজারেরও বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও, এখনও পুরোপুরি নিভে যায়নি। স্থানীয়দের মতে, এখনও মাউয়ি দ্বীপের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে আরও এক সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৬১ সালে হাওয়াইয়ের বিগ আইল্যান্ডে (Big Island of Hawaii), সুনামির শিকার হয়েছিলেন ৬১ জন। তারপর থেকে এই দাবানলের ঘটনাকেই হাওয়াই প্রদেশের সবথেকে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি বছরের গোটা গ্রীস্মকালই অত্যন্ত শুষ্ক ছিল। তারই মধ্যে চলতি সপ্তাহের শুরুতে অল্প সময়ের হারিকেনের ঝোড়ো বাতাসের ধাক্কায় আগুন জ্বলে ওঠে বনাঞ্চলে। সেই আগুন শুকনো গাছপালার মধ্য দিয়ে প্রবল বেগে ছড়িয়ে পরে। যে দ্বীপ কয়েকদিন আগেও বিভিন্ন রঙে, প্রাণে, উচ্ছাসে সুসজ্জিত ছিল, এখন সবই পুড়ে ছাই। ধ্বংসস্তূপ আর পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া ভবন ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
- Related topics -
- আন্তর্জাতিক
- দাবানল
- হাওয়াই
- বাইডেন
- জো বাইডেন
- বাইডেন
- বাইডেন প্রশাসন
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
- মার্কিন প্রেসিডেন্ট